‘হ্যা, স্পিকিং’ ভুরুতে ভাজ ফেলে অফিসার বলেন. ‘কতক্ষন?’. ফোন রেখে অফিসার বলেন ‘ড: বসু ইস নো মোর’.
‘সে কি’ সকলে চিৎকার করে ওঠে.
‘হাসপাতাল থেকে জানালো, সি অয়াস ব্রট ডেড’.
‘জল থেকে তোলার সময় পালস ছিল’ অপূর্ব বলে.
‘পোস্ট মর্টম রিপোর্ট না এলে কিছু বলা যাবে না’.
অপূর্বকে সঙ্গে করে অফিসার চলে যান.
রসকসহীন ডকুমেন্টারির শুট্যিং করতে এসে এরকম অভিজ্ঞতা হবে ঝোরাদের টিমের কেউ ভাবতে পারে নি. ব্যাপারটি পরের দিন কাগজে বেড়োল, ইন্টারনেট নিউজ লিংকে দাবানলের মত খবর ছড়িয়ে পড়ল. প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ড: মঞ্জরী বসুর মৃত্যুর খবরে পাহাড়ী নির্জন জনপদে ভেঙে পড়ল মিডিয়া. সকলের বাড়ী থেকে ফোনের ঝড় আছড়ে পড়ল. আকাশলীনার কান্না, মিডিয়ার প্রশ্ন, স্তিতধী ও মায়েদের আতঙ্কিত স্বর সব সামলাতে গিয়ে ঝোরা, মেই লিং, বিধ্বস্ত, ক্লান্ত, অবসন্ন . বাইরে মেঘ রোদ্দুরের খেলা নীল পাহাড়ের চূড়ায় বরফের মুকুট, আরও দূরে শায়িত স্লিপিং বুদ্ধার উপস্থিতি কিছুই মনকে শান্ত করতে পারছিল না. ঝোরাদের সকলের মনে প্রশ্নের ঝড় যুক্তিকে খান খান করে ফেলছিল তান্ডবে.
মেধা, রূপ, প্রজ্ঞা তাহলে কি? শুধুই এক অন্ত:সারহীন আড়াল? ডকুমেন্টারির কাজ মিটে যাবার পরেও ঝোরা এবং টিম রিং চেং পং এ আটকে রইল আরও চারদিন.
পঞ্চম দিনে অপূর্ব বিমান টিকিট নিয়ে রিং চেং পং এ উপস্থিত হল. অফিসার অমিতাভ ভট্টাচার্য্য সঙ্গে এলেন. অফিসার বললেন ‘অনেক স্নায়ুযুদ্ধ করলেন আপনারা, এবার যে যার বাড়ী ফিরে যান. অপূর্ব আপনাদের সঙ্গে যাবে. মঞ্জরীকে ফেরান সম্ভব হল না, সেই চলেই গেলেন সকলকে ফাঁকি দিয়ে’. একটা লম্বা শ্বাস ফেললেন অফিসার. অপূর্ব সকলকে জিনিষপত্র গুছিয়ে নিতে বলল. কাল বিকেলে ফ্লাইট. সকালে এখান থেকে নেমে যেতে হবে.
‘ড: বসুর পোস্ট মর্টম রিপোর্ট কি বলছে?’ ঝোরা জিজ্ঞেস করে. ‘বিষক্রিয়া, সম্ভবত সকালে উনি বিষটি খেয়েছিলেন’. আর তারপরেই উনি সরোবরে ঝাঁপ দেন. – অপূর্ব বলে.
‘পেট ওয়াস করা গেল না?’
‘না:’ অফিসার বলেন.
‘এই বিষ দিয়েই মঞ্জরী ব্ল্যাক প্রিন্সকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, সেই বিষ দিয়ে নিজেকে শেষ করলেন, আপনারা যাবার গোছগাছ করে নিন’.এই বলে অফিসার বিদায় নিলেন.
ঝোরা নিজের জিনিষপত্র গোছাতে যায়. বাড়ীর জন্য মনটা ছটফট করছে.