সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে গৌর হরি মান্না (ভ্রমণ কাহিনী পর্ব ১)
জ্যোৎস্নায় মাখামাখি জামুয়ানি
এই রাত গভীরে অরণ্যের সোহাগী শরীর ছুঁয়ে আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসছে লাজুক চাঁদ।আর তারাদের মিটিমিটি হাসির মাঝে কেন্দুপাতার গাল ছুঁয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে রাতের জোনাকি।মায়াবী এই অরণ্যের ভেতর এক আদিবাসী প্রিয়জনের মাটির দালানে বসে আছি আমি। শাল ফুলের সুবাস, মহুয়ার মাদকতা, কেন্দু পাতার হাসি আর নির্ভেজাল আদিবাসী মানুষের উদ্দামতায় ভেসে যাওয়া ধামসা মাদলের স্বাদ নিতেই এখানে ছুটে আসা। বসন্তের এক পলাশ মাখা প্রভাতে অরণ্যের সঙ্গে সখ্যতা করার জন্যই আমার কয়েক জন প্রিয় ভাইয়ের অনুরোধে এখানে আশা। সকালের বোম্বে হাই ধরে ছুটতে ছুটতে মাঝ পথে হোটেল সুবর্ণরেখায় ক্ষণিকের বিশ্রাম। সকালের জলযোগ করে আবার ছুট সিমলিপালের প্রবেশ দ্বার জোশিপুরের উদ্দেশ্যে। পথের মাঝে অপরূপ বাংরিপোশির হৃদয় ছুঁয়ে গাড়ি নিয়ে এসে দাঁড়ালাম যোশিপুরে। এখান থেকেই গাড়ি করে তুলে নিয়ে যেতে হবে আমার আদিবাসী বন্ধু গোবিন্দ কালুনডিয়া কে। বিভিন্ন কারনে সিমলিপাল অরণ্য এখন বন্ধ। অগত্যা আমার আদিবাসী বন্ধু গোবিন্দ কালুনডিয়ার হাত ধরে তার বাড়িতে তিন দিন রাত যাপন করা। দুপুরে জোশিপুরে পৌঁছে দেখি এই অঞ্চল পুরোপুরি জমজমাট। আজ যে হাটবার,তাই দূর দূরান্ত থেকে পাহাড় অরণ্য টপকে আদিবাসী মানুষ ছুটে এসেছে সাড়া সপ্তাহের রশদ যোগার করতে। কি রঙিন আদিবাসী হাট,আর কি নেই সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে রঙ- বেরঙের জামাকাপড়। দেশি মুরগি থেকে মাটির হাড়ি সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে এই রঙিন হাটে।