- 32
- 0


এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এসে উপস্থিত হল ১৯৫৮ সাল। ১৯৫২ সালে আস্রম যখন প্রতিষ্ঠা হয়, তখন যাতায়াতের বিশেষ একটা সুবিধা ছিল না। এক দিকে মাইল দেড়েক দূরে ‘বালি’ মেন লাইন স্টেশন, অপর দিকে মাইল দুয়েক দূরে কর্ড লাইনের ডানকুনি স্টেশন। বালি কর্ড লাইন স্টেশন তখন কষ্টকল্পনা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বালি কর্ড লাইন স্টেশন স্থাপিত হয় ১৯৮৭ সালে ৩ জানুয়ারি। যাইহোক, দিনে দিনে জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে দূর দূরান্ত থেকে আগত ভক্ত সংখ্যা। সকলকেই ট্রেন ধরতে হয় অনেক কষ্ট করে, অথচ হাওড়া-বর্ধমান কর্ডলাইন গেছে বেলানগরের ওপর দিয়ে। গ্রামবাসীরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলেন এখানে একটা স্টেশনের জন্য। তাদের আবেদন নিবেদনকে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছিল না রেল কর্তৃপক্ষ। স্বামী সমুদ্ধানন্দ এসে আর্শীবাদের হাত রাখলেন তাদের পিঠে। শুরু হল দৌড়ঝাঁপ। সই সংগ্রহ।
১৯৫৮ সয়াল। রেলদপ্তরের উপমন্ত্রী আজাদ হিন্দ্ ফৌজের মেজর জেনারেল শাহ্ নাওয়াজ খান। বেলা বহিনের নাম শুনেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। বেলার জন্মদিনে, জগদ্বাত্রী পূজোর পূণ্য দিনে ১৯৫৮ সালে ২৩ নভেম্বর (৭ অগ্রহায়ণ ১৩৬৫) রবিবার বিকেলবেলা আশ্রমের সামনে বেলা মিত্রের নামানুসারে উদ্বোধন হল বেলানগর স্টেশনের। উদ্বোধন করলেন শাহ্ নাওয়াজ খান। সঙ্গে ছিলেন বেলার স্বামী হরিদাস মিত্র এবং পূর্বরেলের জেনারেল ম্যানেজার কৃপাল সিং মহাশয়। উপস্থিত ছিলেন বেলার বাবা সুরেশচন্দ্র বসু, পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন স্পিকার শঙ্করদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ভূপতি মজুমদার এবং বিধায়কহেমন্তকুমার বসু প্রমুখ। রচিত হল ইতিহাসের এক বিরল অধ্যায়। রচনা করলেন স্বামী সমুদ্ধানন্দ মহারাজ। চিরাচরিত নিয়মানুসারে শিষ্যরা গুরুর স্মৃতি রক্ষা করেন, এখানে গুরু স্থাপন করলেন এক অনন্য দৃষ্টান্ত। স্থাপিত হল ভারতের মধ্যে কোনো মহিলার নামাঙ্কিত প্রথম রেলওয়ে স্টেশন – বেলানগর।
0 Comments.