মোবাইল ফোনটা বেজে উঠল:-
অন্য পারে চেনা গলা- আমি উজ্জ্বল বলছি নির্ঝর, মুম্বাইতেএ একটা গানের
রেকডিংএ তোকে চাই। আমি স্টুডিও খুলেছি।
এতদিন কোথায় ছিলি উজ্জ্বল? সেই যে চলে গেলি আর কোন খবর দিলিনা- হ্যাঁ,
হ্যাঁ অবশ্যই গাইব, সেই ছোটো বেলায় দিন ভোলা যায়! মার উপর অভিমান
করে…………………
ঠিকানা ধরে নির্ঝর উপস্থিত হল মুম্বাইয়ের এক বিলাশ বহুল বাড়িতে।ঢুকে
দেখল অন্ধকার সেই ঘর, এক কোনার থেকে আওয়াজ অট্টহাস্য।
“তুই পড়েছিস আমার খপ্পরে – আমার মাকে খুব পটিয়ে আমাকে বাড়ি ছাড়া করেছিস”
– বলে, হাতে পিস্তল নিয়ে এগোতে থাকে,
“না না – আমি মাসিমাকে মায়ের মত ভালোবাসি, মা মারা যাবার পর থেকে,
উজ্জ্বল আমাকে ভুল বুঝিস না – মাসিমার আমার উপর স্নেহ, তোকে রাগে অন্ধ
করে দিয়েছিলো। বিশ্বাস কর, মাসিমা রোজ তোর কথা বলে আর কাদেঁ – উজ্জ্বল
আমি আজও তোর বন্ধু,”
মোবাইল বাজে – লাউড স্পিকারে শোনা যায় – কান্না ভেজা গলা – ” উজ্জ্বল
গেল, তুই ও কোথায় গেলি নির্ঝর, আমার যে কেউ নেই”
মাসিমা পেয়েছি উজ্জ্বলকে, ওকে আমি ফিরিয়ে আনবই।
হঠাৎ স্তব্ধতা:- হাউ হাউ গলায় উজ্জ্বল, ” তুই আমার মাকে আজও দেখিস ভাই!
হিংসায় আমি দিকবিদিক শূন্য হয়ে, অভিমানি হয়ে উঠেছিলাম বন্ধু, আমি তোর
আসল স্বরূপটা সেদিন বুঝতে পারিনি।”
পিস্তল ফেলে দিয়ে নির্ঝরকে জড়িয়ে ধরে,
মাসিমার ফোন- ” কার গলা শুনছি ওটা”?
নির্ঝর- ওটা উজ্জ্বল মাসিমা।
হঠাৎই সকালের এক টুকরো রোদ চোখে এসে পড়ে। এক স্তব্ধতা, শূণ্যতা যেন
গ্রাস করেছে মাসিমাকে।
সকাল 6টায় – নির্ঝর ঘরে ঢুকল-
” মাসিমা আপনাকে এত হতচকিত বিমর্ষ দেখাচ্ছে কেন?”
” না বাবা, ও কিছু নয়, শুধু একটা স্বপ্ন।”
” স্বপ্ন মানুষকে আনন্দ দেয়, বিমর্ষ করে, আবার স্বপ্নে মানুষ আশা আকাঙ্খা
চরিতার্থ করে, আবার স্বপ্নের মধে্যই মানুষ বেঁচে থাকে মাসিমাা”।