Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

অণুগল্পে পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি

maro news
অণুগল্পে পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি

আত্মার পণ্যায়ন

আমি আর সুমিত ময়দানে হেঁটে চলেছি। ওকে জানালান যে বিশ্বায়ন নিয়ে একটা গল্প লিখব ভাবছি। ও সঙ্গে সঙ্গে বললো, বাহ! নতুন আইডিয়া!- ধুর, নতুন কি করে হবে? বিশ্বায়নের পর তিন দশক কেটে গেছে। তুই আর আমি কেউ ওই বস্তুটার জন্মের আগে জন্মায়নি। তাই একটা সমস্যা হচ্ছে। ও বেমালুম বলে, “শোন বিশ্বায়নের অর্থ পণ্যায়ন। অর্থাৎ, তুই আমার পণ্য আর আমি তোর পণ্য। তুই আমাকে কিনে ব্যাগে পুরে হাঁটছিস আর আমি তোকে। কি দারুণ ব্যাপার বল তো।” এক সাথে তুই আমার ব্যাগে আর আমি তোর ব্যাগে- এটা কি করে সম্ভব? ও কিছুক্ষণ মাথা চুলকে বললো, “ধর তুই আর আমি মারা গেছি। আর আমাদের আত্মাদের মধ্যে কথা হচ্ছে।” “তোর মাথা গেছে, এটাই বা কি করে সম্ভব? এক মৃত মানুষের তো আত্মা একটাই হবে।” আমি এই কথা বলাতে ও বলে বসলো, “কোথায় লেখা আছে কোন মানুষের একটাই আত্মা হয়? তুই লিখবি দুটো আত্মার কথা। দেখবি পাঠক কেমন খায়?” আমি বললাম, “অনেক হয়েছে। পেট চোঁ চোঁ করছে। চল ভবানীপুর টেন্টে।”

রবিবার দিন দুপুরে খাতা পেন নিয়ে বসলাম টেবিলে। একবার জানালার বাইরে বাগানের গাছগুলি দেখছি আর তারপরেই চোখ রাখছি কাগজের উপর। কিছুই লিখতে পারছি না। অথচ পণ্যায়ন নিয়ে লিখতে হবেই। এটা আমার জিদ। হঠাৎ পাশে রাখা বইয়ের শো কেসের দিকে তাকালাম। সামনের দুপাল্লার স্লাইডিং কাচের দিকে নজর পড়লো। গতকালই কাজের মেয়ে নমিতাকে দিয়ে কাচ মোছানো হয়েছে। কাচের ওপর পরিষ্কার আমার প্রতিচ্ছবি। সঙ্গে সঙ্গে মগজ থেকে সিগন্যাল এলো, শো কেস তো পণ্য আর তার ওপর মূর্তিমান আমি। তা হলে ব্যাগের জায়গায় শো কেস ভাবলে কেমন হয়?

মোবাইল তুলে সুমিতকে ধরলাম। বললাম আমার প্রস্তাব। ওর ফরমান, “আরে ব্যাগই তো পণ্যায়নে সিম্বল। দেখছিস না টাটার বিগ বাস্কেটের কি রমরমা। ব্যাগ অপরিহার্য।” ফোনটা কেটে দিইয়ে খাতা পেন রেখে বিছানায় লম্বা হয়ে গেলাম। ভাবলাম, অতঃ কিম?

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register