T3 || ১লা বৈশাখ || বিশেষ সংখ্যায় দিশারী মুখোপাধ্যায়

হে শূন্য , হে নিষাদ

১)
দুই অস্তিত্বের জরাসন্ধ আমি ,
দুভাগে বিভক্ত হয়েছি ফের , – বস্তু ও অবস্তু ।
চোখের অসীম তৃষ্ণা নিয়ে
দূরবীক্ষণের ধ্যানে তাকিয়ে রয়েছি
দুইটি আসনে ,
একদিকে হাবল
অন্যদিকে জেমস ওয়েব।

বিলিয়ন বিলিয়ন দূরবর্তী এক পড়শি-গ্যালাক্সি থেকে
চিঠি পাঠিয়েছে কেউ ,
ভায়া মহাশূন্যের পোস্টঅফিস।
কখনো কণা ,কখনো তরঙ্গ রুপী সেই চিঠি
বাঁচিয়ে তোলার জন্য
হত্যা করতে আসছে আমাকে ।

সে চিঠির লিপি কীভাবে উদ্ধার করব আমি !

২)
পরিণতিটা কেমন হবে তাই ভাবছি ,
আমার পরিণতি ।

কিছু কিছু মানুষ কিছু কিছু মানুষকে ঘৃণা করে ,
তুমিও আমাকে ।
ধরা যাক নূরজাহান জাহাঙ্গীরকে এক একক পরিমাণ
ঘৃণা করলেন এবং ফল স্বরূপ
জাহাঙ্গীর তাঁর থেকে ছিটকে পড়লেন এক যোজন দূরে।
ঘৃণার পরিমাণ দুই একক হলে
ছিটকে পড়ার দূরত্বও হবে দুই যোজন।
এভাবে দূরত্ব বাড়তে থাকবে
ঘৃণা বাড়ার সঙ্গে সমানুপাতিক হারে ।

কিন্তু পৃথিবীর প্রতিটি কণা বৃত্তাকার ,
গ্রহ উপগ্রহের কক্ষপথও বৃত্তাকার বা উপবৃত্তাকার ,
ইউনিভার্সের সব জ্যামিতিই যেমন।

ঘৃণার পরিমাণ পঞ্চাশ এককের থেকেও বাড়লে
ফলাফল কী হবে !

৩)
একটি নিমের গাছে সারারাত রাত লেগে থাকে
আমি জানি ,
যখন সে সকালের কাছে তাকে রেখে
সে-রাতের মতো চলে যেতে চায় –
লোকে তাকে ভোর বলে ,
আমি জানি ।

এ জীবনে ভোরে উঠে কবিতা লিখিনি কখনও ,
আজও লিখব না । শুধু
অ্যান্ড্রোমিডার কথা ভাবছি এখন।
মিল্কিওয়ের দিকে যাত্রা তার শুরু হয়ে গেছে ,
অনতিবিলম্বে, মাত্র পঁচিশ লক্ষ বছর পর
পরস্পরকে কাছে পাবে তারা ,
দুজন দুজনকে খুব ভালোবাসা দেবে ।

হুস করে সে মাহেন্দ্রক্ষণ এসে পড়বে
কে জানে কখন ! তাই
অপেক্ষায় বসে আছি ভোররাতে ,নিম গাছের নিচে ।

গ্যালাক্সি-প্রেমের কথা , মিলনের কথা
লিখব কি ?

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!