সুদর্শন ভাবতে পারছে না একটা জলজ্যান্ত ছেলে এভাবে মারা যেতে পারে।বিএম ক্লাব মেম্বার ছিল।ছ ফুট হাইট ছিল। ফর্সা।নাম রতন পালিত। এজেন্সিতে তরতর করে সাফল্য পেয়ে গেল। অফিস করল।বাইক কিনলো। ফ্ল্যাট কিনল। বিয়ে করল।একটা ছেলে হল।বৌটিও বেশ ভালো।দেখতে সুন্দরী। গতবার পিকনিকে এসেছিল।রতন বলেছিল -স্যার আমার বৌ ভালো গান গায়।
তাই !তাহলে একটা গান হয়ে যাক।
না স্যার আমি ভালো গান জানি না।
ঠিক আছে তুমি গাও না। আমরা বুঝবো তুমি কেমন খাও। আচ্ছা তোমার নামটা কি বলতো?
পিয়ালি।
বা! বেশ নাম তো।নাও এবার গাও।
আমি রবীন্দ্র সংগীত ছাড়া কিছু জানি না।
আমরা রবীন্দ্র সংগীত শুনবো।নাও শুরু করো।
পিয়ালি শুরু করল গান্
বেঁধেছ প্রেমের পাশে ওহে প্রেমময়
তো প্রেম লাগি দিবানিশি জাগি ব্যাকুল হৃদয়
তব প্রেমে কসুম হাসে তব প্রেমে চাঁদ বিকাশে
প্রেমহাসি তব ঊষা নব নব
প্রেমে- নিমগন নিখিল নীরব
তব প্রেম- তরে ফিরে হা হা করে উদাসী মলয়।।
আকুল পান মম ফিরিবে না সংসারে
ভুলেছে তোমারি রুপে নয়ন আমারি।
জলে স্থলে গগনতলে তব সুধাবানী সতত উথলে-
শুনিয়া পরান শান্তি না মানে
ছুটে যেতে চায় অনন্তেরি পানে
আকুল হৃদয় খোঁজে বিশ্বময় ও প্রেম আলয়।।
গান শুনতে শুনতে সুদর্শন একটা অন্য জগতে চলে গিয়েছিল।রতন ডাক দিল- স্যার কেমন লাগলো গান?
সুদর্শনের মনে ভেসে উঠেছে মধুমিতার মুখ।তার কলেজ জীবনের প্রেমিক। তারা একবার গিয়েছিল আউটটামঘাট। নৌকায় চড়ে ছিল।নৌকা দাঁড়িয়ে ছিল মাঝ নদীতে।তখন মুধুমিতা এই গানটা ধরেছিল।দারুন গলা।কি যে ভালো লেগেছিল। মধুমিতা এখন কেমন আছে?এখনো কি গান করে?
স্যার কেমন গাইলো আমার বৌয়ের গান?
সচেতন হলো সুদর্শন।বলল-দারুন গলা।তুমি গান শোনা তো রতন?
সময় হয় না স্যার।
তাই বললে তো হবে না।ওকে আরো তামিল দাও।খাসা গলা।মনটা ভরে গেল আমার।শোন রোজ রাতে শোবার আগে গান শুনবে।দেখবে মন আনন্দে ভরে যবে। সারাদিনের টেনশন দূর হবে।ভালো ঘুম হবে।বুঝেছো?
রতন ঘাড় নাড়ে।