Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

অণুগল্পে স্নেহদিয়া

maro news
অণুগল্পে স্নেহদিয়া

কোন এক দিনের কথা

ভারী মিষ্টি নাম বৃষ্টি ঘরে খাটের এককোনায় বসে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে বৃষ্টি। দেখে মনে হচ্ছে ভয় পেয়েছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কাঁপছে ও, কিছুক্ষণ আগে ওর বন্ধু আকাশ কে ফোন করে ছিল। আকাশ ফোন তুলতেই বৃষ্টির কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়। আকাশ হালকা হালকা শুনতে পেল, তুমি এক্ষুনি এসো আমার ভীষন ভয় করছে, বৃষ্টির কথা শুনে আকাশ জানতে চায় নি। কেন ভয় পাচ্ছে কিসের জন্য। ও এই টুকু বুঝতে পারলো যে বৃষ্টির কোন বিপদে পড়েছে কাজের মেয়েটি অনেক বার ডেকেছে বৃষ্টি কে কোন সাড়া দেয়নি। আকাশ অফিস থেকে বের হয়ে কোন রকমের পড়িমরি করে এসে পৌঁছেছে বৃষ্টির বাড়িতে। বৃষ্টির দরজা ধাক্কা দিল, বৃষ্টি আমি এসে গেছি দরজা খোল। আকাশের আওয়াজ পেয়ে দৌড়ে এসে দরজা খুলল। আকাশ কে দেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগলো। আকাশ বৃষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলল......এই মেয়ে কাঁদছো কেন বোকার মতো। আকাশ একটু চিন্তায় পড়ে গেল বৃষ্টি কেন এমন করছে। অনেক বার জিজ্ঞেস করল আকাশ কি হয়েছে। তবুও কেঁদে চলেছে বৃষ্টি। একেবারে হেঁচকি তুলে ফেলেছে কাঁদতে কাঁদতে। এবার মেজাজ গরম হয়ে গেছে আকাশের, কিন্তু মেজাজ গরম করে তাতে কাজ হবে না। বৃষ্টি আমার কিন্তু ভালো লাগছে না, বলবে কী হয়েছে? তুমি কি বাইরে বেরিয়ে ছিলে। বৃষ্টি উত্তর দেয়...... হুমম। আকাশ রেগে যায়, নিজেকে সামলে নিয়ে শান্ত গলায় বলে তোমাকে তো বলেছি বাইরে বেরোবে না। তবুও বাইরে বেরিয়েছো, এতো করে বললাম তবুও শুনছো না। কাজের মেয়েটি উত্তর দেয় একজন লোক দিদির দিকে তাকিয়ে ছিল মনে হচ্ছে লোকটি দিদিকে চেনে। তাকিয়ে আবার হাসছিল, তখন থেকেই দিদি ভয়ে সিঁটিয়ে যায়। আকাশের বুঝতে একটু ও দেরি হলো না লোকটি কে ছিল। বৃষ্টির কাস্টমারদের মধ্যে কেউ একজন হবে। বৃষ্টির সাথে আকাশ আলাদা করে কথা বললো বৃষ্টি তুমি আমাকে সব খুলে বলো, কে ছিল? তোমার সেই রেগুলারের কাস্টমার। বৃষ্টি উত্তর দেয়...... হুমম। তুমি কেন ভয় পাচ্ছো, তুমি এখন আর ওই জগতে থাকো না, আপনি জানেন না আকাশ বাবু, লোকটা ভীষন খারাপ। প্রতি সপ্তাহে চার পাঁচ দিন আসতো আমার কাছে, সারারাত ধরে খুব অত্যাচার করতো, আমার ভিডিও বানিয়ে রেখেছে। যদি কখনো না করতাম তাহলে ভিডিও টা সবাই কে দেখাবে বলে ভয় দেখাতো। মাসি ওর কাছ থেকে অনেক টাকা নিত। আর ওই লোকটা আমার উপর ইচ্ছে মতো অত্যাচার করতো। আকাশ মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো কাঁদবে না কোন ভয় নেই। আমি আছি,ফালতু লোকের ভয়ে তুমি কাঁদছো। দূর থেকে দেখতে পারবে এর থেকে বেশী কিছু করার ক্ষমতা নেই। এই সমাজে সারভাইব করাটা এতো সহজ না। তোমার অতীত কোন না কোন ভাবে তোমার সামনে আসবে। তুমি না চাইলে ও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে হবে তোমাকেই। আমি সাপোর্ট দিতে পারবো, বাকিটা তোমাকেই সামলাতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই তোমার নামে দোকান খুলে ব্যবসার ভার তোমাকে দেব। তুমি যদি এই ভাবে ভয় পাও কী করে চলবে। এই ভাবে আকাশ বৃষ্টিকে বোঝাতে থাকে,ইউর ডিসিশন - তুমি কি আমাকে নিয়ে ভালো ভাবে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাও, উত্তর দাও বৃষ্টি বৃষ্টি মাথা নাড়ল। চলো চোখে মুখে জল দিয়ে কিছু খেয়ে নাও। আকাশ ভাবে আমি ও ছিলাম বৃষ্টির এক রাতের কাস্টমার, বৃষ্টির আকুতি মিনতি কান্না আমাকে হারিয়ে দিয়ে ছিল, তাই সেই রাতেই বৃষ্টিকে নিয়ে চলে আসি, কাস্টমার ছিলাম ঠিকই ওকে স্পর্শ করে দেখিনি। ওকে ভালো বন্ধু বলে ভাবি। ওই জগৎ থেকে ওকে বের করে আনতে পেরেছি তাই আমার কাছে অনেক। আকাশ বড়ো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register