T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || বিশেষ সংখ্যায় কুণাল রায়

আমি একমাত্র সত্য এই বিশ্ব সংসারে। আমি ভিন্ন অন্য কারও অস্তিত্ব নেই।

দেবী পুরাণ এ শুম্ভ বধের সময় ঘটে এক বিরল ঘটনা। শুম্ভ দেবীকে তিরস্কার করে বলেন যে সকল দেবীর শক্তি একত্রিত করে উনি এই সংগ্রামে বিজয়ী। দেবী এই কথা শুনে অতীব ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি শুম্ভকে বললেন যে এই সকল দেবীরা তাঁরই অংশজাত। তাঁরই বিভূতি। শুম্ভ দেখলেন যে ধীরে ধীরে সকল দেবীরা চন্ডীর মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন। এক বিস্ময় সৃষ্টি করল, শুম্ভের কাছে।
এরপর দেবী ও শুম্ভের মাঝে ঘোর যুদ্ধ শুরু হল। দেবী শুম্ভের সকল অস্ত্র সস্ত্র নিমেষে নিষ্ক্রিয় করলেন। শুম্ভ ও প্রতিদানে দেবীকে আঘাত করলেন। কিন্তু আশ্চর্য, দেবীকে তা বিন্দুমাত্র বিচলিত করল না। এই দেখে শুম্ভ ক্রোধের বশে দেবীকে নিয়ে অন্তরীক্ষে যুদ্ধ শুরু করলেন। কিন্তু দেবীর প্রবল প্রতাপে, শুম্ভের তেজ স্মিত হল। দেবী শুম্ভকে শূন্যে ঘুরিয়ে, মাটিতে আঁচড়ে ফেললেন। শুম্ভ জ্ঞান হারালেন। কিন্তু পুনরায় আবার যুদ্ধ শুরু করলেন। অন্যদিকে মহাকালী ও দেবীর বাহন সিংহ অসুরদের ধ্বংস করল। মহাকালী অসুরদের ভক্ষণ করলেন। সিংহ তার নখ ও দাঁত দিয়ে অসুরদের ছিন্ন ভিন্ন করল। ধীরে ধীরে অশুভ শক্তির প্রকোপ হ্রাস পেতে লাগল।
দেবী শুম্ভকে আর দ্বিতীয় সুযোগ দিলেন না। শুম্ভের বক্ষে পা দিয়ে, তাঁকে শূলে বিদ্ধ করলেন। কিন্তু সেই মুহূর্তে অন্য এক অসুর “ওরে থাম থাম” বলে বেড়িয়ে এল। দেবী তাঁকে খড়্গের দ্বারা শিরোচ্ছেদ করলেন। দেবীর বহন সিংহ শুম্ভের শির ছিন্ন করে তাঁকে ভক্ষণ করতে লাগল। শুম্ভ বধের সাথে সাথে আকাশে বাতাসে ফিরে এলো প্রাণ। পৃথিবী তখন পাপ মুক্ত। দেবতারা ত্রাস মুক্ত হলেন। দেবরাজ ফিরে পেলেন তাঁর সাধের স্বর্গরাজ্য ও রাজধানী অমরাবতীকে। দেবীর অশেষ কৃপায় ফিরে আসে শান্তি ও শৃঙ্খলার এক নবীন বাতাবরণ। পরাশক্তির উপস্থিতি ও তাঁর উদ্দেশ্য তাঁর সার্থকতা লাভ করল, নিশ্চিতরূপে!!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।