Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় দিলীপ চক্রবর্তী

maro news
কবিতায় দিলীপ চক্রবর্তী

মাষ্টারদা সূর্যসেন

স্যানবাড়ির পুলাডার কথা কি মনে পড়ে? খ্যাঙরাপানা পুলাডার কি ত্যাজ, বাপরে বাপ!! হেইডা আর ক‌ওনের কথা না। চাঁটগাইয়ার বেবাক মাইনষের জানা পুলাডা মাষ্টর হইছিল..., “সুরজ মাষ্টর”! সনডা’র কথা আর ঠিকঠাক মনে পড়ে না, বুড়া হয়ছি তো নাহি? পাঁচকুড়ি বয়সডা কি কম হইলো রে ,...হালার পো হালা। । চক্ষে দেহি না আর কিচ্ছুই, হুনতে যদিও পাই এহনো কিসু কিসু..... খাড়াইয়া থাক দেহি , দুই ঢুক পানি গলায় ঢাইল্যা লই...... ক্যানছারের কামড় বইল্যা কথা ..... হ্যা, যা ক‌ইতেছিলাম—- ,সনের কথা, বততিশ-কি-তেত্তিশ কিছু তো একটা হ‌ইব‌‌ই। বিটিশ কুত্তাগো জুতার শব্দে ধুকপুক করতাছিল হগ্গলের পরানডা দিনে রাইতে; কি হয়, কি হয় ? আজ এ্যাই পুলাডারে ধরে তো, কাল ওই পুলাডারে , কুমোরে রশি বাইন্ধা চাবুকের বাড়ি মাইরতে মাইরতে তুলে ভ্যানে । সদরে চালান হইয়া যায়, ফিরে না আর কুনদিন। বাপ মায়ের বুকডা ফাইট্যা চৌচির হইয়া যায়,‌ চক্ষের জল চক্ষেই হুকায়, তবুও মুহে কতা সড়ে না। ‘তা সেই শুনসান রাইতে কারো চোহে ঘুম নাই ! পুলিশ চৌকি ভাইঙ্গা লুঠ ক‌ইরা লইছে মাষ্টরের দলের পুলাপানগুলা। " বাহ্ : করছে—বেশ করছে”!! গোরা সাব খেদাইনের কথা, দ্যাশ সাধিনের কথা তহন হগ্গল পুলাপানের চোহেমুহে।। একরাইতে ধরা পইড়া গেল মাষ্টর, ওর সাথে আরো কয়ডা, বাকি গুলান নদী হাঁতরাইয়া পগাড় পার। একদিন হুনি মাষ্টররে চালান দিছে চাঁইটগা’র সেনট্যাল জ্যালে। কে যেন একদিন আইস্যা কইলো.... বিটিশ কুত্তার বাচ্চা কুত্তাগুলান মাষ্টরের হাড়গুড়সব লাডি মারি মাইরা ভাইঙ্গা দিছে, তাও মাষ্টর কয় নাই কিসু,, কয় নাই দলে ছিল কেডা কেডা।। বাপরে সে কি ত্যাজ পুলাডার। চাঁইটগা’র পুলা বইল্যা কথা। এ কথা তো ছোডো ছোডো পুলাপাইনও জানে, মাইয়া মানুষ মরিয়ম বিবিও জানে। একদিন দেহি..... দলে দলে মানষে দৌড়ায়, সদরে চিৎকারে চিৎকারে একখানই কথা.. “বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম ", বিটিশ তুমি ভারত ছাড়ো, ভারত ছাড়ো, ভারত ছাড়ো।” সেইরাতে খবর আসে-, মাষ্টরের একখান একখান কইরা সব কয়ডাই দাঁত ভাইঙ্গা দিছে শয়তানগুলান সেই মারন জ্যালে। আর, তার কয়দিন পরেই.... আগুন ধরাইয়া দিছে মাইনষে, গোরা সাবের কুঠিতে—!! “সাব্বাস.. !” যত্তগুলান ছিলো সব আগুনপুড়া.... ছাইয়ে ঢাইক্যা গেছিল... হুই নদী পাড়ের আকাশ। মাষ্টররে ওরা নাহি মাইরা ফ্যালাইছে! কেউ কয়, গলায় ফাঁস দিয়া মারছে, কেউ কয়, বন্দুকের নল মুহে ঢুহাইয়া গুলি ক‌ইরা মাইরা দিছে, কেউ আরও কয়, মাইরা ভাসাইয়া দিছে কোন সমুদ্দুরের জলে—! সাতচল্লিশে দ্যাশ সাধিন হ‌ইল বটে, কিন্তুক ভাগ হইয়া গেল মাষ্টরের চাঁইটগা’র মাটিহান.... খচখচ করে বুহের ভিতরে এই বুড়াডার আজও। আজকাল হুনতে পাই কলিকাতার বাঁশদরনীতে রেলের একডা নাহি নতুন ইষ্টিশন হইসে আমাগো সাধের সুরজের নামে ! “পাতাল থাইক্যা হুশহুশ কইরা আইয়া রেলের গাড়ি খাড়াইয়া পড়ে' এই ইষ্টিশনে... কত্তো মাইনষে আসে, যায়..... এই ইষ্টিশনের নাম .... আমাগো চাঁইটগার মাষ্টরের নামে, আমাগো ঘরের পুলাপান সুরজের নামে— আহ্, ..........“মাষ্টারদা সূর্যসেন” !!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register