মার্গে অনন্য সম্মান খুশী সরকার (সর্বোত্তম)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৭১
বিষয় – অচেনা রূপ

অচেনা জগৎ

অমিতের কোলে মাথা রেখে শিখা চিবুক ধরে বলে, কি গো আজকে আসতে ভীষণ দেরী করলে যে, জানো তো আমার আর এভাবে লুকিয়ে আসতে ভালো লাগে না। আর কত দিন কাটাবো এভাবে বলোতো? অমিতের মুখের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করে উত্তর শুনতে, অমিত‌ও শিখার মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে, কেন আমার তো বেশ লাগে। লুকিয়ে দেখা করার মধ্যে একটা দারুণ আনন্দ আছে, তোমার আনন্দ হয় না?
কপালে বিরক্তির ভাঁজ ফেলে শিখা জানায়, “না না, এভাবে আমি আর আসতে পারবো না।” তুমি তো পুরুষ মানুষ, তোমার কাউকে জবাবদিহি করতে হয় না কিন্তু আমি মেয়ে বুঝতে পারছো, বের হতে নিলেই মায়ের কাছে হাজার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, কোথায় যাচ্ছিস, কেন যাচ্ছিস, কতক্ষণ লাগবে, ওরেবাবা,মিথ্যা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, আর নয়। এবার একটা ব্যবস্থা করো, যত তাড়াতাড়ি পারো।
হ্যাঁ রে বাবা, চেষ্টা করছি তো। তুমি তো জানোই সামনের মাসে আমি নতুন কোম্পানিতে জয়েন করছি। তারপর দু-এক মাসের মধ্যেই বাড়িতে কথাটা বলবো। তুমিও তুলবে তোমার বাড়িতে। অন্তত একটু হিন্টস দিয়ে রাখবে, যাতে তোমার জন্য তারা আর কোথাও খোঁজখবর না করেন।
অমিতের হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে শিখা সোহাগী স্বরে বলে, সে তো বলবোই কিন্তু তোমার কাছে আগে সবুজ সিগনাল পাবো তবে তো।
তোমার কি মনে হয় তোমাকে ভালবেসে তোমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবো? আবেগরাঙা ঠোঁটে অস্ফুটে বলে শিখা,তাতো জানি তবুও—–

সামনের মাসে কোম্পানিতে জয়েন করে ফিরে আসে অমিত। শিখার সম্পর্কে মোটামুটি জানতোই সবাই, এবার পরিষ্কার করে জানিয়ে দেয় সে শিখাকেই বিয়ে করতে চায়। শিখার পরিবারেও আভাসে জানিয়ে দেয় শিখা। অমিতের মত নম্র-ভদ্র সুশিক্ষিত একজন চাকুরীজীবির সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে পারবে জেনে শিখার বাবা অমিয়বাবু ভীষণ খুশি। মার্চ মাসের 5 তারিখে ঘটা করে বিয়ে হয়ে যায় অমিত এবং শিখার। কিছুদিন শ্বশুরবাড়ি থেকে শিখাকে নিয়ে চলে যায় অমিত ব্যাঙ্গালোরে। বছর দুয়েক পর তাদের একটি পুত্রসন্তান আসে। তাদের খুব সুখে স্বাচ্ছন্দে দিন যাচ্ছিল। হঠাৎ স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার আকাশে কখন কালো মেঘ জমেছে কেউ বুঝতে পারেনি।অমিত প্রতিদিন সময়মতো ফিরে আসে বাসায়।শিখাও সন্তানকে নিয়ে বেশ হেসেখেলে কাটাচ্ছিল জীবন। রাতে একদিন দেখে শিখা অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু অমিত অফিস থেকে ফেরে না। ভীষণ চিন্তিত হয়ে শিখা তাকিয়ে থাকে রাস্তার দিকে। কত মানুষ যাতায়াত করছে কিন্তু অমিত আর ফিরে না। ফোন করে কিন্তু ফোনও ধরে না অমিত। ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে শিখা। রাত প্রায় 11 টা নাগাদ অমিত টলতে টলতে বাসায় আসে। অমিতের ঝড়ো কাকের চেহারা দেখে শিখা কেমন যেন হতবাক হয়ে যায়।শিখা মনে মনে ভাবে, এমন কি হলো যে অমিতকে এত রাতে ফিরতে হলো। অফিসে কি কোনো গোলমাল? মনে মনে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয় শিখা কিন্তু অসুস্থ অমিতকে জিজ্ঞাসা করতে আর পারে না। না খেয়ে অফিসের পোশাকেই ঘুমিয়ে পরে অমিত। শিখাও কোনো কথা না বলে সন্তানকে নিয়ে শুয়ে পড়ে পাশে। প্রায় ভোর হয় হয়, এমন সময় জেগে ওঠে অমিত। “শুনছো, আমার বড্ড খিদে পেয়েছে, কিছু খেতে দেবে” শিখাকে হাত দিয়ে নাড়া দিয়ে জিজ্ঞেস করে অমিত। শিখা সব টের পায়। অমিতের এই অবস্থা দেখে তার পক্ষে ঘুমানো সম্ভব ছিল না তাই নির্ঘুম চোখে প্রায়ই জেগেই ছিল। তাই অমিতের এক নাড়াতেই শিখা উঠে বলে, “ঠিক আছে, তুমি বসো আমি কিছু আনছি বলে রান্নাঘরে গিয়ে পাউরুটি টোস্ট করে এনে দেয় অমিতকে।” অমিত চুপচাপ খেয়ে নিয়ে আবার শুয়ে পড়ে, তখনও শিখা কিছু জিজ্ঞেস করেনি শুধু অপেক্ষায় থাকে সকাল হলেই জিজ্ঞেস করবে তাকে, কেন তার এই অবস্থা?
“কিগো কালকে তোমার এত দেরি হল যে” চায়ের প্লেট ধরিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে শিখা।
“এমনি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম তাই” “এতক্ষণ ধরে আড্ডা, তুমি জানো না, আমার চিন্তা হতে পারে”?
একটু খুনসুটি করে চিবুকে হাত দিয়ে বলে, আর হবে না,ডার্লিং”
“ঠিক তো”?
“হ্যাঁ রে বাবা হ্যাঁ”তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না”?
“করি তো” তাই তো কিছু বলিনি, কিন্তু বিশ্বাস আর কতক্ষণ ধরে রাখা যায়?
পরের দিন যথারীতি অফিসে যায়, সেদিনও একটু লেট। তার পরদিন, তার পরের দিন‌ও এভাবেই ক্রমশ দিনের পর দিন অমিত অফিস থেকে ফিরতে থাকে দেরি করে। আর দেরীর সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে তার মুখের গন্ধটাও ক্রমশ বাড়তে থাকে দিনের পর দিন। শিখার কপালে ভাঁজ পড়ে। বুঝতে পারে না তার কি করা উচিত?
সপ্তাহ খানেক পর একদিন দেখে শিখা অমিত একটি গাড়ী থেকে নামছে বাড়ির দরজায়। গাড়ির ভিতরে লাইট জ্বালানো হঠাৎ চোখে পড়ে একটি মেয়ে তখনও বসে গাড়ির ভেতর। চেহারাটা দেখে যেন চমকে ওঠে। চেহারাটা যেন বড্ড অচেনা কিন্তু গাড়ির ভেতর এক পাশে অন্ধকার থাকায় পুরোপুরি দেখতে না পেয়ে নানান প্রশ্ন জাগে তার। এত রাত্রে অমিতের সঙ্গে কে এই মেয়ে? অফিসের কলিগ? নাকি অন্য কেউ? কিন্তু অমিতের এমন টালমাটাল অবস্থা, তার কাছ থেকে জানবার জো ছিল না। অমিতকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটা শাঁ করে বেরিয়ে যায় মূল রাস্তার দিকে।
ছোট্ট বাপন তখন ঘুমে অচেতন। শিখা কোনোমতে অমিতকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে জুতো খুলে দেয়।
পরেরদিন অনেক বেলা করে ঘুম থেকে ওঠে অমিত।
সাড়ে নটায় পড়িমড়ি করে স্নান সারে অফিসে যাওয়ার জন্য।
ঘরে ঢুকে অমিতকে অফিসের পোশাকে দেখে একটু জোর গলায় শিখা বলে, “আজকে অফিস যেও না। তোমার শরীর ভালো নেই, অনেক রাতে ফিরেছো। অফিসের বসকে ফোন করে বলে দাও।”
“না না, তা কি করে হয়। আমাকে অফিস যেতে‌ই হবে।”
“কেন, তুমি কি একদিন ছুটি নিতে পারো না?”
“না, পারি না”।
“কেন”
” আমি অফিস কামাই করা পছন্দ করি না।”
“তোমার শরীর ভালো নেই তবুও যেতে হবে?”
“যেতেই হবে”।
“তুমি নিজের শরীরের দিকে একবার চেয়ে দেখেছো, কি অবস্থা হয়েছে তোমার?
“ঠিক আছি”।
“যাবেই যখন তাহলে খেয়ে যাও, রান্না করেছি।”
“না, সময় নেই। ক্যান্টিনে খেয়ে নেবো”।
বলতে বলতেই বেরিয়ে যায় অমিত। শিখা তার যাওয়ার দিকে অপলক চেয়ে থাকে আর মনে মনে ভাবে, এ কি সেই অমিত, যে অফিসে যাওয়ার সময় শিখাকে একটু আদর না করে যায়নি কোনোদিন। তার এই নীরস মুখটা যেন বড় অচেনা। অমিত কেমন যেন রুক্ষ শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। আজকাল ভালোমতো কথা পর্যন্ত বলে না শিখার সঙ্গে। ছেলেকে কোলে নিয়ে আদরও করে না। অফিস যায় আর আসে গভীর রাতে। পরিবারের সঙ্গে যেন তার আর কোনো সম্পর্ক নেই।
অমিতের এই পরিবর্তনে অথৈ জলে পড়ে যায় শিখা। কি করবে, কেমন করে অমিতকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে? চিন্তায় উদ্বেগে যেন মাথা ভার হয়ে যায় শিখার। অমিত সেই একইভাবে রোজ রোজ ছাইপাশ গিলে দেরি করে ফিরে বাসায় এবং চৈতন্য হয়ে ঘুমায়। শিখার কিছু বলা হয়ে ওঠে না, অমিত সকালে উঠেই অতিসত্বর বেরিয়ে পড়ে অনেক আগেই, কিছুই বুঝতে পারে না শিখা। প্রায় সাত দিন এভাবেই চলার পর হঠাৎ একদিন গভীর রাতে বাড়ি ফিরে শিখাকে জানায়, “আমি কাল সকালে কোম্পানির কাজে সাতদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছি, টাকা রেখে যাবো, যা যা লাগে কিনে নিও।”
“তোমাকেই যেতে হবে? অন্য কেউ গেলে হবে না?” “আমাকেই যেতে হবে,বস আমাকেই দায়িত্ব দিয়েছেন।”
“কোথায় যাচ্ছো?”
“সিমলা”!
“কে কে যাচ্ছো”
“আমি আর আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট”
হঠাৎ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে অমিত,আচ্ছা এত প্রশ্ন করছো কেন? আজকাল কি অবিশ্বাস করা তোমার স্বভাবে পরিণত হয়েছে? আমি ইচ্ছে করলে যা-কিছু করতে পারি, তুমি আমার কিচ্ছুটি করতে পারবে না বরং চুপচাপ ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে থাকো, আমার যা কাজ আমাকে করতে দাও।”
“কোন্ কাজে আমি তোমায় বাধা দিয়েছি?” আমি শুধু জানতে চেয়েছি কে কে যাচ্ছো? এটুকু অধিকার কি আমার নেই? স্ত্রী হিসেবে আমি কি কোনো প্রশ্ন করতে পারি না?”
“সব বিষয়ে পারো না” বলে‌ই অমিত একটা ব্রিফকেসে নিজের জামাকাপড় ভরে ‘আসলাম’ বলেই গটগট করে হেঁটে বেরিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। চারিদিক অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। আশেপাশের চারদিকের নিস্তব্ধতা যেন গ্রাস করে শিখাকে। সন্তান কোলে চুপচাপ বসে থাকে ঘরের মেঝেতে। দু’গাল বেয়ে ঝরে পড়তে থাকে জল। অতটুকু সন্তানও মায়ের চোখে জল দেখে হঠাৎ কেঁদে ওঠে। শিখা দুই হাতে সন্তানকে জাপটে ধরে হু হু করে কেঁদে ওঠে আ‌রো বড় অসহায় লাগে তার। কি করবে সে এখন?
বেশী করে। কিছুক্ষণ পর ছেলের শুকনো মুখ দেখে আঁচল দিয়ে চোখ মুছে রান্নাঘরে ছেলের জন্য খাওয়া তৈরি করে। ছেলেকে খাওয়াতে খাওয়াতে দেখে ধীরে ধীরে অন্ধকার যেন সরে যাচ্ছে সূর্য উঁকি দিচ্ছে আবার। এই ভাবেই কেটে যায় প্রায় সাত দিন। এর মধ্যে একটি বার‌ও ফোন করেনি অমিত। শিখা বারবার চেষ্টা করেও পায়নি ফোনে।অমিতের জন্য শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনে গেছে। যখন প্রায় দশদিন পেরিয়ে গিয়েও অমিত ফিরে না এলে শিখা ধৈর্য রাখতে পারেনি আর। অবশেষে অফিসের যোগাযোগে জানতে পারে অমিত দু’একদিনের মধ্যেই ফিরে আসবে তখন খুশি আর ধরে রাখতে পারে না শিখা। অমিতের অবর্তমানে উপলব্ধি করেছে অমিত ছাড়া তার জীবন অচল। অমিত তার প্রাণ, তার ভালোবাসা।তার স্বপ্ন।
যে করেই হোক অমিতকে সে আর কখনো কাছ ছাড়া করবে না, প্রয়োজনে সঙ্গে যাবে সে, তবু একা একা যেতে দেবে না কোথাও কখনো। আশা-আকাঙ্ক্ষায় পথ চেয়ে বসে থাকে শিখা। দিন যায় রাত যায়, আবার ভোর আসে। অপেক্ষার অন্তিম লগ্নে প্রায় সন্ধ্যা গড়িয়ে গেছে শীতের রাত সন্তানকে নিয়ে ঘরে প্রহর গুনছে শিখা।এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। অমনি দরজা খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ শিখার। একি দেখছে সে! অমিতের পাশের মেয়েটা কে?
“কেমন আছো” অমিতের প্রশ্নে চমক ভাঙে শিখার। “এত দিনে একবারও ফোন করলে না?”
“কাজে প্রচণ্ড ব্যস্ত ছিলাম”
“আমার জন্য না হোক অন্তত ছেলেটার জন্যও তো একবার ফোন করতে পারতে?
“আমি জানি ছেলে তোমার কাছে ভালোই থাকবে” “তাতে কি, বাবা হিসেবে তোমার একটুও ইচ্ছা করেনি?”
“জানি তো, ভালো আছে”
“ও কে” মেয়েটির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে শিখা।
“আমার বন্ধু””
“নাম কী?”
“মুক্তি”
“কোথায় থাকে?”
“শিলিগুড়ি”
“আচ্ছা এইভাবে কি শুধু প্রশ্নই করে যাবে? নাকি ঘরে ডাকবে, কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা করবে?”
” ও হ্যাঁ হ্যাঁ,এসো এসো ভাই ঘরে এসো।”
ছাই চাপা আগুনের মত ভিতরে জ্বলতে চলতে থাকে শিখা আর বাইরে মুখে হাসি নিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করে।
খাওয়া-দাওয়ার পর পাশের ঘরে বন্ধুটির জন্য বিছানা করে দেয় শিখা। তুমি ভাই ওই ঘরে শুয়ে পড়ো। কিছু অসুবিধা হলে বলো। এই ঘরে সন্তানকে নিয়ে শুয়ে পড়ে শিখা আর আনন্দে আবেগে শিহরণ জাগে তার দেহে। আজ কতদিন পর অমিতকে পাবে সে কাছে। অমিতের গায়ের গন্ধে উদ্বেল হয়ে ওঠে তার মন। প্রহর যেন কাটে না আর! একটু সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য কি আকুল আর্তনাদ অনুভব করে অন্তরে শিখা। কখন গেছে বাইরে অমিত? ফেরে না কেন? তর যেন হয় না আর! কিছুক্ষণ পর লক্ষ্য করে শিখা, অমিত ঘরে ঢুকে আলো নিভিয়ে চলে যায় পাশের ঘরে।
বাইরে তখন ঘুমে আচ্ছন্ন গোটা জগৎ।
নিস্তব্ধতার বিরাট পাহাড় টপকে শিখা ছুঁতে পারে না আর অমিতকে। তার ভালোবাসা আজ যেন বড্ড অচেনা।একটা অচেনা জগতে যেখানে হারিয়ে যায় শিখা সেখানে সে শুধুই একা।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।