Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

সম্পাদকীয়

maro news
সম্পাদকীয়

বর্তমানে আমরা যে হিন্দুস্থানী উচ্চাঙ্গ সংগীতের সাথে পরিচিত তার মূল স্রষ্টা হলেন তানসেন। তাঁরই সৃষ্টি যন্ত্রসংগীত, এক অনবদ্য অবদান। বহু প্রাচীনকালে সৃষ্টি হলেও এখনও পর্যন্ত এর প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। তাঁর কর্ম এবং বংশীয় উত্তরাধিকারীদের মাধ্যমে মূলত এই ধারাটি আজও টিকে রয়েছে। তিনি মুঘল বাদশাহ আকবরের রাজদরবারের নবরত্নের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। তাঁকে সংগীত সম্রাট নামেও ডাকা হয়। হিংসে তো চিরকালই রয়েছে। তো সেই সময়কার সঙ্গীতজ্ঞরা হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরতেন। তারা এক কূট কৌশলের আশ্রয় নেন। তারা বলেন, তানসেন যদি সত্যিকারের শিল্পী হয়ে থাকেন তবে যেন দীপক রাগ গেয়ে শোনান। দীপক রাগ এমনই এক শক্তিশালী রাগ যা গাইলে গান থেকে সৃষ্ট আগুনে তানসেনের শরীর ঝলসে যাবার সম্ভাবনা ছিল। তানসেন সেটা জানতেন। তাই তিনি প্রথমে রাজি হননি। তিনি জানতেন দীপক রাগ গাওয়ার পর যখন আগুন জ্বলবে তাকে নেভানোর জন্য প্রয়োজন হবে মেঘমল্লার রাগ। কিন্তু একার পক্ষে একসাথে দুটো রাগ গাওয়া সম্ভব নয়। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলা করার জন্য নিজের মেয়ে ও তাঁর গুরু কন্যাকে মেঘমল্লার গানে তালিম দিতে লাগলেন। রাজসভায় নির্দিষ্ট দিনে লোকে লোকারণ্য। মাঝখানে বসে আছেন স্বয়ং সম্রাট আকবর। যথা সময়ে বসলো গানের আসর। শত্রুপক্ষের ধারণা কিছুক্ষণের মধ্যে তানসেনের ভবলিলা সাঙ্গ হয়ে যাবে। তানসেন শুরু করলেন দীপক রাগ। শুরু হওয়ার পর একসময় সভাগৃহে সমস্ত মোমবাতিতে আগুন ধরে গেল। অবস্থা দেখে সবাই দিক-বিদিক ছুটতে লাগলেন। তানসেনের নিজের শরীরের আগুন জ্বলতে শুরু করল। ছুটলেন বাড়ির দিকে। সেখানে নিজের কন্যা ও গুরু কন্যা সমস্বরে মেঘমল্লার গাইছে। আকাশ থেকে নামতে শুরু করেছে বৃষ্টিধারা। সেই বৃষ্টির জল নিভিয়ে দিল তানসেনের শরীরের জ্বলন্ত আগুন। আষাড়ের দ্বিতীয় দিনে মেঘের দল যদি নিজেরাই মল্লার গায় ধরিত্রি পরম তৃপ্তিতে ভেসে যাবে সুরে সুর মিলিয়ে।

রীতা পাল

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register