সাতে পাঁচে কবিতায় কুণাল রায়

১| কাছের মানুষ

শীতের একরাশ ভালোবাসার রেণু মেখে,
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তোমার আগমন,
তুমি কে? কোথায় বা থাকো?
কোথা থেকেই বা আসো আমাদের মাঝে,
তা আজও অজানা!
হয়ত সুদূর আকাশ থেকে,
তোমার বাহন চরে আসো এখানে,
অথবা গুটিগুটি পায়ে,
একঝোলা উপহার নিয়ে,
মাঝরাতে একা রাজপথে,
একটু আনন্দ ছড়িয়ে দিতে,
এই মর্তবাসীর মাঝে!
ছোটবেলায় ছিল এক উত্তেজনা,
ঝুলিয়ে রাখতাম মোজা বা অন্যকিছু,
সানটা এসে দিয়ে যাবে কিছু উপহার,
পেয়েছি কি পাইনি,
সেই হিসেব আজ নাই বা করলাম!
তুমি বাস্তব না কল্পনা?
আজও অধরা!
তবুও একই ভাবে সমাদৃত আজও,
আজও তুমি নবীন,
সেই সাদাগোঁফদাঁড়ি,
ও এক মুখহাসি নিয়ে,
আসো আজও-
আমাদের মুখে হাসি ফোঁটাতে!
বেড়ে চলেছে বয়স,
বেড়ে চলেছে অভিজ্ঞতাও,
সেই ভারে আমরা সকলেই ভারাক্রান্ত!
তাই বুঝি নেওয়া হয়না তোমার খোঁজ,
তোমার ভালোমন্দ লাগা,
তোমার আমোদের আড়ালের কথাগুলো,
যা হয়ত শুনতে পায় নিবার্ক দেয়ালেরা!
আসছে বড়দিন,
আসছে যীশুর জন্মদিন,
তাই বুঝি সবাই তোমারই অপেক্ষায়,
বড় আপন যে তুমি,
কাছের মানুষ যে তুমি!!

২| যীশু

এই পৃথিবীর মাঝে নেমে এসেছিলে তুমি,
কোটি কোটি শতাব্দী পূর্বে,
পরমেশ্বরের ইচ্ছায়,
তোমার নন্দনকানন ত্যাগ করে,
আজকের এই শুভ লগ্নে,
চতুর্দিক আলো করে,
মাদার মেরীর কোলে,
পিতা জোসেফের ছত্র ছায়ায়ে,
প্রতিপালিত হতে থাকলে তুমি,
এক মহৎ উদ্দেশ্যের প্রয়োজনে,
এক নবজাগরণ সৃষ্টির অভিপ্রায়ে!
স্নিগ্ধ চেতনা নিয়ে,
প্রত্যেক হৃদয়কে স্পর্শ করলে তুমি,
এক নবীন জীবন প্রদান করলে,
এই বিশ্ববাসীকে।
শিখিয়েছিলে জীবনের দর্শন,
বুঝিয়েছিলে তাঁদের অস্তিত্বের কারণ,
মহামানবের আবির্ভাব স্বার্থক করেছিলে,
তুমি সেদিন।
তবুও নিষ্ঠুর নিয়তির কোপানলে পড়তে হয়েছিল তোমাকে,
পরম মাহেন্দ্রক্ষণ রূপান্তরিত হয়েছিল এক নির্মম অধ্যায়ে।
এক সুগভীর ষড়যন্ত্র গ্রাস করল তোমার আত্মপ্রকাশকে!
সূর্যাস্তের সাথে সমাপ্ত হল,
তোমার ঐশ্বরিক প্রকাশ!
তবুও তুমি যীশু,
ঈশ্বর মোদের কাছে,
আত্মত্যাগের মহিমা বিস্তার করেছিলে সেদিন,
যা আজও কণায় কণায় প্রবাহিত,
কালকূট পান করলে তুমি
অমৃতের এক অনাবিল ধারায়,
ধন্য হলাম আমরা!!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।