সাতে পাঁচে কবিতায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

বিবেক

ধরুন,বিবেক নামে একটি গাছের চারা মানস-উদ্যানে বসালেন
মাটি তৈরি ছিল,সার,জল,বেড়া সবই দেওয়া হলো
চারাটি হরিণশিশুর মতো নাচতে নাচতে উঁচুতে ডালপালা মেলে দিলে
মনোরম সবুজে আপনার বাগান খিলখিল হেসে উঠলো
মানবজমিন চাষির মুখে আলোর উদ্ভাস
আপনি ভাবলেন,কদিন পরেই তো ফুলে ফুলে ভরে যাবে ডাল
সুগন্ধে পূর্ণ হবে চরাচর…… আনন্দে আপনি নিদ্রাহীন
ফুল-ফল-গন্ধপ্লাবনে ভাসছেন……

সকালে দেখলেন,চেনা-অচেনা অজস্র সবুজভোজী জীব
ঘিরে ধরেছে আপনার তরুণ নায়ককে
তাদের কেউ শিং দিয়ে বেড়াটাকে নাড়িয়ে দিচ্ছে যেন এক্ষুনি
ভেঙে পড়বে,কেউ বা সন্ধিপদ মেলে বেড়ার গর্ত দিয়ে ঢুকছে
ভিতরে পাতা প্রায় ছোঁয় ছোঁয়……
আপনি চিৎকার করে উঠলেন —
গেল গেল — দূর–দূর….. কীভাবে বাঁচাবেন প্রিয় নয়নমণি!
সে যে শিশুর সারল্যে হাসে কোন আঘাত কতটা নির্মম সে তো জানে না!
আপনি বুক দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন বিবেক নামক মহামূল্য সম্পদ।
হঠাৎ দেখলেন,অজস্র ছায়ামূর্তি দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে আসছে
বিবিধ হিংস্র ভঙ্গিমা, অশ্রুত ভাষা সব অশালীন, আপনি হতবাক!
কারা এরা? চিৎকার করলেন — তোমরা কারা? কেন এমন করছো?
ব্যঙ্গবিক্রমে তারা বলবে,আমরা তোমারই ছায়া তুমিই তো আমাদের
আশ্রয়….. এ ভাষা তোমার অবচেতনার…..
আপনি এমন আশ্চর্য উত্তর শুনে তলিয়ে যেতে থাকবেন প্রাগৈতিহাসিকতার
মৃত্যুফাঁদে…… বুঝবেন বিবেক নামক তরুণটিকে বাঁচানো বড়োই কঠিন আর
আপনি আদিম অস্ত্রে ছিন্নভিন্ন হলেও অদ্ভুতভাবে বেঁচে থাকবেন তবে
অজস্র সবুজভোজী চতুষ্পদ,সন্ধিপদ,দ্বিপদের হাত থেকে,দাঁত থেকে
অশ্লীল ছায়াদের থেকে কীভাবে বিবেককে বাঁচাবেন তা আপনিই
ঠিক করুন।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।