Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

মেহফিল -এ- কিসসা রীনা তালুকদার

maro news
মেহফিল -এ- কিসসা রীনা তালুকদার

বঙ্গবন্ধু ভাবনায় বিজ্ঞান কবিতা :

বঙ্গবন্ধু সাহিত্য ধারায় নতুন সংযোজন বিজ্ঞান কবিতা। কবি রীনা তালুকদার (এই নিবন্ধকার) বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান কবিতা পরিষদ গঠন করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত কবিতায় বিজ্ঞান সমন্বয় করে মান্নোনয়ন করার চেষ্টায় নিয়মিত বিজ্ঞান কবিতার পাঠের আসর চলমান। যা ফেসবুকের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায় থেকে বিশ্বের সাহিত্য প্রেমীদের কাছে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। তাদের মান্নোনত সাহিত্য সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে রীনা তালুকদারের ২০১৫ সালে প্রকাশিত সাত মার্চ শব্দের ডিনামাইট কাব্যগ্রন্থটি একটি বিজ্ঞান কাব্যগ্রন্থ। বিজ্ঞান কবিতার ভাবনায় আন্দোলন চলছে বাংলা সাহিত্যে ১৯৮৮ সাল থেকে। দীর্ঘ আন্দোলনে দেশে বিদেশে বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে অনুপ্রাস জাতীয় কবি সংগঠনের সাহিত্য চর্চায় বিজ্ঞান, কবিতায় সফল ভাবে সমন্বয় করে ইতোমধ্যে ২০১১ সাল থেকে পৃথক ভাবে কয়েকটি কবিতা ও প্রবন্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে। আবার নিয়মিত কাব্যগ্রন্থ প্রকাশনায় কবি শেখ সামসুল হক, কবি খোশনূর, কবি সামসুন্নাহার ফারুক, কবি কিশোয়ারা সুলতানা সহ অনেকেই বিজ্ঞান কবিতা নিয়মিত চর্চা করছেন। যা বেশ আলোচিত ও জনপ্রিয় হয়েছে বা চলমান। আর একই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞানের ছোঁয়া লেগেছে বাংলায় জনপ্রিয় ও চর্চিত বিভিন্ন ধারার বিদেশী সাহিত্যেও। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘিরে দীর্ঘ সময়ে ১৯৭১-এরপর থেকে চলমান সময়ে যে সাহিত্য রচিত হয়েছে। তা বিশ্বের যে কোনো সময়ের যে কোনো জনপ্রিয় নেতাকে নিয়ে হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জীবনী সাহিত্য থেকে শুরু করে প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং হাজার হাজার কবিতা লেখা হয়েছে বা এখনো হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানকে সমন্বয় করে জাতির পিতাকে নিয়ে রচিত কাব্যগ্রন্থ-সাত মার্চ শব্দের ডিনামাইট গ্রন্থটি প্রকাশ হয়েছে। যা জনপ্রিয় হয়েছে বা হচ্ছে। একই ধারাবাহিকতায় আমরা কতিপয় বিজ্ঞান মনস্ক কবি বাঙালী জাতির পিতাকে নিয়ে রচিত বিশেষ করে কবিতা ও কবিতা সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধ, নিবন্ধ বহুল গবেষণা ও চর্চা করছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত সাহিত্যকে বাংলা সাহিত্যের কালপঞ্জিতে চিহ্নিত করা যায় এমন যুগোপযুগি নামকরণ করা এবং এই সাহিত্য তথা কবিতা ও কবিতা সংশ্লিষ্ট লেখা গুলোকে আরো অগ্রসর ও বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াসে (এই নিবন্ধকার) বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান কবিতা পরিষদ গঠন করা হয়েছে। রীনা তালুকদার’র (এই নিবন্ধকার) প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘বিজ্ঞান কবিতার ভাবনা’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুকে সাহিত্যের কাল পঞ্জিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। কেননা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাংলার মাতৃভাষার ১৯৫২ সালও অর্থহীন হয়ে যেতো। সেই দৃষ্টিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় বাংলাদেশে বাংলা সাহিত্য আজ গৌরবের সাথে এগিয়ে চলছে। বাংলা সাহিত্য এবং ধারাবাকিতায় বাংলাদেশ সাহিত্য একটা পৃথক বৈশিষ্ট্যে পরিগণিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্য চর্চা অনেকে দেশেই চর্চা হচ্ছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সাহিত্যের সাথে বিষয়গত বা প্রকরণগত ও ব্যকরণিক বিন্যাসে পার্থক্য পরিলক্ষিত। কবিতা এক নিখুঁত শিল্প। আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে সাহিত্য গড়ে ওঠেছে; সেগুলোকে একটি কালজয়ী যুগ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। ইংরেজী সাহিত্যে যেভাবে ভিক্টোরিয়ান যুগ, সংস্কৃতি সাহিত্যে চৈতন্য যুগ, বাংলা সাহিত্যে কল্লোল যুগ, রবীন্দ্র যুগসহ এ রকম আরো বিভিন্ন সময়কে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। সাহিত্যে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও একটি যুগ সৃষ্টি করেছেন বলে আমরা মনে করি। অনেক ধরনের সংগঠন বঙ্গবন্ধুর নামে দেশে বিদেশে কাজ করার অভিপ্রায়ে গঠিত হলেও বাস্তবিক সেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত সাহিত্যকে উন্নত করার কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না। অনেক সংকলন রয়েছে কিন্তু লেখার মান উন্নত করার বিষয়টি দেখা যায় না। আর সেখানে একটা শূন্যতা বিরাজ করছিলো বলেই আমরা বঙ্গবন্ধু ভিত্তিক প্রবন্ধ সাহিত্য ও কাব্য সাহিত্যের উন্নত করণের চিন্তা ভাবনায় এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নিজেই, ১৯৫৭ সালে ৩ এপ্রিল আইন সভায় বাংলা একাডেমী আইন পাস, পূর্ব পাকিস্তানে শিল্পমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৫৭ সালের ৪ এপ্রিল প্রাদেশিক আইন পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল উত্থাপন করে সাংস্কৃতিক বিকাশে নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রবীন্দ্রনাথকে বলেছেন- ‘কবি গুরু দেখে যান-আমার বাঙালী আজ মানুষ হয়েছে’ এই কথা বলা এবং স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ২৪ মে তারিখে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে কোনো পাসপোর্ট ছাড়া ভারতের মহান হৃদয়ের ইন্দিরা গান্ধীর অনুমতি সাপেক্ষে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এনে বাসভবন ও ভাতা নির্ধারণ, তার গানকে রণসঙ্গীতের মর্যাদাদান, সড়কের নাম ‘কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ’ করায় কবিদের মর্যাদার দিকটা আরো উঁচু করে দিলেন। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে তাঁর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এক সমাবর্তনে তাঁকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। রবীন্দ্র প্রিয় বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্র সঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদাদান, কবি ফররুখ আহমদকে অনুদান, শিল্পী কমল দাশগুপ্তকে রেডিওতে চাকুরী দেয়া, কবি জসিমউদ্দীনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ, অসুস্থ কবি হুমায়ুন কাদির, কবি আবুল হাসান, কবি মহাদেব সাহাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ প্রেরণ, মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে লেখার কারণে কবি দাউদ হায়দারকে নিরাপত্তা দিয়ে কলকাতায় প্রেরণ, জেলখানা থেকে মুক্তি দিয়ে কবি আল মাহমুদকে চাকুরি প্রদান, নাটকের উপর থেকে প্রমোদ কর ও সেন্সর প্রথা সহজীকরণ করেছেন। কবি/ সাহিত্যত্যিকদের মর্যাদা দেয়া এবং সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতিকে বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক পৃষ্ঠপোষকতা আরো বেগবান করে দিয়েছে। একই ভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও; সাধারণ মানুষের পাশাপাশি কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি মহাদেব সাহা চিকিৎসার ব্যবস্থা ও কবি শহীদ কাদরীকে দেশে আনা,  কবি সৈয়দ শামসুল হকের চিকিৎসার ব্যবস্থা, কবি হেলাল হাফিজের চিকিৎসা, শিল্পী আবদুল জব্বারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তিনিও কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী ও সংস্কৃতিক ব্যক্তিদের চিকিৎসা সহ নানাবিধ পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছেন। একই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ও তারুণ্যেও প্রতীক সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও সাহিত্যে পৃথক দুয়ার খুলে গেছে। যা ইতোমধ্যে বেগবান হয়ে যাচ্ছে বা চলমান।
অনেকেই প্রশ্ন করেন কবিতা আবার বিজ্ঞান কেন ? অনেক প্রশ্ন পেয়েছি। অনেক উত্তরও লেখার চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে এই নিয়ে প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস খুব নতুন নয়। সেই চর্যাগীতি থেকে বর্তমান বাংলা সাহিত্য;  বাংলাদেশের সাহিত্য পর্যন্ত চলমান। বাংলাদেশ এবং বাঙালী সাহিত্য দুটোতে সময় ও বিষয়বস্তুর কিছু পার্থক্য আছে। বাঙালী সাহিত্য সেই ইতিহাস পুর্বের ধারাবাহিকতায় চলমান। বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম’ এই ঘোষণার ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি আমরা পেয়েছি। কিন্তু প্রকৃত মুক্তির জন্য এখনো অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আর বাংলাদেশের সাহিত্যের বিবর্তনের ইতিহাস পূর্বের ধারাবাহিকতায় বায়ান্ন সাল থেকে চলমান। এই দেশকে যারা ভালোবাসে, এদেশের যারা উন্নয়ন চায়, এদেশের মেহনতি মানুষের মুখে যারা হাসি দেখতে চায়, যারা দরিদ্র মানুষকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিতে চায়, যারা এদেশের সকল স্তরের শ্রমজীবি মানুষকে সুখে শান্তিতে দেখতে চায়, বাউল- লালন- হাসনের সেই কৃষ্টিকে লালন করে ধারণ করে এবং ঐতিহ্যকে চর্চা করে, ইতিহাসকে চর্চা করে, দেশের মানুষকে শিক্ষিত করে দেশকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দেখতে চায় তাদের জন্যই বিজ্ঞান কবিতা লেখা। একদিন যারা ডিজিটাল বলে রসাত্মক গল্প করতো আজকে দেখা যাচ্ছে সারাদেশই ইন্টারনেট, ফেসবুক ও অন্যান্য অ্যাপসের মাধ্যমে ডিজিটাল হয়ে গ্লোবাল বিশ্বের সাথে অঙ্গীভূত হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের মাঝে বিজ্ঞানকে সহজ ভাবে উপস্থাপন করে জাতিকে বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলার লক্ষেই বিজ্ঞান কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখে যেতে হবে, নিরন্তর চর্চা করতে হবে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register