Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাতে পাঁচে কবিতায় শুভ্রা মুখার্জি

maro news
সাতে পাঁচে কবিতায় শুভ্রা মুখার্জি

কুমারী মাতা কুন্তীর অন্তর্দ্বন্দ্ব

হিন্দুদের প্রাতঃস্মরণীয় পঞ্চনারীর অন্যতমা, তেজস্বিনী ক্ষত্রিয় নারী আমি। শূররাজ কন্যা আমি পৃথা। তবুও পিতা-মাতার স্নেহ বঞ্চিত পালিতা কন্যা হয়েই পরিচিত আমি কুন্তী। জন্ম লগ্ন থেকে ই অতৃপ্তির তুষানলে, দগ্ধ হতে হতে আমি নিঃশেষিত হয়ে গেছি। পালক পিতার অনুরোধে আমার নিঃসঙ্গ জীবন, ঋষি সেবায় উৎসর্গীকৃত ছিল। সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে হঠাৎক্রোধী বিচিত্রবুদ্ধি মুনিপ্রবর দুর্বাশা আদ্ভূত বর দেন, যার মাধ্যমে যে কোন দেবতাকে আহ্বান করলে তিনি আর্বিভূত হবেন। নবযৌবনপ্রাপ্ত অনভিজ্ঞাকুমারী হিসাবে আমি, কৌতুহলবশত সূর্যদেবতাকে আহ্বান করি, সূর্য দেবতার ঔরষেই কর্নের জন্ম। সমাজ ও লোকলজ্জার ভয়ে শিশু কর্ণ কে জলে ভাসিয়ে দিতে হল । কান্নায় আমার বুক ভেঙে এল, নির্জন নদী তীরে দাঁড়িয়ে অসহায় এক নারী হিসাব আমি আকাশ, বাতাসের, উদ্দেশ্যে নিজের অজান্তেই বলে উঠেছিলাম,যে অজানা জলপথে তোমাকে ঠেলে দিলাম, সেখানে কোন জলচর প্রাণী যেন তোমার ক্ষতি না করে, তোমার যাত্রা পথ শুভ হোক। সমস্ত দেবতার আশীর্বাদ প্রার্থনা করেও অন্তর বেদনা থেকে কখনো মুক্ত হতে পারি নি। সূর্যদেবের আশীর্বাদে অমৃতময় বর্ম আর কুন্ডল নিয়ে ই কর্ণের জন্ম হয়। পরান-পুতলির পেটিকাটি ধরে বলেই চলেছি বিদেশ-বিভুঁইয়ে যেখানেই বেঁচে থাকো তুমি, তোমার এই সহজাত বর্ম দেখে যেন তোমায় চিনতে পারি। যেই মা তোমাকে পুত্র স্নেহে কোলে তুলে নেবে ধন্য সেই মা। হাজার কান্নাকাটির পর নদীর জলে নিজের নাড়ী ছেঁড়া ধন কে ভাসিয়ে দিয়েও, নিজের মনোকষ্ট প্রিয় জনের কাছে বলতে পারি নি। কঠিন বাস্তবের টানে ঘরে ফিরতে হয়েছে। মনে রয়ে গেল শোকার্ত জননীর কামনা, আবার কবে দেখতে পাব আমার প্রথম সন্তান কে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register