কবিতা গুচ্ছ তে দেবদাস কুণ্ডু


রক্তাক্ত পাখি

ভিতরে নদী, উপরে সেতু
আর্ত চিৎকারের মতো ছুটে যায় মেল ট্রেন
কেঁপে ওঠে আমার রক্ত মাংস হাড়
জানালায় শিশির ভেজা মুখ
তারপর দূরের গাছপালা
অদৃশ্য হরিন চোখ।

আমারা তো হেঁটেছি ঘাসের ওপর
দশ আঙুলের আগুন তো ছুঁয়ে ছিল শরীর
আমরা তো ডুবে যাওয়া আলোয়
করেছি প্রলম্বিত আলিঙ্গন
পাখির ডানার হলুদ আলো মেখে
করেছি চুম্বনের রেখাপাত
বহ্নি উৎসবের পর, শিথীল কুন্তল
স্থান চূত কমলা টিপ, সিক্ত ঠোঁট
আকন্ঠ প্রেমে ডুবে থাকা গলা
বলেছিল, আসবো, আবার আসবো।

তারপর শূন্য মাঠ, একাকী বৃক্ষ,
নিষ্ঠুর রোদের মতো জলাশয়
ভূমিতে শুয়ে রক্তাক্ত পাখি।

মহাপৃথিবী

জীবন একসময় এসে দাঁড়ায়
শ্যাওলা মাখা পুরনো চৌকাঠে
পিছনে পড়ে থাকে অমলিন মাঠ
ডানা ভাঙা খেলনা গাড়ি
কাঁটা ঘুড়ির হলুদ সুতো
নিস্পাপ চুম্বন
খুনসুটির অলিখিত দিনলিপি
ঝড়ে পড়া কদম ফুলের কান্না
ঘাসের শীত শীত অনুভূতি
নক্ষত্রমালার প্রতীক্ষা
এলোচুলে সীমাহীন জ্যোৎস্না
জীবন পা বাড়ায় অন্ধকার ঘরের দিকে
অনেক কিছু হারানো, না-পাওয়া হাত
ঝুলতে থাকে মহাশূন্যে
হলুদ বিকেলের আলোয়
জেগে থাকে মরা দুটো চোখ।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!