- 33
- 0
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের সাথে বন্ধুত্ব হল, অনেক বেশি কাছাকাছি এলাম। কিন্তু তার থেকেও অদ্ভুতভাবে নিজের ছোট্ট মফস্বলের প্রতি বিরাগ বদলে গেল অনুরাগে। এই অনুরাগের উৎস ঠিক কোথায় তা সঠিকভাবে বলতে পারব কিনা জানিনা, তবে হয়ত এমন একটা ছোটবেলা উপহার দেওয়ার জন্য, যার মূল্য তখন বুঝিনি। হয়ত সেই নরম আলো মাখা প্যাস্টেলরঙা সকালগুলোর জন্য যখন মাধ্যমিক পরীক্ষার পর বন্ধুরা মর্ণিং ওয়াকে যেতাম। হয়ত সেই রেনি ডে যা একটা হঠাৎ ছুটির পাশাপাশি বৃষ্টি ভেজার স্বাধীনতাও নিয়ে আসত। অথবা গঙ্গার ঘাটে বন্ধুদের জমায়েত, আড্ডা, চেনা কাকু বা দাদার হাতের অসাধারণ চুরমুর, ফুচকা, তেলেভাজা বা পাপড়ি চাট। বা সাইকেল নিয়ে সারাদিন টিউশন পড়ার নামে ঘুরে বেড়ানো। এরকম অনেক ছোটছোট স্মৃতির ভিড় এককালের হীনমন্যতাকে যে কবে উড়িয়ে দিয়েছে, আজ তা মনেও নেই। যদি কিছু মনে থাকে তবে তা একরাশ নব্বই দশকের গল্প, মোবাইল, ইন্টারনেট যুগের আগে। হয়ত এ লেখা, সেই মফস্বলের, নিজের শিকড়ের ঋণ বা পিতৃপিতামহ-পিতামহীর ঋণ শোধ করার জন্য, বা হয়ত সেই মুহূর্ত গুলো আর একবার নতুনভাবে বাঁচার জন্য। হয়ত নিজেকে বোঝানোর জন্য যে শহর আর মফস্বল দুজনকেই ভালবাসা যায়। তফাৎ টা খালি মা আর প্রেমাস্পদের। মফস্বল আমার মতো অনেকের শৈশব আর কৈশোরকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে, সে মণিমুক্তোর ভান্ডার আজও একান্ত নিজস্ব।
0 Comments.