ধলেশ্বরীর অন্য ধারায় ভ্রমণ কাহিনীতে লোকমান হোসেন পলা

মুসলিম জাহানের সর্বোচ্চ আবেগ ও ভালবাসার পবিত্র জায়গা মসজিদে নববী (সাঃ)

পবিত্র মসজিদুল হারামের পর ইসলামে সবচেয়ে পবিত্র ও বরকতময় স্থান হচ্ছে মসজিদে নববী (সাঃ)। মহানবী (সাঃ) তার নবুওয়াতী জীবনের শেষ দশ বছর এই মসজিদের নিবিড় সান্নিধ্যে কাটিয়েছেন এবং মৃত্যুর পর এখানেই শায়িত আছেন। অর্থাৎ উনার রোওয়াজা মোবারক এই মসজিদেই অবস্থিত। ইতিহাসের সর্বপ্রথম ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান মহানবী (সাঃ) এর প্রধান কার্যালয়ও ছিল এই মসজিদে নববীতে।
মসজিদে নববী (সাঃ)।
মদিনা আল মুনাওয়ারা, সৌদি আরব।
নির্মাণকাল – ১ম হিজরী, ৬২২ খ্রীষ্টাব্দ।
পরিচালনায় – সৌদি আরব সরকার।
প্রতিষ্ঠাতা – মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), খোলাফায়ে রাশেদীন (রাঃ) ও তৎকালে মদিনায় বসবাসরত সকল সাহাবায়ে কেরামগণ।
ধারণ ক্ষমতা – সাধারণভাবে ৬ লাখ মুসুল্লী এখানে একসাথে নামাজ পড়তে পারে। তবে হজ্ব মওসুমে ১০ লাখ লোকের নামাজের সংস্থান হয়।

মিনার – ১০টি। প্রতিটি মিনার ১০৫ মিটার বা ৩৪৪ ফুট উঁচু।
মসজিদে নববী (সাঃ) স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য যার হয়েছে একমাত্র তিনিই বুঝতে পারবেন এর চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য কলার বিষয়টি। প্রথম নির্মাণকাল থেকে শুরু করে সময়ের ধারাবাহিকতায় একাধিকবার সংস্কার ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রায় সকল প্রকার ইসলামী স্থাপত্য শৈলীর সমন্বয় ঘটানো হয়েছে এই মসজিদে। অর্থাৎ ইসলামিয়া, মামলুক রিভাইডাল, বাইজানটাইন ও আরবীয় স্থাপত্যকলার সমন্বয় এমনভাবে ঘটানো হয়েছে যা মসজিদের ভিতরে প্রবেশকারী প্রত্যেকের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। মদিনায় মসজিদে নববী (সাঃ) এর ভেতরে প্রবেশ করে ইবাদত বন্দেগীর কথা ভুলে গিয়ে হাজীগণ যেন এর কারুকার্যময় সৌন্দর্য দেখায় ব্যস্ত হয়ে না পড়েন। কথাটি তখন অত্যন্ত মামুলী মনে হলেও মসজিদে নববী (সাঃ) ভেতরে প্রবেশ করামাত্রই আমি এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলাম। সত্যি চোখ ধাঁধিয়ে যায় মসজিদের ভিতরকার স্থাপত্যশৈলী আর আলোক সজ্জার দিকে তাকালে। ইচ্ছে করলেই কি এগুলোকে উপেক্ষা করে থাকা যায়? নামাজ কিংবা কুরআন তেলাওয়াতের পর তসবীহ পড়ার ফাঁকে ফাঁকে আমার দৃষ্টি বার বার ঘুরপাক খেয়েছে এই নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলী দেখে আপনার মনে বলতে থাকবে প্রাণে মদিনা মদিনা বিনে প্রাণে বাঁচি না। আজ সেই প্রাণের মদিনার প্রতিস্ঠানতা সারা জাহানের শান্তির দূর্ত নবী করীম সাঃ এর জন্মদিন।