সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে যুথিকা সাহা (গল্প – পর্ব ৮)

দাসী

এর বেশ কিছু দিন কেটে গেল ।টুকিও ঘরের কাজকর্ম করে আর মাঝে মাঝেই অনিমার সাথে যোগাযোগ আর তার ভালোবাসার মানুষের কাছে গুছিয়ে লেখা মনের কথা নিয়েই চিঠির আদান প্রদান চলতে থাকে ।সুকান্তর ও প্রায় কোর্স শেষ হবার পালা আর সেও বসে থাকার পাত্র নয়! সে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে একটা কি নিয়ে কাজ করতে করতে সেটাতেও তার খ্যাতি এমন বাড়লো যে তা আর চাপা রইল না…! ব্যাঙ্গালোরের ঐ অত বড় কলেজ সেখানে তো তার রেজাল্ট ভালো ,তার ওপর ঐ কাজের সুবাদে তার নাম ছড়িয়ে পড়ল ।
তাকে সেন্ট্রাল গর্ভমেন্ট থেকে পুরস্কৃত করা হবে ,এই কাজ যে করছিল ও সেটাও বাড়িতে ও জানায়নি ।
ও মা -বাবাকে ছাড়া কোন কাজ করে না কিন্ত ——এটা ও বাবা মাকে সারপ্রাইজ দেবে এই ভেবেই একটু চেপে করেছিল ।
কারন ও নিজে একটু চিন্তার মধ্যে ছিল যে যদি ঠিক করতে না পারি ! ছেলেতো খুব মেধাবী তাই তার ফলও পেল ।
দিল্লী থেকে ফোন এল বাড়িতে ওর পুরস্কারের কথা জানানো হল ,সবাই তো অবাক !!!
তারপর ছেলের ফোন ……..বললো আমি তোমাদের না জানিয়ে এই কাজটা করেছিলাম ভেবেছিলাম হবে কি হবে না ….তাই মা বলিনি ,এর জন্য আমি ক্ষমা চাইছি—–
মা বললো বাবুন তুই এত পড়ার চাপ নিয়ে এটা কিকরে করলি বাবা? নাওয়া -খাওয়া বন্ধ করে বাবা বলতেই……..আনন্দে তেই যেন চোখে জল চলে এল ,বললো তোকে তো ফোন কাল করতাম হঠাৎ করে তোর দাদার বিঁয়ে ঠিক হয়ে গেছে রে ।
ছেলে বললো উফ্!!
কি দারুণ খবর —-মা আমি একটু বাদে তোমাকে ফোন করে সব কথা শুনছি …………….
এদিকে অনিমা খবর পেয়ে সব বন্ধুদের বললো আর সুমি মানে যাকে সবাই ছেলে বলে ও একটু ছেলেদের জামা প্যান্ট পড়ে ,আর স্কুটার চালায় ,কোন অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করে ,দুমদাম মেরেও দেয় ,ভয় ডর কম —তাই ওকে বন্ধুরা বলে ঝাঁসি রানী লক্ষ্মীবাঈ …….কিন্ত ওর মনটা খুব ভালো। ওকে ছাড়া বন্ধুদের চলেই না ,ও সবার সব কাজে এগিয়ে যায় তাদের পাশে দাঁড়ায় এটা ওর বাবা জেঠুর কাছ থেকেই শেখা।
তবে বংশেরও তো একটা গুন আছে সেটা ওর মধ্যেই জেগে ওঠা —-আর ওর বাবাদের তখনকার দিনে বেশ অবস্থাপন্ন ঘর ,বাবা ঠাকুমা সবাই তার পক্ষেই কথা বলে। জানে মেয়ে বিনা কারনে কিছু করে না ,
ওদের একান্নবর্তী পরিবার।
যাই হোক সবার খুব আনন্দ কি করবে ভাবতে পারছে না ।হঠাৎ তিনটে নাগাদ সুমির বাড়ির ফোন বেজে উঠল ,ঘরে কেউ নেই ওর ঠাকুমা বোতলে আমের আচার ভরছিল —ফোন বাজতেই মামনি ….মামনি….করে ডাকছে সাড়া না পেয়ে কি করে গিয়ে ফোন ধরলো। ওপার থেকে কন্ঠ ভেসে এলো হ্যালো …
কে ?
ও ঠাকুমা ?
ঠিক বুঝতে পারছেননা ..
আমাকে চিনতে পারছো না!!,আমি বাবুন বলছি ওর ঠাকুমা বললো..ওওওও রামাকান্তর ছেলে এই তো ঠিক ধরেছো.. …
.ওমা কেমন আছিস বাবা ?
ভালো …
তুমি বল কেমন আছো?
ভালো সোনা।
তোমার হাতের নাড়ু অনেকদিন খাই না ঠাকুমা !! …
তুই কবে আসবি বল? এলে আমি খাওয়াবো, ও আমার মানিক রে—এই তো আচার ভরছিলাম বয়ামে ,এই মেয়ে টা যে কোথায় যায় না……..বলতেই সুমি এল বললো কার সাথে কথা বলছো বড় পিসি?
আরে ধুর বাপু তুই ধর দেখ কে কথা বলছে ?
হ্যালো বলতেই ,এই যে গুন্ডা রানী কোথায় গেছিলেন ?
ডাকাত ধরতে ……!
সুমি তো লাফিয়ে উঠলো বললোও ওও বাবুনদা!!! বাব্বা তুই …আমি আকাশ থেকে পড়লাম —
আরে শোন কাজের কথা বল,বল …আমি মার কাছে সব শুনলাম বুঝলি দাদার বিঁয়ে আর দশ দিন বাকী ।আমি এদিকে ব্যবস্থা করে যাচ্ছি সাত দিন পর মানে শুক্রবার যেতে বিকেল হবে ।
এয়ারপোর্ট থেকে সোজা নিউমার্কেট—–সেখান থেকে কেনাকাটা করবো আমার এক বন্ধুআছে ও কালনাতে নামবে, একসাথে যাবো ।
বাড়ি গিয়ে একটু বসেই তোদের বাড়িতে বসে সব প্রোগ্ৰাম ঠিক হবে ।
আর হ্যাঁ শোন, তুই শুধু অনিমাকে বলবি নাহলে ওর খুব কষ্ট হবে ।ওদের ফোনটার এখনো লাইন দেয়নি চিঠিতে লিখেছিলো ।
আরে তুই জানিসতো এখানকার অবস্থা !
ওর বাবারও কাজের অসুবিধা হচ্ছে কাকু কাল বাবাকে বলছিল ,এসেছিল আমাদের বাড়ি ।
আচ্ছা কোথায় যাবো বলতো ?
দেখ বাবুনদা তোর রবিবার দাদার বিঁয়ে ,তুই শনিবার যেতে পারবি?
কি বলছিস পারবো না মানে!!!,
কিকরে বললি ?
না না তোর বাড়ির লোকজন আছেনা —ধুর বাবা তিন ঘন্টায় কি হবে? আর আমার বাড়ি থেকে কিছু বলবে না …..
আমি জানি সেটা তাও ,,,,,
ও আমাকে যাচাই করছিস নাকি রে ?
আরে না গুরু রাগ করিসনা ।
দেখলাম বে তোর ছটফটানি …..!
তুই একি আছিস বদলাসনি ।
কেন রে বদলানোটা খুব সুখের ?
নারে এইরকম থাকিস তোকে এই রূপেই মানায় ।তবে পথে এসো বাছাধন …এইইই …….বল বল বেদ বাক্যটা একবার বল ,বল না প্লিজ ….
থাপ্পর খাবি ।
হা হা হা করে হাসি …..
জানিস ওসব না বললে কি জমে আমাদের এখানে অনেক বলি ,বলতে হয় বন্ধুরা একসাথে থাকলে হয় ওগুলো !
আমি মায়ের ছোট খোকা বুঝলি ,,,,
যেটা বললাম কাউকে নয় ,শুধু অনিমা আর তুই …আর তোর ওকে ?
একদম না ……
জিও গুরু তোর খুরে নমস্কার ।
এই শোন আর একটা কথা আমার হয়তো আর ছমাস পড়ে ট্রেনিং পড়বে মুম্বাইতে …
তারপর হয়তো বাইরে চলে যেতে হবে ।
তুই একা যাবি?
কতদিনের জন্য রে?
একা কেন যাবো? একেবারে বিঁয়ে করে যাবো বুঝলি !
আমি এখন গিয়ে বেশী দিন থাকতে পারবো না ,ওই ধর সাত দিনের মতো ।
এদিকে সব পেপারস রেডী করতে হবে ,আবার দুমাস বাদে কলকাতায় হয়তো একটা কাজে আসতে হবে ।
তখন এসে একচক্বর মেরে যাবো ।
জানিস আমি পন্ডিচেরী গেছিলাম তখন ওই শ্রীমার আশ্রম অরবিন্দ ভবন গেছিলাম ।
আমাকে ওখানে খুব টানে ,শান্ত পরিবেশ ,খুব মনে পড়ছিল তোদের কথা আর ওর কথা ।
আমরা ছোটবেলা থেকে একসাথে কত মজা করেছি বল তাই না ? দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল …..
হ্যাঁ জন্মের ভিটের জায়গা,আর মায়ের মমতা কখনও ভোলার জিনিস রে বাবুনদা ..!!
বাব্বা তুই তো দেখছি বুড়ি ঠাকুমার মত কথা বলছিস …
কোন দিকে সূর্য উঠল রে ….?
নারে সবই বুঝি ..
যাক তুই আয় ,এই এখন একদিন আমাকে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে হবে কারন আমার তো ঘুম আসবে না !
কেন ?
আহা ন্যাকা বলি তুমি তো বলেই খালাস “ভাইপো “আমাকে যে তোমাদের জন্য সব প্ল্যান প্রোগ্রাম সাজাতে হবে ।
ওই আমি আর অনিমা দুজনে …
হ্যাঁ রে তোরা সত্যিই…………বলতেই এক ধমকে বললো এই শোন বন্ধুরা করবে বন্ধুদের জন্য সেটা তোমার দাদু করবে …?বলেই হাসি …….রাখতে ইচ্ছা করছেনা কিন্ত কাজ আছে ,আরে তুই মন লাগিয়ে কাজ করে চলে আয় …।
ফোন করবি এনার্জির ট্যাবলেট ফোনে দিয়ে দেবো কেমন …..রাখছি হ্যাঁ টা টা …..
সুমি তো অনিমার বাড়ি ছুটে গেল আর সব বললো……
অনিমা বললো দারুণ বিঁয়েটা হলে আমিও যেন একটা ভালো কাজ করতে পারবো বলে মনকে বোঝাতে পারবো —কারন টুকির কথাটা মনে পড়লে খারাপ লাগে ……
আসছি তবে সব করতে হবে মনে রাখিস ,আরে কোন চিন্তা নেই ….
অবশেষে প্রতীক্ষার দিন এগিয়ে এলো টুকিকে অনেক ব্যবস্থা করে ম্যানেজ করে সুমিদের বাড়িতে আনা হল ।ওদিকে দুই বন্ধু এল মিতালী আর শিপ্রা ওর বিঁয়ে হয়ে গেছে ,বাপের বাড়ি এসেছে তাই ওকেও সাথে নিয়ে চললো মজা করতে।
ঠিক হয়েছে সিনেমা যাওয়া।
এই কি বই রে?
আরে আমার গুরুর বই —স্বর্ণতৃষা ..
মিঠুনদা মানে আমার গুরু ,আমার হেব্বি লাগে যাই বলিস….,!
আমি ওকে পেলে শালা বিঁয়ে করতাম…..
বাবা মা ঠাকুমার সামনেই বললো সুমি !
ও পরিষ্কার কথা বলতে ভালোবাসে…..
সবাই তো হো হো করে হেসে উঠল ।
ওর ঠাকুমা বললো সত্যিই পাগলী একটা …
এই বার ঘরের ভেতরে সবাই রেডী হচ্ছে আর এদিকে টুকিকে সুমির মার শাড়ি কতগুলো বার করেছে কেউ ঠিক করতে পারছে না কি করবে …
অবশেষে সুমির মা এসে বললো যে ,এই সর দেখি কোন কাজ হবেনা তোদের দিয়ে !
আমি পরিয়ে দিচ্ছি ওকে এইই যে পিংক আর ব্লু দিয়ে শাড়ি ওকে দিচ্ছি এটা ওকে ভারী সুন্দর দেখাবে ।
সবাই শাড়ি পরছে নিয়ে এসেছে আরকি
হ্যাঁ …..আমার মেয়ে তো আর শাড়ি পরবেনা কি আর করবো হুঁ…. ..!!
বলে কেমন যেন হয়ে গেল …….
সুমি মাকে জড়িয়ে ধরে বললো—
মা তুমি ওকে কি সুন্দর করে নিজের মেয়ের মতো শাড়ি পরাচ্ছো মনে হচ্ছে আর জন্মে তোমার মেয়েই ছিল ।
ওমা!! ওতো আমার মেয়েই ,মেয়ের বন্ধু সেকি পর !
আর সেই ছোটবেলা থেকে দেখছি একসাথে বড় হলি এ কি কথা মা সবাই সমান আমার কাছে সোনা—-একটু থেমেই….. মা আমাকে ও শাড়ি পরিয়ে দাও না ?
সত্যি বলতে কি আমার না ওকে তোমার সাজানো দেখে খুব ইচ্ছে হচ্ছে …….ওর মা তো অবাক !!!..
অনিমা বললো কাকিমা ভূতের মুখে রাম নাম …
বললো না গো সত্যি বলছি …
আচ্ছা মা আদর করে সুমিকেও শাড়ি পরিয়ে দিল ।
কেউ বললো কাকিমা আমার চুলটা একটু ঠিক করে দাও না ,কেউ বললো দেখোতো কাকিমা ঠিক আছে …?
বললো একটা টিপ পর দেখি……আরে এই বয়সটা যে আমরাও পার করে এসেছি …
সুমির ভাই বললো— হ্যাঁ রে দিদিরা তোরা কি যাত্রা করতে যাবি নাকি ?
কি সাজছিস এত এদিকে আমি বাইরে ক্যামেরা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি …
বলেই দরজায় টোকা …ওর ঠাকুমা দেখে বললো তুমি আবার এর মধ্যে ঢুকবে নাকি কেষ্ট সেজে …….!
—না হুকুম হয়েছে রানী সাহেবার ছবি তুলে দিতে হবে !
বাবা তাই এটা বের করে ঠিক করে দিয়ে গেল …
দাঁড়াও তোমাকে দিয়ে প্রথমে হাতটা ঠিক করে নি ..
ঠাকুমা বললো ও তোল তোল দেখি…
আমার ফটো তুলতে খুব ভালো লাগে ,দাঁড়াও ঠিক হয়ে নি ,সে ঠাকুমা বসে ,দাড়িয়ে কতয়ছবি তুললো ।
তারপর নাতি কে আদর করে বললো –তোর একখানা সুন্দর বৌ আসুক তার সাথে ফটো তুলবো …
এই বার দরজা খুলে সুমির মা ডাকতে লাগলো ও মা মা ..এদিকে আসুন দেখে আপনার চোখ সার্থক করুন …
.কি গো বৌমা ?
দেখুন সব সখীদের আর একটা সখীকে দেখুন তো চিনতে পারেন কিনা? ঠাকুমা তো অবাক!!!….
হা করে কতক্ষন দেখে বললো…. দিদিভাই তুই কাপড় পরেছিস বাঃ!! কি সুন্দর লাগছে মা তোকে একেবারে লক্ষ্মী প্রতিমার মতো দেখাচ্ছে ..!
দেখি কাছে আয়তো বলে কেন আঙুলটা নিয়ে দাঁত দিয়ে কেটে কিসব করলো ,আর বললো আর নজর লাগবেনা !
কই সবাই কে দেখি —-বাঃ কি সুন্দর লাগছে ,ওরে মেয়ে মানুষের রূপ খোলে শাড়ি আর গয়নায় ……
টুকিকেও আদর করে বললো ঠাকুরকে বলি তোদের চারহাত এবার এক হোক মা ,সুখী হোস তোর মঙ্গল হোক মা ….
সবাই ওর মা ঠাকুমা কে প্রণাম করলো …
বললো আরে আমরাও এই বয়স যে পার করেছি ,তোদের দেখে সব মনে পড়ছে ।
এই রকম আনন্দ করে সবাই থাকিস …
সুমি বললো ভাই দেরী হয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি তোল ..কত ছবি তোলা হলো ,টুকির ছবি দুতিন খানা সিঙ্গেল করে তোলা হলো …
সবাই বেরিয়ে গেল… সিনেমা হলের ভেতর গিয়ে দেখলো বাবুনদা আর ওর একটা বন্ধু ।
এবার সুমি বললো আমি বলছি কে কোথায় বসবে ……শোন ওপাশের কর্ণারে বাবুনদা তুমি এদিকে পেছনে ,আমরা চিন্তা নেই —–আসল লোক এইই যে কোথায় বাবুন বলে উঠলো!
আরে দাঁড়াও গুরু তোমার পাশে ওবসবে …..
এগুলো ওখানে তিনটে আছে টিকিট ওটা আমার কাছে …তোমারা দুজন বন্ধু তো ওরা সামনে ..ওগুলো ফাঁকা থাকবে ..চিন্তা নেই আমি এই সবকটা বুক করে রেখেছি ,,,,,,
বাবুন বললো দাঁড়া দাঁড়া তোদের আগে ভালো করে দেখি …..সুমি তুই শা…….ড়ি বলতেই বললো, কেন আমি পড়তে পারি না ?
দেখিয়ে দিলাম বুঝলি ……
আগে বস শালা আমাদের পরে দেখিস !
এখন তুই যাকে দেখার দেখ ,সিনেমা তো ঘোড়ার মাথা দেখবি। ..
এই ওদিকে এত ভিড় টিকিট নেই আর এদিকে,,,,,
আর কেউআসবে?
আমরা টোটাল নজন । হ্যাঁ !
তাহলে ?
আরে আমি নয় ছয় করে দিয়েছি —-মানে ছটা টিকিট বেশী করে পনেরোটা সিটকে এভাবে সাজিয়ে বসলাম ।
করলি কি করে ?
আরে ওসব আমার বা হাত কা খেল ….
এ আবার এমন কি …!
কত চাঁদুকে দেখে নিলাম আর এ তো সিনেমার টিকিট তোদের জন্য এটা পারবো না!!! …
একটা বেদবাক্য মাঝখানে বললো নারে !!..
হ্যাঁ ওটা তো বলেই থাকে ওটাই ওর সিগারেট …
ধন্য তোকে …
বাইরে চল তোকে মালা পরাবো ..
কেন রে শশ্মান যাত্রার সাজ সাজাবি ..?
এই শোন বিশে কে বলা আছে হাফ টাইমে ও স্পেশাল কিছু ঝালমুড়ি আর অন্য খাবার দেবে। তারপর সিনেমা শেষে রেস্টুরেন্টে তোর ঘাড় ভাঙবো ….
ওতে ভয় পাইনা …..!
আমিও তো তোদের বাবুনদা চল দেখাবো …
এই শোন তোরা যা খুশী কর আমার কিছু যায় আসেনা ,আমার গুরুর বই চলার সময় কোন কথা নয় …
তোদেরকে বলছি…
আরে বাবুনদা তোমাদের নয় গো ।
এই আমাদের গুলোকে এরা আবার বেশী দাঁত বার করে যে —তাই ,,,,,,
সিনেমা শুরু দারুণ —মিঠুনের জীবনের সত্যি প্রেম যোগিতা বালীর সঙ্গে আর এদিকে বাস্তবে বাবুন দা আর টুকি কি অদ্ভুত না .. .!!
মানুষের জীবনে কত সমস্যা …যোগীতা বালীর কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সত্যিই তাকে বিঁয়ে করলো ,আর বাবুনদাও তো তাই টুকিকে দেখে ভালোবেসে ওর কষ্ট সহ্য করতে পারছে না —কতদূর থেকে ছুটে এসেছে বাড়িতে বিঁয়ে কিন্ত তার মনের মানুষ টাকে দেখা একটু কথা ,চোখে চোখ রেখে সব বলা । চিন্তা নেই এবারে আমি তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে সসম্মানে ঘরে নিয়ে যাবো।
আমি যেখানে থাকবো তুমি ও সেখানে ,সত্যি এটাই বোধহয় —-“অমর -প্রেম “…।
এর মধ্যেই ওই গানটা ….”ও আমার সজনী গো ,কেন আছো দূরে …”যেই না শুরু আর পয়সা পড়তে আরাম্ভ ….
তখন কোনো বিখ্যাত সিনেমা বা ভালো লাগার নায়ক নায়িকার সিনেমা দেখার সময় এই পয়সা পড়তো …..
সেসব দিন ছিল আলাদা । যেমন পরিচালক তেমন গীতিকার সুরকার আর গানের শিল্পীর তো কথাই নেই …….
কি গান কিশোর কুমার আর লতাজীর …হৃদয় টুকরো হয়ে যায় …
দেখলাম একঝলক বাবুনদা টুকিকে খুব কাছে টেনে গালে কিস্ খেলো ,অনিমা আমাকে হাত টিপছে ,,,,
আমি বললাম করতে দে বেচারা …
আমাকে বলেছে এই কটা দিন পরেই বিঁয়েটা সেরে ওকে নিয়ে চলে যাবো ।মনে হয় বাইরেই হবে ওর সিফটিং…
উফ্ খুব ভালো লাগছে রে প্রেমটা আজ সার্থক ……।
দেখ দুজনে দুজনকে কত আপন ক‍রে নিয়েছে …
সিনেমা শেষ ।
বাবুনদা বললো, সুমি আর অনিমা কে দেখিয়ে তোদের যেন চিরদিন এভাবেই পাই আর তোদের জীবন যেন ঈশ্বর এরকম সুন্দর হাসি খুশীতে ভরিয়ে রাখে ।
কোথায় যে তোদের বিঁয়ে হবে কে জানে !!
কেমন হবে এক এক সময় ভাবি ,মেয়েদেরকেই শুধু কতয়কিছু সহ্য করতে হয় কেন বলতে পারিস?চিরকাল মেয়েরা মুখ বুজে কান্নাকে লুকিয়ে রেখে সকলের সামনে হেসে সব মানিয়ে নেয় ………!
তবে সুমি, অনিমা বা আমাদের বাড়ি এগুলো নেই বাবুনদা বললো ……..
সুমি বললো আরে সব হবে ,আগে বল কেমন ব্যবস্থা করলাম তোমাদের এই অল্প সময়ে ……
এক গাল হেসে বললো সারাজীবন মনে থাকবে ………।
তুই এরকমই থাকিস বদলাবি না ,এটাই তোর ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য ……।
.চল কোথায় খাবি বল ?
এই বলে সবাই রেস্টুরেন্টে চলে গেল।
আজ এই অবধি …
এরপরই হয়তো ইতি টানতে হবে … ….
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।