T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || বিশেষ সংখ্যায় বন্যা ব্যানার্জী

চিহ্ন

” দাদা নেই রে।হঠাৎ স্ট্রোক। কিচ্ছু করার সময় দিল না।” কান্নায় ভেঙ্গে পড়া পুলোমা সর কথা বলতে পারেনি।ফোন টা কেটে দিয়েছিল।আর এ প্রান্তে মাহিরা স্তব্ধ হয়ে যায় কিছুক্ষণ।তারপর দ্রুত গুছিয়ে নিতে থাকে জিনিসপত্র। হাসব্যান্ড নিহাল কে ফোন করে যে করেই হোক ফ্লাইটের একটা টিকিট জোগাড় করতে বলে ।সম্ভব হলে আজই।কিম্বা কাল সকালে।কলকাতায় ফিরতে চায় বিশেষ প্রয়োজনে।নিহাল বাধ্য হাসব্যান্ড। আজ পর্যন্ত মাহিরার কথাই সংসারে শেষ কথা।
টিকিট পেল তবে পরের দিন ভোরের। ।একমাত্র মেয়ে বিয়াস। ডাক্তারী পড়ছে লন্ডনেই।কাউকে নিয়ে যাবার দরকার নেই।কাজ মিটে গেলেই তো ফিরবে মাহিরা।শুধু ফোন করে মেয়ে কে জানিয়ে দিল সে কলকাতায় যাচ্ছে।
ফ্লাইট ঠিক টাইমে ল্যান্ড করেছিলো।পুলোমা ও ট্যাক্সি নিয়ে ঠিক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল।
বাইশ টা বছর চলে গেছে। বাবা,মা মারা যাবার পর কলেজের বন্ধু পুলোমা ই ছিল তার কলকাতার সাথে যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন।
পুলোমা র দাদা বিলাসের সঙ্গে প্রেমের খবর টা দুই বাড়িতে জানাজানি হতে ই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। যদিও ওরা দুজনেই যথেষ্ট যোগ্যতা রাখে বিয়ের।তবু মাহিরা মুসলমান।অশান্তি চরমে উঠতে ওরা লুকিয়ে বিয়ে করে।বিতান সিঁদুর পরিয়েই বোন পুলোমা কে সাক্ষী রেখে বিয়ে করে।রেজেস্ট্রী করার ও মনস্থ হয়।তবে বিতানের পিএইচডি কমপ্লিটের পর।
বাড়িতে মাহিরার বিয়ের জন্য চাপ আসতে লাগল।শরীরে সন্তানের অস্তিত্ব টের পেয়েছে ততদিনে মাহিরা।
নির্বানের সাথে বিয়ে দিয়ে তড়িঘড়ি লন্ডন পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মাহিরার বাবা।…..
ছবির মত ভেসে উঠছে আজ সব।
গঙ্গার ঘাটে এসে পুলোমা হাত ধরলো মাহিরার।চোখের জল গিলে ফেলা মাহিরার কাছে আজ তেমন শক্ত নয়।
জলে নেমে সিঁথির একপাশে রোজ ছোঁয়ানো সিঁদুরের চিহ্ন টি ধূয়ে ফেলে সে।বিতানের চিহ্ন তো সে যত্নে রক্ষা করেছে,করবে ও।ওয়াপে
একটা মিষ্টি আওয়াজ আসে।বিয়াসের মেসেজ।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!