Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় শিপ্রা দে

maro news
কবিতায় শিপ্রা দে

দূর নেই আর

দুর্গারা আজ পিছিয়ে নেই স্ব মহিমায় আগে লাঙল, খুন্তি, কলম, নিয়ে অস্ত্র হাতে জাগে।
আমার দুর্গা জ্যান্ত আগুন বহ্নিশিখা নারী সর্ব দিকে শিক্ষিত আজ দিচ্ছে বিদেশ পাড়ি।
ঘোমটা মাথার শাড়ি ছেড়ে জিন্স, টপ, টাই পড়ে নয়টা পাঁচটা এম.এন.সি তে কর্পোরেট জব করে।
রাজস্থানের আমার দুর্গা ঘরবাড়ি তাঁর ছাড়ি ঘড়া মাথায় জল আনতে যায় দু-ক্রোশ দেয় পাড়ি।
পূবের আলোয় মাথায় ঝুড়ি বেরিয়ে যায় কাজে সেই নিশীথের অন্ধকারেই আমার দুর্গা বাজে।
এসিডদগ্ধ ঝলসে গেছে হাল ছাড়েনি তবু এগিয়ে গেছে অনেক আগে পিছে হাঁটেনি কভু।
চুড়ি পড়েও কাস্তে হাতে সোনালী ধান ফলায় আমার দুর্গা আওয়াজ তোলে প্রতিবাদী গলায়।
আমার দুর্গা এগিয়ে গেছে অলিম্পিকের মাঠে ঝান্ডা হাতে দুর্গা আমার সবার আগে হাঁটে।
আমার দুর্গা গর্বিত আজ নিজের কাজে মগ্ন মুখোশ ছিঁড়ে অসুর করে বে-আব্রু আর নগ্ন।
ঘরবন্দি আমার দুর্গা রাস্তা খোঁজে নিজে অসীম বুদ্ধি মশাল হাতে বাঁচে নিজের তেজে।
আমার দুর্গা লড়তে শেখে অসুর গুলোর সাথে বাঁচার জন্য দু-চোখ খুলে বন্দুক রাখে কাঁধে।
আগামী দিনে আমার দুর্গা চোখের জল আর ফেলবে না পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে আর মাথায় তুলে রাখবে না।
নেই দূর আর সেদিন দেখার নারী বিজয় দিবস আসবে ধরায় চিন্ময়ী যে আমার দুর্গা নিকষ।

ডেকো না আর সেদিন

যেদিন সাজবে চিতার কাঠ সেদিন ডেকো না আর সাঙ্গ হবে জীবনের হাট রইব নির্বিকার অনন্তকাল অপেক্ষাতে ছিলাম পথটি চেয়ে বুক ভরা অভিমানেই যাবো, কিচ্ছুটি না পেয়ে। রইবে না কোনো অভিযোগ সেদিন থাকো যতই পাশে, অধিকারে সেদিন আমার কি আর যায় আসে। যতই ডাকো নামটি ধরে, আওয়াজ পাবে না জানি এতোদিনেও বোঝেনি কি আমি বড্ড অভিমানী! তখন তুমি বোলো না আমি ছিলাম খুব দামি জানি সেদিন তুমি ডাকবে আকুল হয়ে যেই ডাকটা শোনার জন্য অনন্তকাল গেল বয়ে। অপেক্ষার প্রহরের শেষে চির বিদায় নেবো সারাজীবনের লেনাদেনা চুকিয়ে তোমায় দেবো। এই গোটা জীবনে একটু সময় চেয়েছিলাম তোমার কাছে, সোহাগ মাখা সন্ধ্যা বেলায় বসবে কাছে এসে আমার হাতে হাত রেখে বলবে ভালোবেসে। হয়তো সেদিন ঘরের কোণে খুঁজবে আমায় দেখবে ইতিউতি। হয়তো সেদিন খুঁজে নেবে অতি অযত্নে পড়ে থাকা পুরানো এলব্যামে স্মৃতি দেরাজে রাখা ওষুধ গুলো দেখবে আঁতিপাঁতি কোনটা সকালে খাবার আগে কোনটা খাবে রাতি। দেখবে বইয়ের ভাঁজে পুরানো কোনো খাম খুঁজবে হয়তো সেদিন তুমি একটাই নাম, যে নামে ডাকোনি কখনো! জানবে সেদিন, ঠাকুর ঘরের প্রদীপ জ্বলত কিসে! বৃষ্টি দিনে খিচুড়ি হোতো কি কি মিশে! সেদিন জানবে তুমি কি করতাম রাত্রি জেগে যা নিয়ে তুমি রোজ রোজই যেতে খুব রেগে। সেদিন জানবে বারান্দাটার গোপন খবর যেখানে দাঁড়ালে তুমি বলতে কতো আবড়তাবড়। হয়তো সেদিন জানবে তুমি লোকের মুখে কতটা অশ্রু লুকিয়ে ছিল আমার সুখে। আলমারিতে থরে থরে শাড়ির ভাঁজে নীল শাড়িটা দেখে ভাববে হয়তো কেমন লাগত সেই শাড়িটায় আমায়! কিন্তু ঐ শাড়িটাই পড়ে চলেছি কতদিন তোমার সাথে আর জিজ্ঞেস করেছি কেমন লাগছি আমি!! তুমি একবারও চোখ না ঘুরিয়েই দিব্বি বলে দিতে সুন্দর, একটা পড়লেই হোলো। হয়তো সেদিন খুঁজবে আমায় শ্রাবণ ধারায় ভিজে, নয়তো খুঁজতে ঝিলের ধারে চেলে যাবে নিজে নেই অভিযোগ নেই অধিকার না ছিল বলার ভাষা সবটাই ছেড়ে যাবো চলে থাকবে না কোনো কাজ। থাকবেনা আর লেনাদেনা শেষ হবে হাটের বেচাকেনা ঘরের প্রদীপ জ্বলবে না আর বলবে না কেউ ডেকে ভ্যাবলাকান্ত, উড়োনচণ্ডী তোমায় থেকে থেকে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register