সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব - ২৩)
মজুর, মার্ক্স ও মে দিবস

মহামান্য আদালত আরবেইটার জাইটুং কাগজে প্রকাশিত বিভিন্ন আর্টিকেলের পাঠ শুনে সে সবের জ্বালাময়ী চরিত্র সম্পর্কে অনেকগুলি কথাই বলেছেন। প্রচুর মন্তব্য করেছেন। এখন আমি এই কোর্টকে একটা সংবাদপত্রে প্রকাশিত সম্পাদকীয় প্রবন্ধ পড়ে শোনাতে চাই। লেখাটা বেরিয়েছিল ১৮৮৬ অক্টোবরে। কাগজটার নাম হল ফঁ দ্যু ল্যাক কমনওয়েলথ, একটি পরিচিত রিপাবলিকান সংবাদপত্র। আমি যদি খুব ভুল না করে থাকি, তাহলে এই মহামান্য আদালতও মননে চিন্তনে রিপাবলিকান।
ফঁ দ্যু ল্যাক কমনওয়েলথ এর সম্পাদকীয়ে লেখা হয়েছে, রিপাবলিকানগণ, অস্ত্রধারণ করুন। উইসকনসিন প্রদেশের শহরে বন্দর যেখানে যত সাহসী, লড়াকু লোক আছে, যারা রক্ত দেখে ভয় পায় না, মরতে আর মারতে যাদের ক্লান্তি নেই, তাদেরকে সংগঠিত করুন। এই পথেই শান্তি ( মহামান্য আদালতকে আমি শান্তি সম্বন্ধে পুঁজিপতিরা কী বোঝে, একটু আগেই বলছিলাম) ও সুস্থিতি রক্ষা করতে হবে। নিজেদের মধ্যে অহেতুক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়বেন না। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি এ সময় পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে, ঐক্য অটুট না থাকলে জেমস জি জেনকিন্সের মতো নোংরা লোকগুলো ভোটে জিতে গিয়ে সরকারের দখল নিয়ে নেবে। আগামী ভোটের দিনে উইসকনসিন প্রদেশের প্রতিটি রিপাবলিকান নাগরিক হাতে অস্ত্র নিয়ে ভোট করাবেন। যেখানে যত অ্যাক্টিভ ডেমোক্র্যাট আছে, তাদের বাড়ি ঘরদোর শস্যের গোলায় আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিন। ওদের বাচ্চাগুলোকে পুড়িয়ে মারুন। মেয়ে বৌদের প্রকাশ্য রাস্তায় কাপড় খুলে নিয়ে উদোম ন্যাংটো করে দিন। এমন অবস্থা করুন, যাতে ডেমোক্র্যাটগুলোর মাথায় ঢোকে যে শাসনক্ষমতায় যাবার যোগ্যতা ও শক্তি কেবল একটিমাত্র দলেরই আছে, তাহল রিপাবলিকানরা। তাই রিপাবলিকান প্রার্থীদেরকেই ভোট দিতে হবে। রিপাবলিকান প্রার্থীদেরকেই ভোটে জেতাও, নইলে ভোটের বুথে তোমার লাশ পড়ে যাবে, শিয়াল কুকুরে তোমার লাশ নিয়ে ফিস্ট করবে। তারপরেও যদি ডেমোক্র্যাটরা ট্যাঁ ফোঁ করে, জেনকিন্সের হয়ে প্রচার করে, তাহলে রাস্তাঘাটে, দোকানে বাজারে যেখানে দেখতে পাবেন কুকুরের মতো গুলি করে মারুন। যদি দেখেন কোনো মহল্লায় ওরা খুব মজবুতভাবে সংগঠিত, আর সাংগঠনিক জোরে বিরোধী প্রার্থীদের ব্যালট বক্স ভরে ফেলেছে, তাহলে সেই ব্যালট বক্স টেনে বের করুন, ভাঙুন, আর ওদের ব্যালটগুলো কুচি কুচি করে ছিঁড়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিন। বন্ধুগণ, এখন কাজে লেগে পড়ার সময়। আপনারা যে যোগ্য ও দক্ষ কাজের লোক, তা দেখিয়ে দেবার সময় এসে গেল।
ওরা যমের অরুচি, শালারা মরেও মরেনা। মরিসন ডেমোক্র্যাট গুলো তো ইয়োলো ফিভারেও ফৌত হয় না। তাই ওদের মারতে ঝঞ্ঝাটবিহীন আর বেশি কার্যকর উপায় চাই। যারাই আমাদের বিরুদ্ধে মিছিল করবে, গলা তুলবে, তাদেরকে একদম শেষ করে দিতে হবে। আমাদের সঙ্গে টক্কর দেবার পরিণাম কী, তা বুঝিয়ে দিতে হবে। রিপাবলিকান বন্ধুগণ, আপনারা এইভাবে প্রস্তুত হয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামুন। একটু আধটু রক্ত ঝরল দেখে ভয়ে কুঁকড়ে যাবেন না। এইপথে উত্তর আর দক্ষিণ দুটোকেই কব্জায় আনতে হবে। মহামান্য আদালত, আমি রিপাবলিকানদের ফঁ দ্যু ল্যাক কমনওয়েলথ কাগজের সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পড়ে শোনালাম।
এই রিপাবলিকান কাগজ ফঁ দ্যু ল্যাক তাদের সম্পাদকীয় পাতায় ল অ্যাণ্ড অর্ডারের প্রতি বিশ্বস্ত তা জানাতে যা লিখেছে, তা আপনাদের কেমন লাগল? আরবেইটার জাইটুং এর সঙ্গে তুলনা করলে ফঁ দ্যু ল্যাক কেমন?
জোহান মোস্ট এর বই সম্পর্কে এই কোর্টে কথা বলা হয়েছে। আমি অবশ্য বইটি নেড়েচেড়ে কখনো দেখিনি। আর পড়িনি তো বুঝতেই পারছেন। আমি মেনে নিচ্ছি ওই বইয়ের যে অনুচ্ছেদ গুলি এই আদালতে পড়ে শোনানো হল, সেগুলি নিন্দনীয়, ঘৃণার্হ। যে মানুষের মধ্যে কিছুটা হৃদয়বত্তা আছে, রুচিবোধ আছে, তিনিই মোস্ট এর এই লেখাগুলিকে ধিক্কার দেবেন। তবে, একটা বিষয়ে এই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এখানে মোস্ট এর বইয়ের থেকে যে অনুচ্ছেদগুলি তুলে ধরা হল, ওগুলি আন্দ্রিউয়ের একটি লেখা থেকে অনূদিত। কে এই আন্দ্রিউ? না, পুলিশের এক প্রাক্তন বড়কর্তা, যিনি ছিলেন আপনাদের দর্শন, চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির একজন উল্লেখযোগ্য প্রচারক। ভেবে বলুন তো আপনাদের মতবাদের প্রচারকুশলীরা কি কখনো মানুষের খুনে হোলি খেলবার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন? কখনো না। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এই যে, আমরা এই আটজনা না কি একটা ষড়যন্ত্র করেছি। কিন্তু এই বানানো ও মিথ্যা অভিযোগের উত্তরে আমি বলছি যে এরমধ্যে আমাদের একজন সাথী, লিং, তার সাথে আমার আদৌ কোনো পরিচয়ই ছিল না। লিংকে আমি মোটে দুবার দূর থেকে দেখেছি, দেখেছি সেন্ট্রাল লেবার কমিশনের মিটিংগুলোয়, ওই মিটিংগুলিতে আমি যে সাংবাদিক হিসেবে যেতাম। আমি অ্যারেস্ট হবার আগে অবধি ওই মোট দুবার আমি ভায়াকে দেখেছি। তবে কথাটথা কখনো বলা হয় নি। এঙ্গেল এর সঙ্গে বিগত একটা বছর ধরে আমার কথা বলার মতো সম্পর্কই ছিল না। আর ফিশার, যাঁকে আমার লেফটেন্যান্ট বলে পরিচয় দেওয়া হচ্ছে, তিনি তো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে আমার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখতেন। তাহলে ভেবে দেখুন, যারা পরস্পরকে চিনত না, জানত না, কথা বলত না, এমনকি বিরুদ্ধে প্রচার করত, তারা মিলিজুলে মাথা খাটিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, কথাটা কোন্ মাত্রায় হাস্যকর?
যাক্ সে কথা। মহামান্য আদালত আজ সকালে আমাকে বলেছিলেন, তাঁরা যা বলেছেন এবং লিখেছেন, তা থেকে অবশ্যই আমরা শিখব। আর এই কথা বলে, সেই অনুষঙ্গে এই আদালত বেশ কয়েকটি আর্টিকেল এখানে পড়লেন। এখন, যদি আমার এই আদালতের মতোই ক্ষমতা থাকত, এবং যদি আমি আইন মেনে চলা একজন ভদ্র সভ্য নাগরিক হতাম, তাহলে আমি অতি অবশ্যই এই মামলার বিচার চলাকালীন এই আদালত যে সব মন্তব্য করেছেন তার বিরুদ্ধে এই আদালতকে অভিযুক্ত করতাম। আমি জোর দিয়ে বলছি, যদি আমি এই মামলার শুরুর দিন থেকেই একজন নৈরাজ্যবাদী না হতাম, তাহলে এতদিনে কোর্ট রুমে থাকতে থাকতে আমি একজন পাক্কা নৈরাজ্যবাদী হয়ে উঠতাম। একটি ঘটনায় এই আদালত অদ্ভুত একটি কথা বলেছেন। আমি আদালত ঠিক কি ভাষা, কি বাক্যবিন্যাস উচ্চারণ করছেন, তা হুবহু তুলে ধরতে চাই। আদালত বলেছেন - এটা মনে করার কোনো দরকার নেই যে, দেশের সমস্ত আইন নির্বুদ্ধিতায় ভরা এবং ত্রুটিপূর্ণ। যদিও বেশ কিছু আইন ওই রকমই। মহাশয়গণ, এই যে কথাটা, এটা একটা রাজদ্রোহ। আমরা আদালতের সম্মান এবং রাষ্ট্রের আইনজীবীর উপর আস্থা রাখলে এটা অবশ্যই রাষ্ট্রদ্রোহ। কিন্তু ওখান থেকে সরে গিয়ে আমি বলতে চাই কোন্ আইনগুলো ভালো আর কোন্ গুলো মন্দ, তা আমরা কেমন করে বাছাই করব? অমন করে কোন্ আইন ভালো আর কোন্ টা ওঁচা, তা বিচার করার কোনো এক্তিয়ার কি আমার আছে? না,আমার পক্ষে আইনের ভালো মন্দ নিয়ে বিচারের অধিকার নেই। যদি আমি কোনো ওঁচা আইনকে অমান্য করি, আর তেমন আইন অমান্যের দায়ে আমাকে যদি একটা ওঁচা বিচারকের আদালতে তোলা হয়, তাহলে সে আদালত নিশ্চয়ই আমাকে গারদে পুরবেন।
আরবেইটার জাইটুং কাগজে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট আজ সকালে এই আদালতে পাঠ করা হয়েছে। বোর্ড অফ ট্রেডের সামনে একটা বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছিল, রিপোর্টটা সেই সম্পর্কে। আমি বলতে চাই, এই আমার একটি মাত্র আত্মরক্ষার্থে কথা বলা। নিজের সপক্ষে আমি এই একটা কথাই বলছি যে, এই আর্টিকেলটা আরবেইটার জাইটুং কাগজে ছাপা হয়ে যাবার পর তবেই আমি দেখেছিলাম। তার আগে আমি এই আর্টিকেলটার সম্বন্ধে ঘুণাক্ষরেও কিছু জানতাম না। যে এটা লিখেছিল, সে সকালবেলার কতকগুলো কাগজে প্রকাশিত নিন্দামন্দের উত্তরে এভাবে লিখেছিল। ও লোকটাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি যদি আগেভাগে লেখাটা দেখতাম, তাহলে কিছুতেই আমি এ লেখাটা প্রকাশ হতে দিতাম না। লেখাটার ভাষাবয়ন ও শব্দচয়ন দুটোই জঘন্য।
এখন যদি আমাদের হে মার্কেটের বোমা ছোঁড়ার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকাটা প্রমাণ করা না যায়, তাহলে কেমন সেই আইন যা বলছে, এই লোকগুলোকে বাছাই করে তুলে আনো আর শাস্তি দাও? এমন কোনো আইন সত্যিই আপনাদের হাতে আছে কি ? থাকলে আমাকে অনুগ্রহ করে তেমন আইনটা একবার দেখতে দেবেন? এই ব্যাপারে এই আদালত যে পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তা যদি সঠিক হয়, তাহলে এই শহরের মোট জনসংখ্যার অর্ধেককে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া যায়। কেননা, ৪ঠা মে'র হে মার্কেটের ঘটনায় আমরা যেমন জড়িত, তেমনি করে তাদেরও জড়িত বলা যায়। আর যদি চিকাগো শহরের অর্ধেক লোককে এভাবে ফাঁসিতে লটকানো না যায় তাহলে দেখান, কি সেই আইন যা বলছে আটখানা লোককে ধরে আনো আর বলির পাঁঠা বানিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দাও? মশাই, আপনাদের হাতে একটাও ঠিক মতো আইন নেই। আপনাদের সিদ্ধান্ত, আপনাদের রায়, আমাদের উপর দণ্ডাজ্ঞা, সমস্ত কিছু এই বিচারবোধহীন আইনজ্ঞানহীন আদালতের খামখেয়ালি নাচনকোঁদন। এই ধরনের কোনো মামলার নজির পৃথিবীর বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে নেই। হ্যাঁ, এটা ঠিক, আমরা মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলাম নিজেদেরকে সশস্ত্র রাখতে। আর এটাও ঠিক, আমরা সাধারণ মানুষের কাছে বারেবারে ঘোষণা করেছিলাম একটা মহাপরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে মানুষের রক্তপাত হোক, এমন ইচ্ছা আমাদের ছিল না। আমরা তো জানোয়ার নই। আমরা যদি জানোয়ার হতাম, তাহলে সমাজতন্ত্রী হতে যেতাম না। আমরা সংবেদনশীল, আমরা হৃদয়বান। আর সেই কারণেই আমরা শোষণমুক্তি ও দুর্দশা থেকে মাথা তোলার আন্দোলনে সামিল হয়েছি। আর মানুষকে আমরা বলছি যে, ঝোড়ো দিন আসছে। তার জন্য অস্ত্র হাতে তৈরী থাকো। আমাদের ওই কথার জন্য মনে হয়, আমাদের প্রাণদণ্ড দিতে আপনারা গোঁ ধরেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে একচ্ছত্র স্বৈরাচারের অধীনে একটানা অত্যাচার আর অনাচার সহ্য করতে করতে মানুষ তার সহ্যসীমা পেরিয়ে গেলে যে কোনো উপায়ে মুক্তি চাইবে। কোণঠাসা হয়ে গেলে বিড়ালটাও রুখে দাঁড়ায়। তাই মানুষকেও রুখে দাঁড়াতে হবে। এটা তাদের অধিকার। আর এটাই তাদের দায়িত্ব যে একটা অত্যাচারী নিষ্ঠুর সরকারকে উৎখাত করে আগামীদিনের শান্তি ও সুরক্ষার জন্য নতুন সরকার গড়ে তোলা। আজ্ঞে, এটা কিন্তু আমার মস্তিষ্কপ্রসূত সুভাষিত নয়। এই উক্তিটি "ডিক্লারেশন অফ ইনডিপেনডেন্স" অর্থাৎ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র থেকে উদ্ধৃত করলাম। তাহলে আমরা কি গত বিশ বছর ধরে কিভাবে সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার চলছে, তা তুলে ধরে দেখিয়ে কোনো আইনভঙ্গ করেছি? আমরা বিশ বছর ধরে বলে চলেছি এই দেশে শক্তিমান আর ক্ষমতাসীনদের জোট এতটাই দানবিক হয়ে উঠেছে, যা আর কোনো দেশে কখনো হয়নি। আমি বেশ টের পাচ্ছি কেন গ্রিনেলের মতো মানুষ গ্র্যাণ্ডজুরির কাছে আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তুলতে পারেননি। যে মানুষ বা যারা সংবিধান আর সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে তুলে ধরেছে এবং তেমন তুলে ধরার মধ্য দিয়ে অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করেছে তাদের তো আর রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য সাজা দেওয়া যায় না। ওটা প্রমাণ করা অত সোজা হত না। তাইতো গ্রিনেলকে মাথা খাটিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ বানাতে হয়েছে। এই হল আমার চিন্তাভাবনা। এগুলি আমার সত্তার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমি এই চিন্তাভাবনাগুলির থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করব না। চাইলেও শত চেষ্টাতেও পারব না। আর যদি আপনারা মনে করেন আমাদের ফাঁসিতে লটকে এই সমস্ত চিন্তা গুঁড়িয়ে দেবেন : যদি আপনারা মনে করেন মানুষ সাহস করে বুক বেঁধে সত্যবাক্য উচ্চারণ করেছে বলে তাদেরকে প্রাণদণ্ড দেবেন তাহলে আমি আপনাদের বলছি - কই দেখান দেখি আমরা একটাও মিথ্যাকথা বলেছি। আমি বলছি, সত্যবাক্য উচ্চারণের জন্য যদি প্রাণদণ্ডই পাওনা হয়, তাহলে আমি মাথা উঁচু করে গর্বের সঙ্গে সেই দাম দিতে রাজী আছি। ডাকুন আপনার ফাঁসুড়েদের। সক্রেটিসের মধ্যে, যীশুর মধ্যে, জিওর্দানো ব্রুনোর মধ্যে, হাস এবং গ্যালিলিওর মধ্যে সত্যকে ক্রুশবিদ্ধ করা হলেও সত্য এখনো জীবন্ত আছে। ওইসব মানুষ এবং আরো অজস্র মানুষ এই পথে হেঁটে গেছেন। আমরাও এই পথ ধরে চলতে প্রস্তুত।
(এইখানে অগাস্ট স্পিজের বক্তব্য সমাধা হল।)
0 Comments.