তার বন্ধু মিমি বলেছিল. কি করে তুললি মালটা? এতো হ্যান্ডসাম। তাই বুঝি এতো দিন দেখাস নি?
‘তোর সময় কোথায়? সারা দিন তো ব্যাংকে পড়ে থাকিস। মুখের ভাষাটা ঠিক কর।তুই এখন এস বি আই ব্যাংকের প্রবেশনারি অফিসার।
‘ দেখ তিয়াস ছেলেরা তো আমাদের মাল বলে আমরা কেন বলতে পারবো না?
‘তাহলে বঙ্কিম বাবুর সেই কথাটা বলতে হয়
তুমি অধম বলিয়া আমি উওম হইবো না কেন?
‘ দেখ ওসব কথা ছাড়। তুই সর আমি বসবো বিয়ের পড়িতে। তোর কোন আপত্তি নেই তো?
‘ না। যে বিয়ে করবে তার যদি আপত্তি থাকে?
‘শোন তোর থেকে আমি অনেক সুন্দর। তার ওপর ব্যাংকে চাকরি করি। আপত্তি কিরে? লুফে নেবে।
‘ তুই মনে হয় ভুলে গেছিস আমি স্কুলে প্যারাটিচার ছিলাম। বিয়ের জন্য চাকরি ছাড়লাম।
‘ হ্যাঁ ।তাই তো।শোন আমাকে কাল ফিরে যেতে হবে বহরমপুর।সকালে হাজার দুয়ারি ধরবো। থাকতে পারছি না। রাত দুটো সময় বিয়ের লগ্ন। পারিস বটে তোরা। আমি হলে রাজি হতাম না।
যা হোক। ফুল শষ্যা কেমন কাটলো একেবারে ভিডিও করে পাঠাবে বলছি। মনে থাকে যেন।
‘ অজয়ের খবর কি?
‘তিনি এখনই বিয়ে করতে চাইছে।
‘ চাইবেই তো। পাঁচ বছর অপেক্ষা করছে। আর কতোদিন করবে?
‘দেখ সবে চাকরি পেয়েছি। সংগে সংগে বিয়ে করলে বাবা মা কি ভাববে না? আমি তাদের এক মাএ মেয়ে। ও বলে, ওতো বাবা মায়ের এক ছেলে।
ও তো বিয়ে করে বাবা মার কাছে থাকবে। আর আমাকে বাবা মা ছেড়ে চলে আসতে হবে। কেন এই নিয়ম? কতোযুগ তো চললো? সব কিছু তো পাল্টাছে। এইটা কেন পাল্টাবে না?
‘কাথাটায় তোর যুক্তি আছে। শোন চাকরি ছেড়ে একটা দল গঠন কর। এই নিয়ে আন্দোলন শুরু কর।
‘ তুই একটু বোঝা না ওকে?
‘কেন বোঝাবো বল। ও তো কোন অন্যায় বলছে না।’
‘এই জন্য বলে মেয়েরা মেয়েদের শত্রু ।
যাক ভিডিও করে পাঠাবি কিন্তু।
সত্যি গৌরাঙ্গ তাকে সুখে রেখেছে।
একটু আগে ওরা ইনস পেকশন করে গেছে।
গৌরাঙ্গর মনে হচ্ছে বার বার বাবার কথা। আজ বাবা থাকলে কতো খুশি হতেন। তিনি একটা চাযের দোকান চালিয়ে সংসার চালাতেন। শুধু নিজের নয়। ছোট ভাইয়ের সংসার টেনেছেন। আমাকে 5000 টাকা দিয়ে বলেছিল, তুমি দেখ এই টাকা দিয়ে কিছু করতে পারো কিনা। এর চেয়ে বেশি ক্ষমতা আমার নেই।
তখন সে অনিলদার কারখানায় কাজ করে। আর নাইট কলেজ করে। সারা দিন পরিশ্রম করে রাতে চোখে ঘুম নেমে আসতো। না, ঘুমালে চলবে না। পাশ গ্র্যাজুয়েট হতে হবেই। লড়াই শুরু। এদিকে শ্রমিক অন্য দিকে ছাএ। এই লড়াই দেখে, আমার কাজ শেখার আগ্রহ দেখে বলেছিলেন অনিলদা, ‘তুই একদিন বড় বিজনেসম্যান হবি ।
আজ হয়েছি। কিন্তু অনিলদার সাহায্য না পেলে এই জায়গায় আসতে পারতাম না। একদিন সে বললো,’ অনিলদা একটা কথা বলবো?
‘বল কি বলবি?
‘ আমি নিজে এই বিজনেসটা দিতে চাই।
‘ভালো কথা তো। কেন সারা জীবন আমার কাছে পড়ে থাকবি? কিন্তু ক্যাপিটাল পাবি কোথায়?
‘ব্যাংক লোন নেবো। বাবা পাঁচ হাজার দিয়েছে।
‘কিন্তু ব্যাংক গ্যারান্টার চাইছে। সেটা এখন সম্যসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
‘ এটা একটা সমস্যা হলো? আমি আছি না।
কারখানা শুরু করলো পাঁচ খানা মেশিন দিয়ে। কিন্তু অডার কে দেবে? বড় বাজার আমার ওপর বিশ্বাস করতে পারছে না। আর মাএ পাঁচটা মেশিন। কতো টুকু প্রোডাকশন সে দিতে পারবে। তাহলে এতোটা পথ এসে ফিরে যেতে হবে?
অনিলদা দায়িত্ব নিয়ে বড়বাজারকে বলল. কোন অসুবিধা নেই। যতো মাল পারেন, দিন। আমি তো আছি। মালে কোন ডিসপুট হবে না।
অনিলদার সেই সাহায্য পেয়েছিল বলে আজ সেই কারখানায় 50টা মেশিন এক সংগে রান করে। এই তো যুদ্ধ ।কিন্তু বড় বাজার সব সময় অডার দিতে পারে না। চলবে কি করে? বসিয়ে বসিয়ে লেবারদের
মাইনে দেওয়া যাবে না। আর দেবেই বা কোথা থেকে? ওরা আসে মুর্শিদাবাদ থেকে। সব মহামাডান ছেলে। একবার দেশে গেলে আর আসবে না। না হলে অন্য কোন কোম্পানিতে চলে যাবে। তখন অডার পেলেও লেবারের সমস্যা হবে। তাদের পাড়ার হাকব্যাগ কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজারের সংগে দেখা করলো। কিন্তু কেউ ভরসা পারছে না। একটা 25 বছরের যুবক। ভরসা সেই অনিলদা। তিনি গিয়ে দাঁড়ালেন। লোকাল পার্টির একজন মেম্বার যে।
আজ রেনকোরট, লাইফ জ্যাকেট সব কিছু প্রোডাকশন করে। এখন আবার নেটিং ব্যবসায় নেমে পড়ল। কাজও পাচ্ছে। যারা আজ আসলেন তারা খুব প্রসংশা করলেন। মনে হচ্ছে তিয়াসের স্বপ্ন পূর্ন হতে চলেছে। তারা হাজার হ্জার ফুট উঁচু দিয়ে পোঁছাবে স্বর্গের দেশ সুইজার ল্যান্ড।