T3 || ১লা বৈশাখ || বিশেষ সংখ্যায় দিলীপ কুমার ঘোষ

পজিটিভ

করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসাতে একরাশ দুশ্চিন্তা পেয়ে বসল রিমিকে। শুধু তার রিপোর্ট পজিটিভ আসলে এতটা ভাবনা ছিল না। প্রীতমের রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। তবে জোর বাঁচোয়া! ঋতমের রিপোর্ট নেগেটিভ। কিন্তু হলে কী হবে, পাঁচ বছরের ঋতমকে নিয়েই ফাঁপরে পড়েছে রিমি।
ছেলেটা জন্মের পর থেকে একটা দিন তাকে ছেড়ে থাকেনি। এখন সপ্তাহ দুয়েক, নিদেনপক্ষে আট-দশদিন সেই ছেলে তাকে ছেড়ে থাকবে কী করে! ইদানিং অবশ্য বিশেষ কারণে মায়ের ওপর রাগ করে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কয়েকরাত কাটিয়েছে ঋতম। কিন্তু প্রীতমকে জড়ানোর সুযোগও তো আর বেচারা পাবে না!
পনেরো দিন পরে করানো রিমি-প্রীতমের করোনা টেস্টের দ্বিতীয় রিপোর্ট নেগেটিভ এল। রাতে তাদের কাছে শোওয়ানোর জন্য ঋতমকে আনতে গিয়ে প্রীতম মায়ের ঘরে ঢুকে শুনতে পেল মা গল্প বলছে; কিন্তু নাতি ঠাম্মার মুখে গল্প শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে মা টেরই পায়নি। প্রীতমের চকিতে মনে পড়ল শৈশবে কত রাত মায়ের মুখে এই গল্প শুনে মা’কে জড়িয়ে ধরে সে ঘুমিয়ে গিয়েছে!
প্রীতম ঋতমকে নিয়ে ফিরছে না দেখে রিমি গিয়ে হাজির হল শাশুড়ি-মা’র ঘরে। প্রীতমকে চুপ করে দাঁড়িয়ে গল্প শুনতে দেখে সেও দাঁড়িয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর রিমি প্রীতমকে হাত ধরে শোওয়ার ঘরে নিয়ে এসে বলল, “ঋতম আর আমার ওপর রাগ করবে না… ঘুমপাড়ানি-গল্প বলতে না-পারার দুশ্চিন্তা যে করোনাকাল এসে এভাবে সহজে দূর করে দেবে, তা আমি ভাবতেই পারিনি!”

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!