প্রবন্ধে ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

কল্পতরু’
“আমি আর কী বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।”

১৮৮৬ সালে ১ জানুয়ারি, কল্পতরু রূপেই ভক্তদের আর্শীর্বাদ করেছিলেন ঠাকুর রামকৃষ্ণ। আর সেই থেকে বছরের প্রথম দিনটি কল্পতরু উত্‍সব নামে পরিচিত। এই উত্‍সব উপলক্ষে কাশীপুর উদ্যানবাটী ও দক্ষিণেশ্বরে ভক্তদের সমাগম হয় এই দিনটিতে রীতি মেনে পুজো অর্চনা করা হয়। এই কল্পতরু কথার অর্থ হল ইন্দ্রলোকের সর্বকামনা পূরণকারী দেবতরু অর্থাত্‍ অত্যন্ত উদার ও বদান্য ব্যক্তি, যিনি সহজেই অন্যের ইচ্ছাপূরণ করেন। কল্পতরু উৎসবের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের একটু পিছনে যেতে হবে।
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের গলা থেকে প্রথম রক্তক্ষরণ ঘটে আগস্ট ১৮৮৫তে। ডাক্তারি ভাষায় এর নাম ‘ক্লার্জিম্যানস থ্রোট’ (Clergyman’s Throat)। প্রখ্যাত ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার তাকে দেখেন ২ সেপ্টেম্বর ১৮৮৫ এবং পরের মাসে (১২ অক্টোবর) নিয়মিত চিকিৎসা শুরু করেন। তারই সিদ্ধান্ত, রোগটা ক্যানসার, কবিরাজি ভাষায় রোহিণী রোগ। শ্রীরামকৃষ্ণের অসুস্থতা যখন বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেছে তখন ঠিক হল তাঁকে দক্ষিণেশ্বর থেকে শ্যামপুকুরে নিয়ে আসা হবে। শ্যামপুকুর বাটীতে ৭০ দিন থাকার পর দেখা গেল ওষুধে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। অবস্থা সংকটজনক হলে ১১ ডিসেম্বর, ১৮৮৫ তারিখে ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকারের পরামর্শে ভক্তরা তাঁকে কাশীপুরের বাগানবাড়িতে নিয়ে এলেন। এখানে বলে রাখি এই বাড়িতে ২৫ মার্চ ১৮৮৬ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ জে এম কোটস এসেছিলেন তাকে দেখতে। বিখ্যাত ডাক্তার রাজেন্দ্রনাথ দত্ত এসেছিলেন ৬ এপ্রিল ১৮৮৬।
কলকাতার বরানগরের পথে বেশ নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ পেয়ে ঠাকুর খুব খুশি হলেন। মনোরম এই বাগানবাড়িটি রানি কাত্যায়নীর জামাই গোপাললাল ঘোষের। মাসিক ৮০ টাকায় বাড়িটি ঠাকুরের জন্য ভাড়া নেওয়া হল। ১১ বিঘা ৪ কাঠা ৪ ছটাক আয়তনের এই বাগানবাড়ি চার দিকা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা। দেওয়ালের উত্তর দিকের মাঝামাঝি ৩টি ছোট ঘর রান্নাঘর ও স্টোর হিসাবে ব্যবহার করা হত। উল্টো দিকে দোতলা একটা বাড়ি। তার নীচে ৪টে ঘর, উপরে দু’টো। নীচের তোলার ঘরটি হলঘরের মতো। এরই উত্তর দিকে পাশাপাশি দু’টো ছোট ঘর ছিল। তার মধ্যে পুবের দিকটা ছিল সারদা মায়ের। নীচের হলঘরের ঠিক উপরেই একই মাপের যে ঘরটা ছিল সেটাতেই থাকতেন শ্রীরামকৃষ্ণ।
সে দিন ছিল পয়লা জানুয়ারি, ১৮৮৬। বিকেল ৩টে। শরীরটা আজ যেন একটু ভালো। শ্রীরামকৃষ্ণ ঘর থেকে বাগানের পথ দিয়ে গেটের দিকে চলেছেন। দেখলেন কাছেই আম গাছের তলায় আড্ডা মারছে গিরিশ, অতুল, রাম ও আরও অনেকে। আর গিরিশ চারদিকে ঠাকুরের অবতারত্ব, তাঁর বিরাটত্ব, তাঁর অনন্যতা সম্পর্কে বলে বেড়াতেন। কাছে গিয়ে ঠাকুর গিরিশকে বললেন, “হ্যাঁরে, তুই নাকি আমার নামে কী সব বলে বেড়াচ্ছিস? আমি নাকি ভগবানের অবতার। তুই আমার মধ্যে কী দেখলি, কী বুঝলি?” গিরিশ তাঁর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বললেন, “আমি আর কী বলতে পারি? স্বয়ং ব্যাসদেব আর বাল্মীকিও যাঁকে বর্ণনা করার জন্য ভাষা খুঁজে পাননি, আমি তাঁর কী বলব”। গিরিশের এই ভক্তি দেখে আপ্লুত শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন, “আমি আর কী বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।” এরপর তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। রামকৃষ্ণ-অনুগামীদের মতে, তাঁর স্পর্শে সেদিন প্রত্যেকের অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়েছিল। গিরিশ দেখলেন ঠাকুরকে ঘিরে রয়েছে এক দিব্যজ্যোতি। ‘জয় শ্রীরামকৃষ্ণ’, ‘জয় শ্রীরামকৃষ্ণ’ বলে শ্রীরামকৃষ্ণের পায়ে পড়ে গিরিশ চিৎকার করতে লাগলেন। ভক্তরা উন্মাদ হয়ে উঠল। কেউ আনন্দে চিৎকার করে উঠল, কেউ বা ঠাকুরের দিকে ফুল ছুড়তে লাগল, কেউ আবার ঠাকুরের পা জড়িয়ে ধরল। সমাধি ভাঙল শ্রীরামকৃষ্ণের। ভক্তদের প্রত্যেককে স্পর্শ করে তাঁদের মনোমতো আশীর্বাদ করলেন। এই স্পর্শ ভক্তদের মনের মধ্যে বিপ্লব ঘটিয়ে দিল। কেউ হাসতে লাগল, কেউ বা আনন্দে কাঁদতে লাগল, অনেকে আবার ধ্যানে বসে গেল। পরে ভক্তদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সেই মুহূর্তটা কেমন মনে হয়েছিল, যখন শ্রীরামকৃষ্ণ স্পর্শ করেছিলেন? কেউ কেমন একটা মিষ্টি মাদকতা অনুভব করেছিলেন; কেউ ধ্যানে যে দেবতাকে দেখাতে পান না, তাঁকে দেখেছিলেন; কারও শরীরের মধ্য দিয়ে কেমন একটা অদ্ভুত স্রোত বয়ে গিয়েছিল; কেউ অনির্বচনীয় আনন্দ অনুভব করেছিলেন যা আগে কখনও পাননি; কেউ একটা দীপ্তি দেখেছিলেন। অর্থাৎ অর্থ নয়, নাম নয়, যশ নয়, প্রতিপত্তি নয়, ঠাকুর সে দিন চৈতন্য বিতরণ করেছিলেন। ঠাকুর সে দিন কল্পতরু হয়েছিলেন আমাদের অন্তরস্থিত চেতনার উন্মীলনের জন্য। রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতম শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, সেই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরুতে পরিণত হয়েছিলেন। তিনিই এই দিনটিকে কল্পতরু দিবস নাম দিয়েছিলেন, যা পরে কল্পতরু উৎসব নামে পরিণত হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংসের গৃহস্থ শিষ্যরাই তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সন্ন্যাসী শিষ্যেরা সেই দিন তাঁর কাছে ছিলেন না। সেই দিনটির স্মরণে এখানে প্রতি বছর কল্পতরু উৎসব পালন করে শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ।
‘কল্পতরু’ কথাটি এসেছে পুরাণ থেকে। এটি হল কল্পান্তস্থায়ী বৃক্ষ। দেবাসুরের সমুদ্রমন্থনের কথা কম বেশি আমরা সকলেই জানি। দেবাসুরের সমুদ্রমন্থনের সময় সমুদ্রগর্ভ থেকে এটি উত্থিত হয়। পরে কল্প শেষ হলে আবার সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়। এই জন্যই এর নাম হয়েছে কল্পতরু।এটি হল অভীষ্ট ফলদায়ক বৃক্ষ।এই গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কোনও কিছু জিনিস প্রার্থনা করলে তা অচিরেই লাভ হয়। পুরাণ মতে, দেবরাজ ইন্দ্রের স্বর্গোদ্যানে নাকি এই গাছ ছিল এবং এই গাছের কাছে যে যা চাইতো তাই পেত। এটি ইন্দ্রলোকের সর্বকামনা-পূরণকারী দেবতরু।কল্পতরুর সঙ্গে ভগবানের স্ব ভাবের তুলনা করা হয়।
স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণদেব অনেকবার নিজেই ভক্তদের বলেছেন, “ভগবান কল্পতরু। কল্পতরুর নীচে বসে যে যা চাইবে, তাই পাবে”। তবে শ্রীরামকৃষ্ণদেব এও বলেছেন যখন সাধন-ভজনের দ্বারা মন শুদ্ধ হয় তখন খুব সাবধানে কামনা করতে হয়। কারণ কল্পতরু বৃক্ষের নীচে প্রার্থনা করলে ভালো-মন্দ যা সব চাওয়া যায় তাই পাওয়া যায়। গাছটিকে আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বা লুব্ধক তারার জন্মস্থান হিসাবেও বলা হয়। দেবরাজ ইন্দ্র এই কল্পতরুকে নিয়ে স্বর্গে তার বাসভবনে ফিরে এসে সেখানে রোপন করেছিলেন। কল্পতরুকে অনেক গাছের সাথে চিহ্নিতও করা হয়, যেমন পারিজাত (এরিথ্রিনা ভারিগাটা), ফিকাস বেঙ্গালেনসিস এবং তুঁত গাছ (মরাস নিগ্রা গাছ)।
অপর একটি কল্পকথায় বলা আছে যে কল্পতরু পৃথিবীতেই ছিল কিন্তু পৃথিবীর মানুষ এর কাছে মন্দ কামনা করে অপব্যবহার শুরু করায় একে ইন্দ্রের আবাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কথিত আছে, ইন্দ্রের ‘দেবলোকে’ পাঁচটি কল্পতরু রয়েছে। সেগুলি হল – মন্দনা, পারিজাত, সন্তান, কল্পতরু ও হরিচন্দন। এর সবগুলিই বিভিন্ন ইচ্ছা পূরণ করে। বলা হয়, কল্পতরুটি ইন্দ্রের পাঁচটি স্বর্গীয় উদ্যানের মাঝখানে মেরু পর্বতের শীর্ষে রোপন করা হয়েছিল। এই ইচ্ছাপূরণ গাছগুলির কারণে অসুররা দেবতাদের সাথে চিরকালীন যুদ্ধ চালিয়ে গেছে, কারণ দেবতারা কল্পতরুর “ঐশ্বরিক ফুল এবং ফল” থেকে অবাধে উপকৃত হয়েছে, যেখানে অসুরদের গাছের নিচের “ডাল এবং শিকড়” নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। পারিজাত প্রায়শই তার পার্থিব প্রতিরূপ, ভারতীয় প্রবাল গাছ (এরিথ্রিনা ইন্ডিকা)র সাথে চিহ্নিত হয়, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চিত্রিত হয় ম্যাগনেলিয়া বা কাঠগোলাপ এর মতো, (সংস্কৃত: চম্পক) গাছ। বলা হয় এটির শিকড় সোনা দিয়ে তৈরি, রৌপ্যময় মধ্যভাগ, নীলকান্তমণি বৃক্ষশাখা, প্রবাল পত্র, মুক্তা ফুল, রত্ন পাথর কুঁড়ি এবং হীরক ফল। আরও বলা হয় যে পার্বতীর একাকীত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অশোকসুন্দরীকে একটি কল্পতরু থেকে তৈরি করা হয়েছিল। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, অনেক বেদনাদায়ক আলোচনার পরে, শিব এবং পার্বতী, তাদের কন্যা অরণ্যানির সাথে বিচ্ছেদের সময়, তাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ঐশ্বরিক কল্পতরুকে দিয়েছিলেন যখন রাক্ষস অন্ধকাসুর তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। পার্বতী কল্পতরুকে তার কন্যার “সুরক্ষা, প্রজ্ঞা, স্বাস্থ্য এবং সুখ,” দিতে এবং তাকে বনের সুরক্ষাকারী বনদেবী করে তুলতে অনুরোধ করেছিলেন।
যাই হোক, পয়লা জানুয়ারি, ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দ। এই দিনে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ কল্পতরু হয়েছিলেন। পয়লা জানুয়ারি আমরা অনেকেই কাশীপুরে যাব। সেই সাজিয়ে রাখা গাছটির কাছে যাব, যেখানে ঠাকুর হয়েছিলেন কল্পতরু।
কিন্তু ঠাকুর নিজেও বলেছেন : ”কল্পতরুর কাছে গিয়ে চাইতে হয়।” আবার ঠাকুর বিশেষভাবে সাবধান করে বলছেন , ”কল্পতরুর কাছে চাইলেই পাওয়া যায়, কিন্তু মনে রাখতে হবে যে বাঘও আসতে পারে।”
এ বিষয়ে তাঁর শ্রীমুখ নিঃসৃত একটি গল্প আছে এবং শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তমণ্ডলী নিশ্চয় গল্পটি অবগত আছেন। সেই গল্পে জঙ্গলের মধ্যে পথভ্রান্ত এক পথিক কল্পবৃক্ষের কাছে খাদ্য, পানীয়, বিশ্রামের জন্য বিছানা সব চেয়ে পেয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তার মনে হল – ‘এবার যদি আমায় বাঘে খায়, তাহলে কী হবে?’ ভাবার সাথে সাথেই কল্পতরু তার ভাবনা বাস্তবায়িত করল, অর্থাৎ বাঘ এসে সেই পথিককে খেয়ে গেল। তাই ঠাকুর আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলছেন যে, ‘মনে রাখবে বাঘও আসতে পারে।’ তাই কল্পতরুর কাছে আমাদের প্রার্থনা হোক, আমরা তোমায় চাই। কারণ তোমায় পেলেই সব পাওয়া হবে। তুমি সঙ্গে থাকলেই আর বাঘও কোনও ক্ষতি করতে পারবেনা।
কথামৃতে আছে, [যাত্রাওয়ালা ও ঈশ্বর ‘কল্পতরু”—সকাম প্রার্থনার বিপদ ]
যাত্রাওয়ালা—আচ্ছা, আপনি ভোগের কথা বল্লেন, তা ঠিক। ঈশ্বরের কাছে ভোগের কামনা করলে শেষকালে বিপদে পড়তে হয় । মনে কত রকম কামনা বাসনা উঠছে, সব কামনাতে ত মঙ্গল হয় না। ঈশ্বর কল্পভরু, তার কাছে যা কামনা করে চাইবে তা এসে পড়বে। এখন মনে যদি উঠে ইনি কল্পতরু, আচ্ছা দেখি বাঘ যদি আসে । বাঘকে মনে করতে বাঘ এসে পড়ল ; আর লোকটাকে খেয়ে ফেল্পে ।
শ্রীরামকৃষ্ণ – “হ্যা, ঐ বোধ, যে বাঘ আসে। আর কি বলব, ঐদিকে মন রেখো, ঈশ্বরকে ভুলে না—সরল ভাবে তাঁকে ডাকলে তিনি দেখা দেবেন।”
১লা জানুয়ারি কাশীপুর উদ্যানবাটীতে হাজার হাজার ভক্ত কল্পতরু উৎসব উপলক্ষ্যে হাজির হন। কেন হাজির হন এত মানুষ? এক কথায় বলা যেতে পারে ‘চৈতন্য হোক’ অর্থাৎ অনুভুতি, জ্ঞান, বোধের, জাগরণ ঘটুক রামকৃষ্ণসত্ত্বায়।
আমাদের মনের চাওয়ার কোনও শেষ নেই। ভালো বাসনা পুরণ হলে মনটা প্রসারিত হয়। অন্তরে শুভবোধের জন্ম হয় এবং প্রজ্ঞা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য কল্পতরু ভগবানের কাছে কেবল জ্ঞান-বৈরাগ্য-ভক্তি-বিশ্বাস চাইতে হয়। এতে মনের আনন্দ বৃদ্ধি পায় এবং জীবনটাও হেসে খেলে কাটানো যায়।
ঋণ: শ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত। লীলাপ্রসঙ্গ। উইকিপিডিয়া। ইন্টারনেট।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।