গল্পবাজে দেবানন্দ মুখোপাধ্যায়

মেঘ ও মন 

শীতকালে ”কি ঠান্ডা”,গরমে ‘কি গরমরে বাবা ‘,বা বর্ষায় ‘কবে যে বৄষ্টি থামবে ,আর ভালো লাগছেনা ‘ বলাটা কিছু লোকের স্বভাবে দাঁড়িয়ে গেছে।মানুষরা আজকাল কোনোকিছুতেই শান্তি পায়না।ভাবনাটা চিরন্তনের মনে প্রায়শঃই ঘোরাফেরা করে।মানুষরা কি ভাবে?প্রত্যেকটাদিন তাদের সুবিধামতো আবহাওয়া পাবে?ঋতু মেনে আজকাল আবহাওয়া পাওয়া যায় ?আমরাই তো সেটা নষ্ট করে দিয়েছি।তবুও কিছু মানুষ কাজের সময়ে পছন্দসই আবহাওয়া না পেলেই গালিগালাজ করে ।এটা কি উচিৎ ?
চিরন্তন অবশ্য এতটা স্বার্থপর নয় ,তবুও এই অক্টোবরের শেষের দিকে আজ সকালে উঠেই অঝোরধারায় বৄষ্টি দেখে মেজাজটা খিঁচড়েই গেলো ।দুর্গাপুরে আজ একটা ক্লায়েন্ট মিট রেখেছিলো দু’দিন আগে থেকেই, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিতেশের বিয়েতে বরযাত্রি যেতে হবে বিকেলে জেনেও।সে তো কাছাকাছি বলেই কাজটা রেখেছিল ।ভেবেছিলো বাঁকুড়া থেকে দুর্গাপুর যাওয়া আসা আর কাজ সব মিলায়ে কত সময়ই বা লাগবে ,ও হয়ে যাবে ।

মানুষ ভাবে এক আর হয় আর এক ,সকাল থেকেই বৄষ্টি । নাঃ দশটার বাসটা না ধরতে পারলে সব গোলমাল হয়ে যাবে ।এখন সাড়ে ন’টা ,কাজেই কোট টাই ঢুকলো ব্রিফকেসে ,পা ঢুকলো ফরমাল জুতোর বদলে বর্ষার জুতোয় ।হাতে ছাতা নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে লিফট্ বেয়ে পাঁচতলার ফ্ল্যাট থেকে নিচে নেমে এসে ছাতা খুলতে গিয়ে চিরন্তন অবাক হয়ে যায় ,কোথায় বৄষ্টি ?চারাদিকে ঝকঝকে রোদ্দুর ,বৄষ্টির নামগন্ধও নেই !

ছাতা ভাঁজ করতে করতে চিরন্তন ভাবে ,আশ্চর্য ,মানুযের মনের মতো আকাশের মেঘও কখন যে নিজেকে ঘন ঘন পাল্টাতে শিখে গেল কে জানে !!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।