সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে গৌর হরি মান্না (ভ্রমণ কাহিনী পর্ব – ৬)

জ্যোৎস্নায় মাখামাখি জামুয়ানি

আবার একটা মায়া ভরা রাত,জামুয়ানির আকাশে আস্তে আস্তে ফুটে উঠছে অজস্র তারার মিটিমিটি চাহনি, আর নীলাভ চাঁদের লাজুক হাসি। চোখের সামনে ক্যানভাসের মতো ফুটে উঠছে জ্যোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে ওঠা মায়াবী অরণ্য, জামুয়ানির উন্মুক্ত প্রান্তর। যাদের কাছে প্রকৃতিই একমাত্র চাহিদা, যাদের প্রকৃতি উপভোগ করার মতো চোখ আছে তাদের জামুয়ানির জ্যোৎস্নায় ভরা রাতের প্রকৃতি উন্মাদ করে তুলবে। প্রথমেই আপনাকে ভালো করে বুঝতে হবে আমরা কিন্তু অরণ্যের কোন বিলাসবহুল কটেজে নেই, আছি অরণ্যের গভীরে এক এঁদো গ্রামে। জল চাইলে হাতের কাছে বিশলারি পাবোনা ভরসা গ্রামের ডিব টিউবওয়েলের জল। খাবার জন্য কোন ডাইনিং টেবিল নেই আছে অসীম আকাশের নিচে এক উন্মুক্ত মাটির দালান। চাইলে হাতের কাছে কোন মিক্সি নেই শিল ও নোড়াই একমাত্র ভরসা। রান্না করার জন্য গ্যাস ওভেন নেই সম্বল মাটির চুলা আর অরণ্যের কাঠ। এখানে কোন এসি রুম নেই থাকতে হবে টালির চাল যুক্ত মাটির ঘরে। হাওয়াই পড়ে ছপাত ছপাত পা ফেলে সওয়ার চালিয়ে শ্যাম্পু সাবানের ফেনার যুদ্ধে মেতে ওঠা নয় ওই উন্মুক্ত প্রান্তরের জলাশয় স্নানের একমাত্র ভরসা।শৌচকর্মের জন্য কোন কোমট যুক্ত এট্যাচ বাথরুম নেই আছে প্রকৃতির কোলে এক উন্মুক্ত প্রান্তর। তবুও কখনো আমাদের এই সুবিধা বা অসুবিধা গুলো কোন প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ আমাদের চাহিদাই ছিলো মায়াবী অরণ্যের মাঝে এক এঁদো গ্রামে নিজেদের কে ওদের জীবন যাপনের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া। দেখতে দেখতে রাতের খাবার তৈরী, খাওয়া দাওয়া করে সারা দিনের ধকল থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের দেশে চলে যাওয়া।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।