২০২০’র ১লা বৈশাখ। এই প্রথমবার নববর্ষের দিনে রায়বাড়িতে কর্তা-গিন্নির ব্যস্ততা নেই। একমাত্র ছেলে সৃজন জানুয়ারীতে চাকরি নিয়ে সপরিবারে মুম্বাই মুভ করেছে। নিয়মের দু’চারজন আত্মীয়-বন্ধুকে লাঞ্চে ডাকলেও– ছেলের পছন্দের রান্না নেই, নাতি-নাতনির সময়-অসময়ের আবদার নেই, নববর্ষের দিনে বৌমা’র হাতে নতুন শাড়ি তুলে দেওয়া নেই। বারকয়েক ফোন করলেন মিসেস রায়। ছেলে আর বৌয়ের ফোন স্যুইচড অফ পেলেন বারবার।
এসব নিয়েই কথা বলছিলেন রায় কর্তা-গিন্নি। এমনি সময়ে বাড়ির নীরবতা ভেঙে বেজে উঠলো কলিংবেলটা। দরজা খুলতেই হৈ হৈ করে একরাশ খুশির আলো নিয়ে ঘরে ঢুকলো সৃজন পরিবারসহ। সারপ্রাইজ !
আজ ২০২১’এর বাংলা নববর্ষের দিন। এই একবছরে অনেকটা বুড়ো হয়ে গেছেন রায় কর্তা-গিন্নি। চোখের সামনেটা শুধুই ঝাপসা। একবছর আগে আজকের দিনের শেষবারের মতো বাজা কলিংবেলের শব্দটা এখনও এঁদের কানে বাজে আর চমকে তাকান ওঁরা দরজার দিকে।
করোনা’র থাবা ছিনিয়ে নিয়েছে সৃজনকে ছ’মাস হলো। একমাত্র সন্তানকে শেষ বিদায়টুকুও জানানো গেলো না। মনজুড়ে শুধু অপেক্ষা। হয়তো আবার কলিংবেল বাজবে। দরজা খুলতেই মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে সৃজন বলবে, “সারপ্রাইজ”!