Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ছোটদের জন্যে বড়দের লেখায় A.F.M Shebgatulla (পর্ব - ১)

maro news
ছোটদের জন্যে বড়দের লেখায় A.F.M Shebgatulla (পর্ব - ১)

সাবির সুবীর আর মাতলা নদী

পর্ব - ১

সাবির সুবীর এখন একটু বড় হয়েছে। দেখতে দেখতে ক একটা বছর কেটে গেলো। ওরা দুজনই মাধ্যমিক পাশ করেছে। এ দিকে ওরা বেশ পরিচিত মুখ। বেশ কিছু দিন ছুটি। ওরা ঘুরতে যাবে প্ল্যান করেছে। আশেপাশের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেই ওরা ছুটি কাটাতে চাইছে। প্রথমে ঠিক হলো ডায়মন্ডহারবারের সরিষায় বেড়াতে যাবে। সব ঠিক ঠাক হয়েগেছে। এমন সময় টিংকু মামা এসে হাজির। মামা বললো তোরা যদি একটু গ্রামে বেড়াতে চাস তাহলে চলে যা ক্যানিং এর মাতলা নদী পেরিয়ে। সাবির সুবীর বললো কোথায় যাবো মামা? টিংকু মামা বললো তোরা বেড়াতে যা আমাদের এক আত্মীয়র বাড়ি। সাবির বললো ও সেই ক্যানিংয়ের ঠিক বিপরীত পাড়ে কাঁঠালবেড়িয়াতে? মামা বললো হ্যাঁ ওখানেও হতে পারে আবার ফুলবাড়ী বলে একটা গ্রাম আছে ওখানেও হতে পারে। এক কালে ওখানে যেতে হলে ' কুড়ে ভাঙ্গা 'গামি নৌকায় চাপতে হত। তা প্রায় আড়াই ঘণ্টা নৌকা পথে ক্যানিং থেকে যেতে হত কুড়ে ভাঙ্গা, সেখান থেকে হেঁটে প্রায় মিনিট পনের পরে যেতে হত ফুলবাড়ী গ্রাম। আর নৌকার যাত্রা পথটা ছিল অসাধারণ। আর নৌকা তে করে না যেতে পারলে কাঁঠালবেড়িয়ার ডক ঘাট, সেখান থেকে ঢুড়ি, আঠার বাঁকি, মঠের দীঘি, এই সব জায়গা থেকে হেঁটে ঘণ্টা দুই একের পথ সেই ফুলবাড়ী গ্রাম।
টিংকু মামা দুই বিচ্ছুকে বললো জানিস আমরা যখন স্কুলের নিচু ক্লাসে পড়তাম তা ধর নব্বই দশকের গোড়ায়, তখন ক্যানিংয়ের হাঁড়িঘাটা দিয়েই সমস্ত নৌকা যাতায়াত করত। লঞ্চ ঘাট থেকে লঞ্চ যাতায়াত করতো সুন্দরবনে! লঞ্চ ঘাটের সামনে ছিল বিস্তীর্ণ চড়া।এখন সেই সব দিক প্রায় সুনসান। সবচেয়ে বেশি নৌকা যাতায়াত করতো ক্যানিং আর ডকঘাটের মধ্যে। আরো যে সব জায়গায় নৌকা যেত সেগুলো হলো কুঁড়েভাঙা, আমঝাড়া, ভাঙন খালি, সোনাখালী - বাসন্তী, আর সব চেয়ে দূরের নৌকা ছিল গোসাবার নৌকা, গোসাবা যেতে বহু ঘণ্টা লেগে যেত, তাই গোসাবার নৌকায় ছাউনির ব্যবস্থা থাকতো। সাবির সুবীর তখন টিংকু মামার কাছে থেকে হাঁ করে শুনছে। টিংকু মামা বললো জানিস সব চেয়ে বেশি নৌকাডুবি কোথায় হতো? সাবির সুবীর বললো কোথায় মামা? মামা উত্তর দিলো, আমঝাড়া গামি নৌকা সব থেকে বেশি নৌকা ডুবি হতো! তাই ছোটো বেলায় আমরা নৌকা ,নৌকা খেলার সময় আমঝাড়ার মাঝি সাজতম। কারণ আমঝাড়ার মাঝি হওয়া মানে সম্মান বেশি। ওরা সব চেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচায়!
সাবির সুবীর ভাবলো, আগে ক্যানিং যাই। তার পর না হয় কাঁঠালবেড়িয়া যাবো নাকি ফুলবাড়ী যাবো। তখন ভাবা যাবে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ঘুরে বেড়ানো!
সেই অনুযায়ী সাবির সুবীর ঠিক করলো কালিকাপুর স্টেশন থেকে সোজা ক্যানিং যাবে। সাবিরের বাড়ি বেনিয়াবৌ গ্রামে কালিকাপুর ওই গ্রামেরই স্টেশন। আর ক একটা গ্রাম দূরে সাউথ গড়িয়া গ্রাম। সেখান থেকে সুবীর এসে সাবিরের সাথে দেখা করলো। এইবার ওরা ক্যানিং ট্রেন ধরে ক্যানিংয়ের দিকে চলেছে।

চলবে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register