কবিতায় স্বর্ণযুগে গোবিন্দ ব্যানার্জী (গুচ্ছ কবিতা)

তুলসীমঞ্জরী
তুলসীমঞ্জরী ফুটছে স্বচ্ছ জলে
বাতাসে গভীর চঞ্চলতা বইছে
ঝিমিয়ে থাকা একটা বিশদ চলাচলে
আনচানিয়ে উঠছে অপেক্ষার সীমা
তুমি ঘুমিয়ে পড়ার আগেই
গ্লাসের কানাচে ঠোঁট ছুঁয়ে নাও একবার…
অথচ তিন ঘন্টা হয়ে গেল
তুমি সুরের নরম আবেশ ছেড়ে এসেছো
সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে
তুমি রাতের আকাশে চ’রে বেড়াচ্ছো
বাউলেরা আখড়ায় ফিরে গেছে তো
ছিঁড়ে ফেলা কাগজের টুকরো থেকে
ঠিকানা সংগ্রহ করছো রাত বিরেতে
ঘরে চলো
ঘুমেরা কাতর হয়েছে বড়
তারাদের ফিরে যেতে দাও এবার
জীবন্ত স্বপ্নের কাহিনী তারা
অনেক পাতার ফাঁক দিয়ে
পুরোনো সময়ের শুকনো হয়ে আসা
জমে থাকা ধূলো উড়িয়ে
হারিয়ে গিয়েছিলই বলা চলে
কত জলের ছলছল অকথিত স্রোত ছিল হয়তো
কিন্তু সে পথ ছিল দূরবর্তী ঘুমের ভিতর
জীবন্ত স্বপ্নের কাহিনী তারা
ভারী হয়ে উঠছে বাতাসের ঘনত্ব
পোশাকের রং চামড়ার বার্ণিশ
ফেলে রাখা সুটকেসের ভিতর গুমট হয়ে গেছে
নয় নয় ক’রে এক হাজার কিলোমিটার হেঁটে এসে
বিশ্রাম বুক ভ’রে স্মৃতি গিলছে এখানে
কী ঝড় কী ভয়ানক বৃষ্টি বাজে মগজে
গান হয়ে ঝ’রে পড়ে টপ ট প…
গুছিয়ে রাখতে গিয়ে মুছে যাচ্ছে ছবির রং
যেটা বলা যেত ভেবেছি ইদানীং
সে সব রোজ দোলে ছায়ার মত সোৎসাহে
তারপর সময়ের স্থবিরতার পাশে ব’সে
আজকাল খুব কেঁদে ফেলে তারা…
উন্মুক্ত রোদ্দুরে শরীর
নিজের ঘুমিয়ে আসাটাকে খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে
কাশির দমক লাগে গানের মধ্যমীড়ে
শুনসান আঁচড় নিভে যেতে থাকে
শিকড়ের বহুমাত্রিক পরম্পরা গুলিয়ে দিয়ে
তারপর টেবিলের দাগ, গোটানো চেয়ার
উৎসবের আলো আর শেষ রাত সমার্থক
সেখানে দমকে দমকে ম্লান হয়ে আসে সম্পর্ক
অতি পুরোনো তাত্বিক দর্শন তখন মরা অক্টোপাশ
দালালেরা ভীড় বাড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেহমান
বয়েসের অসম্মান চোখে ও চামড়ায়
শতায়ুর দুরভিসন্ধি অথবা ঝাপসা চশমা
বালির উপরিতলে লুটোয় রঙীন পোশাক
শরীর মেলে থাকে উন্মুক্ত রোদ্দুরে শরীর।