Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কর্ণফুলীর গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মনিরুল ইসলাম (পর্ব - ৫)

maro news
কর্ণফুলীর গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মনিরুল ইসলাম (পর্ব - ৫)

রাজলক্ষী

কমলা ২য় পর্ব

স্কুলের পশ্চিম দিকে একটা বড় পুকুর। পুকুরের পাড়ে বড় বড় আম গাছ। কমলা সেই আম গাছের উঁচু শিকড়টার উপর গিয়ে বসলো। কলিমুদ্দিন সাইকেলটা স্ট্যান্ড দিয়ে তালা মারলো। কমলা যেখানে বসে আছে কলিমুদ্দিন সেই সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। আপলোক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কমলার মুখের দিকে। আল্লাহ এত রূপ দিয়েছে যেকোন ছেলে একবার তাকালে চোখ ফেরাতে পারবে না।দেখতে দেখতে কখন যে আধঘন্টা পার হয়ে গেল তা কলিমুদ্দিন বুঝতেও পারল না। অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের উঠতে দেখে কলিমুদ্দিন ঘড়িটার দিকে তাকালো। দেখল কুড়ি মিনিট বাকি আছে বারোটা বাজতে। - কমলা চলো গেটের দিকে এগিয়ে যায়। -সময় হয়ে গেল? -হ্যাঁ। কুড়ি মিনিট বাকি আছে। -চলো। কমলা বই ব্যাগ গুছিয়ে উঠে দাঁড়ালো। তারপর গেটের দিকে এগিয়ে চলল। কলিমুদ্দিন ও পিছন পিছন হাটতে শুরু করল। তারা গেটের কাছে পৌঁছে গেল। শোনো এডমিট কার্ড দেখে ঢুকতে দিচ্ছে। আমাকে মনে হয় যেতে দেবে না। তোমার এডমিট কার্ডটা দাও। আমি দেখি কোন হলে সিট পড়েছে। -এডমিট কার্ড দিতে দিতে কমলা বললো আমার খুব ভয় করছে। -আরে পাগল ভয় কিসের? কোন সমস্যা হবে না। - কই দেখি দেখি, এইতো দু তলার সাত নম্বর রুমে। অ্যাডমিট টা নাও। ঘর যদি না পাও তাহলে কাউকে জিজ্ঞাসা করবে সাতনম্বর রুম টা কোথায়। -আচ্ছা। তুমি চলনা। -আরে আমাকে ঢুকতে দেবেনা। তুমি যাও। - আচ্ছা ঠিক আছে। - শোনো। প্রশ্নটা ভালো করে দেখে নেবে। বুঝতে অসুবিধা হলে স্যারকে জিজ্ঞেস করবে। -ঠিক আছে। কমলা স্কুলের পাঁচিলের মধ্যে চলে গেল। কলিমুদ্দিন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। কমলার ঘরপেতে অসুবিধা হয়নি। তাই নিজের সিটে ব্যাগ রেখে বারান্দা এল। কলিমুদ্দিন কে হাত নেড়ে বুঝিয়ে দিল কোন সমস্যা নেই। কলিমুদ্দিন হাক দিয়ে বললো তুমি যাও সিটে বসো। কমলা নিজের সিটে গিয়ে বসে পড়ল। কলিমুদ্দিন যেখানে সাইকেল রেখেছিল সেই আম গাছের গোড়ায় গিয়ে বসে পড়ল। - কলিমুদ্দিন কমলাকে ভালো লাগদে লাগদে কখন যেন ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু এই সহজ-সরল কথাটা সে কোনমতে বলতে পারছেনা। যদি মুখের উপর না বলে দেয়, যদি বাড়িতে জানিয়ে দেয়, যদি আমার বাড়িতে জেনে যায়- এইসব নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। -কখন যেন তিন ঘণ্টা পার হয়ে গেল। সবাই পরীক্ষা হল থেকে বার হচ্ছে। কলিমুদ্দিন গেটের সামনে চলে এলো। কিন্তু কমলাকে দেখতে পাচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ পরে কমলা গেটের বাইরে এল। এতক্ষণে কলিমুদ্দিন অস্থির হয়ে উঠেছিল। কমলাকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলো এত দেরি কেন? -আমি অনেক আগে বার হয়েছি। -কোথায় ছিলে? -এখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। - কেন? - তুমি আমাকে খোঁজো কিনা দেখছিলাম। - তুমি কি পাগল? -কেন? আমাকে পাগল বলে মনে হচ্ছে? -পাকামো রাখ। পরীক্ষা কেমন হল বল। - ভালো। -ভালো মানে? - খুব ভালো। তুমি এসেছ ভালো হবে না মানে। -আরে না তা নয়। বল কি খাবে? - কিছুনা। মা পয়সা দিয়েছে, তোমাকে খাওয়াতে বলেছিল। - তাই নাকি? -হ্যাঁ। - ঠিক আছে পরের দিন খাব। আজ আমি তোমাকে মসলা মুড়ি খাওয়াবো চলো। -চলো।পরদিন তুমি আসবে তো?
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register