সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে কুণাল রায় (পর্ব – ৩৮)

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা :

সপ্তদশ অধ্যায়ঃ : শ্রদ্ধাএয় বিভাগ যোগ প্রথম পর্ব :

 

অর্জুন ভগবানকে জিজ্ঞাসা করলেন যারা শাস্ত্র বিধিমত না মেনে পূজা করেন, তাঁরা সাত্ত্বিক, রাজসিক না তামসিক?
ভগবান বললেন মানুষের নিষ্ঠা তিন প্রকারের। এই নিষ্ঠা মানুষের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রকাশিত হয়। তাই যাঁর যেমন ভাব, তাঁর তেমনই শ্রদ্ধা বা নিষ্ঠা হয়ে থাকে। সাত্ত্বিক মানুষেরা দেবতার পূজা করেন, রাজসিক মানুষেরা যক্ষ ও রাক্ষসের পূজা করেন এবং তামসিক মানুষেরা ভূত পিশাচের পূজা করেন।
ভগবান আরো বললেন যে সকল মানুষেরা অহংকার, দম্ভ, কাম, আসক্তি ও বলে মত্ত হয়ে তপস্যা বা উপাসনা করেন, তাঁরা প্রকৃত অর্থে আপন শরীরে অবস্থিত পঞ্চভূতগুলোকে কষ্ট দিয়ে থাকেন। এর ফলে স্বয়ং পরমেশ্বরও কষ্ট পান। এই প্রকার মানুষ সদা আসুরিক প্রবৃত্তি বহন করেন।
সকলের খাদ্য তিন প্রকার। এই রূপ যজ্ঞ, তপস্যা ও দানও তিন প্রকার। সাত্ত্বিক মানুষের এমন আহার পছন্দ যা আয়ু, উৎসাহ, বল বৃদ্ধি করে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। অতি নিম, টক, নোনতা, গরম, ঝাল, রুক্ষ, ঝাঁঝালো আহার রাজসিক মানুষের অতীব প্রিয়। এবং বাসি, দুর্গন্ধ, অপবিত্র ও উচ্ছিষ্ট আহার তামসিক মানুষের প্রিয়।
পরিশেষে পরমেশ্বর বললেন যে যজ্ঞ ফলের আকাঙ্খা না করে করা হয়, তা সাত্ত্বিক যজ্ঞ। ফলের প্রথর্না করে এবং আপন মহত্ব ও দম্ভ প্রকাশের জন্য যে যজ্ঞ করা হয়, তা রাজসিক যজ্ঞ। এবং যে যজ্ঞ শাস্ত্র না মেনে, দান না করে, মন্ত্র উচ্চারণ না করে, দক্ষিণা না দিয়ে ও শ্রদ্ধা না রেখে করা হয়, তা তামসিক যজ্ঞ রূপে বিবেচিত।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।