Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে রবীন বসু (গুচ্ছ কবিতা)

maro news
কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে রবীন বসু (গুচ্ছ কবিতা)

১| জানুয়ারি ২০২১

বিষণ্ণ শীতে উড়ছে জানুয়ারি ২০২১ সামনেই নির্বাচন গ্রাম শহর পাহাড় টগবগ ফুটছে রাজনৈতিক ভাষণ মিথ্যাচারে ভরে যাচ্ছে বাতাস গুপ্তখুন আর অভিষন্ধি পরস্পর তাকাতে তাকাতে যাচ্ছে আলপথে, ফুটপাতে অন্নহীন পেট নিরুপায় নির্বাক দৃষ্টি নিয়ে স্থির; ফসলের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে কারা? পায়ের নিচের মাটি তাও নিজস্ব নয় অন্ধকার ভারতবর্ষ ধর্মের শাসানি শোনে নিম্নকণ্ঠ বিষাদ কাকে যে ছুঁয়ে দেয় সেকি কর্মহীন শ্রমিক, না বেকার যুবক নাকি দেশময় উজাড় হয়ে যাওয়া সবুজ বৃক্ষ নদী আর অসহায় জলস্রোত… গভীর দুঃখ নিয়ে জেগে উঠছে দিন প্রবাহিত কষ্টের এই যে তীব্র জ্বলন মানুষের হাত ধরে উঠে আসুক সুদিন। ••

২| নির্লজ্জতা

অন্ধকার ভেদ করছে তীব্র তির সে আলো না শব্দের শাসানি মোহময় দূরত্বে অলৌকিক ম্যাজিক ইন্দ্রধনু বেজে ওঠে চরাচর কাঁপে মহাশূন্যে লাট খায় যাবতীয় শিল্প অনুরাগসদৃশ আবর্তন মেখে নেয় নক্ষত্রের রাত, এরপর গভীর কম্পন নিয়ে জেগে উঠবে দিন।
আলোর মালা গলায় পৃথিবী এইবার নৃত্য শুরু করবে ; বেহদ্দ বাজার থেকে যে গন্ধ উঠে আসে অহরহ, তাকেও সহ্যের আয়ত্তে আনে মধ্যাহ্নদিন অপরাহ্ণ তার পাশে নির্লজ্জ শুয়ে পড়ে।

৩| কবির মৃতদেহ

শীত এসে কাকে যেন নষ্ট করে দিল জীর্ণপাতা, মরাঘাস, ইঁদুরের সপ্রতিভ চলা স্ত আলের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন তিনি পাঁজরের ক্ষত লেপ্টে আছে পরিত্যক্ত খড়ে ; হয়তো বিবর্ণ হলুদ রঙ ওই যে দূরে শুয়ে আছে মরা শালিক তিনি ছুঁয়ে দিলেন, তুলে নিলেন হাতে হয়তো নিজেরই মৃতদেহ !
সংক্রমণ ভারাক্রান্ত এই যে প্রাচীন সময় কবির মৃতদেহ বহন করছে অবলীলায় !

৪| মায়াময় দিনযাপন

এই এল শীত মাঘ, এই বেলা অবশেষ উঠোনে উড়ছে ধুলো, পড়ে আছে সব খড় জীর্ণ পাতার স্তূপের থেকে উঠে আসে ধোঁয়া সন্ধ্যা নামে ধীর পায়ে ম্যাজিক আলোর দেখা।
এই শীত নদীজল, ছুঁয়েছে পায়ের পাতা আলপনা আঁকা জলের বিস্তারে মুখ ভাসছে স্পর্শ যেন লেগে আছে কোথাও কোন অতলে সেই মাধুর্যে লাবণ্যে ভরে ওঠে প্রাণ ঔদার্যে।
কোন স্মৃতি খুঁজে মরে আর একটা স্মৃতির মেহ্ফিল, দূরত্বের এই ব্যবধান মেপে নেয় নৈকট্যের আড়বাঁশি, সম্পর্কের হাত ধরে জলের কম্পন জাগে মিহিসুতোয় আলতো।
এই শীত মাঘ, এই কুয়াশা করুণ গ্রাম মায়াময় আমাদের দিনযাপনের নাম। ••

৫| আমার শৈশব

আজ নয়, প্রতি ভোরে আমি শুধু তোমাকেই দেখি। সবুজ সকাল মেখে কুয়াশা আলপথ ধরে হাঁটো। পায়ে নিয়ে মাটিচিহ্ন, গায়ে ছেঁড়া জামা শতকুটি আমিও তোমার পিছে হেঁটে যাই পরা ধুতি খাটো।
আজ নয়, প্রতি ভোরে আমার শৈশব দেখি আমি। বয়সের ভারে ক্লান্ত, দাঁত নেই, ফাটা শুখা চামড়া আমাকে চেনেই না সে, অল্প হেঁটে হাঁপাই বা ঘামি বিরক্তি দেখিয়ে বলে, যা ভাগ তো দেখি বুড়োহাবড়া।
আজ নয়, প্রতি ভোরে তার সঙ্গে হয় ওঠাবসা। কানে মুখ এনে বলে, আঠারো ভাটির দেশ, যাবে? যাবে নাকি একটিবার, ধরবে হাল, আছে পড়শীরা! আমার শৈশব ডাকে, জন্মস্থান, প্রাণ কিছু পাবে।
কী পাব তা' জানা নেই, হারাব কতটা, তাও জানি তবু ভোর ডাকা দেয়, শৈশবও করে কানাকানি।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register