শিবরাত্রি স্পেশাল এ কুণাল রায়

সতী বিরহে দেবাদিদেব মহেশ্বর তখন এক ঘোর তপস্যায় লীন। কিন্তু সৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষা করতে মহাদেবের ভূমিকা অনস্বীকার্য। অন্যদিকে সকল দেবদেবীরাও এক গভীর চিন্তায় মগ্ন: কি প্রকারে শূলপানিকে এই বর্তমান পরিস্থিতির থেকে উদ্ধার করা যায়! অশেষ আলোচনার পর, তাঁরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে দক্ষতনয়া রতিপতি কামদেবই একমাত্র উপযুক্ত পাত্র যিনি মহাদেবকে হিমালয়রাজ কন্যা পার্বতীর প্রতি আকৃষ্ট করতে পারেন। দেবের হৃদয়ে অনুরাগের বীজ একমাত্র বপন করতে পারেন কামদেব!
কিন্তু এই দুঃসাহসিক প্রয়াসের ফলাফল কি ভয়ংকর হতে পারে, তা বোধকরি কামদেবও জানতেন না! মৃত্যু ধীরে ধীরে তাঁকে গ্রাস করবার উদ্দেশ্যে তার যাত্রা শুরু করেছিল, নিশ্চিতরূপে! কামদেব পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে পৌঁছালেন কৈলাশ পর্বতমালায়। দেখলেন মহাদেব এক সুগভীর তপস্যায় আচ্ছন্ন। প্রথমে ঋতুরাজ বসন্তকে আমন্ত্রণ জানালেন স্বয়ং কামদেব। পশ্চাতে কামদেব কুসুমে সজ্জিত এক তীর নিক্ষেপণ করলেন মহেশ্বরের প্রতি!কামেশ্বর অতীব ক্রুদ্ধ হলেন। ধ্যান ভঙ্গ হল। তৃনয়ন উন্মোচন করলেন কৈলাশপতি। এক তীব্র অগ্নিস্রোত সঞ্চারিত হল। দগ্ধ হলেন কামদেব। এক মুঠো ভস্ম ছাড়া আর কিছুই পরে রইল না! এক অকাল বৈধব্য গ্রাস করল রতিকে। পুনরায় দেবাদিদেব ধ্যানও মগ্ন হলেন।
এক ঘটনার পশ্চাতে দেবী পার্বতী রতির দ্বারা অভিশপ্ত হলেন। সেই অভিশাপের ফলে পার্বতী কোনোদিন সন্তানসুখ অনুভব করেননি। আপন পুত্র বিরহে তাঁকে দিনযাপন করতে হয়েছিল। কর্মের ফল দেবতারাও খণ্ডিত করতে পারে না, আমরাতো তুচ্ছ এই সৃষ্টির প্রাচুর্যের সম্মুখে! তাই পরিস্হিতি বিবেচনা করাটা অতীব আবশ্যক। নচেৎ করালবদনা নিয়তির হাতে শাস্তি অবশ্যম্ভাবী!!

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!