• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে কুণাল রায় (পর্ব – ১)

শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

প্রথম অধ্যায় প্রথম ভাগ : অর্জুন বিষাদ যোগ

কুরুক্ষেত্রের পুণ্যভূমি। সকল রথী মহারথীদের একত্রে আগমন। একদিকে পঞ্চম পান্ডব সহ ভগবান শ্রী কৃষ্ণ, অন্যদিকে রয়েছে পিতামহ, গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম সহ হস্তিনাপুরের নরেশ ধৃতরাষ্ট্র এর শতপুত্র। হস্তিনাপুরের নরেশ তাঁর নিজ রাজপ্রাসাদে দৈবদৃষ্টি সম্পন্ন সঞ্জয়ের সাথে বর্তমান। এই মহাসমরে যা যা ঘটছে সঞ্জয় তাঁর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেবেন নরেশকে।এই মহাকাব্যের রচয়িতা ব্যাসদেবের আশীর্বাদে এই বিরল শক্তি প্রাপ্ত করেন সঞ্জয়।
ধৃতরাষ্ট্র: সঞ্জয়, দুর্যোধন , যুধিষ্ঠির এবং সকলে মিলে এই যুদ্ধক্ষেত্রে কি করল?
সঞ্জয়: পাণ্ডবদের সৈনিবাহিনীকে সজ্জিত দেখে, রাজকুমার দুর্যোধন গুরু দ্রোনাচার্য এর কাছে গিয়ে পরামর্শ করলেন।
দুর্যোধন বললেন গুরুদেব রাজা দ্রূপদের পুত্র ধৃষ্টদ্যুম্ন এবং পঞ্চ পাণ্ডবরা কি সুন্দর ভাবে নিজের সেনাদের সাজিয়েছে, একবার দেখুন।
এই যুদ্ধ রয়েছেন সকল বীরেরা যেমন ভীম, অর্জুন, সাত্যকী, বিরাট, মহাবীর দ্রূপদ, বীর ধৃষ্ট- কেতু, চেকিটান, কাশীরাজ, বীর অভিমুন্য, দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্র প্রভৃতি। এরা সকলেই বীর এবং যোগ্য।
হে দ্বিজবর! আমাদের পক্ষ থেকে যে যে মহাবীর যোদ্ধারা রয়েছেন, তাঁদের নামও একবার শুনে রাখুন।
আপনি নিজে, পিতামহ ভীষ্ম, কর্ণ, কুলগুরু কৃপাচার্য, বিকর্ণ, গুরুনন্দন,জয়দ্রথ প্রভৃতি।
এই সকল বীরেরা ‘আমার’ জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত। এছাড়াও অনেক বড় বড় বীরেরা আমার পক্ষে রয়েছেন। এরা সকলেই যুদ্ধ বিধ্যায়ে নিপুণ।
দুর্যোধন এক সংশয় প্রকাশ করেন যে পিতামহ ভীষ্ম সহ সকল বীর যোদ্ধারা থাকা সত্ত্বেও, যুদ্ধে জয় লাভ করা সম্ভব নয়। বরং তাঁদের শত্রুদল অনেক অধিক সক্রিয় এবং তাঁদের পক্ষে যুদ্ধে জয়লাভ করা তুলনামূলকভাবে অনেক সরল। তাই ‘আমাদের’ সকলের উচিত প্রৌঢ় পিতামহ ভীষ্মকে রক্ষা এবং সাহায্য করা।
এর ঠিক পরেই সকল বাদ্যযন্ত্র বেজে বেজে উঠল যেমন শঙ্খ, মাদল, ভেরী প্রভৃতি। সব।মিলিয়ে এক ভয়ংকর শব্দ হল।
এর পর যুগ নায়ক ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এবং ইন্দ্রপুত্র অর্জুন দুটি দিব্য শঙ্খ বাজালেন। শ্রী কৃষ্ণ পাঞ্চজন্য এবং অর্জুন দেবদত্ত নামের শঙ্খ বাজালেন। ভীমসেন পৌন্ড্র নামক শঙ্খ বাজালেন, নকুল সুঘোষ এবং সহদেব মণি পুষ্পক নামের শঙ্খ বাজালেন। এছাড়া এই সমর ভূমির বাকি যোদ্ধারাও নিজের নিজের শঙ্খ বাজালেন, যুদ্ধ সূচনার অভিপ্রায়ে।
সেই ভয়ঙ্কর শব্দে আকাশ, বাতাস ও মেদিনী বিদীর্ণ হয়ে গেল। সকলের হৃদয়ে এক ভীতি সঞ্চারিত হয়।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।