- 17
- 0


২ বছর হয়ে গেছে আমি উত্তরবঙ্গ ছেড়ে এসেছি। ২০১৬-২০১৮ এই ২ বছর ছিলাম ওখানে। এখন বুঝি, ২ বছর আসলে কম সময় নয়। কিন্তু আমার ছবি তোলার নেশার জন্য হয়তো কমই ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগে প্রকৃতি হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে আমার সময় শেষ হয়ে আসছে। বিদায় জানানোর আগে তাই উপহার দিয়েছিলেন অনেক। বড় বসন্তবৌরি, লক্ষ্মী প্যাঁচা এবং কালপ্যাঁচার মোটামুটি ভালো ছবি পেয়েছি একদম শেষের দিকেই।



তবে এর আগে আরেক জায়গার কথা উল্লেখ করতে ভুলেই গিয়েছিলাম। সেই জায়গাটা হল ভুটান। আমরা যারা উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলাম তাদের অধিকাংশেরই পকেটের রেস্ত বেশী ছিল না, কিন্তু ঘোরার ইচ্ছা ছিল ষোলআনা। তাই আমরা ফাঁক পেলেই চলে যেতাম বিদেশভ্রমণে। মাত্র দুই ঘণ্টার রাস্তা হলে কী হবে, ভুটান তো আসলে বিদেশই নাকি! মুলত ফুন্টশোলিং গিয়েই ঘুরে চলে আসতাম আমরা।এই ফাঁকে বলে রাখি, যারা সোমরস বিলাসী তাদের জন্য ভুটান স্বর্গ বললে অত্যুক্তি হয় না। আমাদের কিছু বন্ধু মুলত এই কারণেই ভুটান যেত। আর আমি যেতাম ছবির আশায়। বলা বাহুল্য, ভুটান গিয়ে আমার বিশেষ কিছুই ছবি হয়নি।
তবে ভুটানে ছবি হয় না এরকম বলা অত্যন্ত অন্যায়। ভুটান তার জীববৈচিত্র্যের জন্য এমনিতেই বিখ্যাত। রয়াল বেঙ্গল টাইগার, রেড পান্ডা, ক্লাউডেড লেপার্ড, হিমালিয়ান ভালুক, ইত্যাদি ভুটানের দক্ষিণ দিকের অরণ্যে পাওয়া যায়। আবার উত্তর ভুটানে স্নো লেপার্ডের অস্তিত্বও টের পাওয়া গিয়েছে। পূর্ব-হিমালয়ে অবস্থিত এই ছোট্ট পরিবেশ সচেতন দেশটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বললে ভুল হয় না। এই দেশটি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং শান্তিসূচকে প্রথম দিকেই অবস্থান করে।
আগে ভুটানে যেমন ভোটার কার্ড দেখিয়েই ঢোকা যেত, এখন আর সেরকম ব্যবস্থা নেই। এখন সম্ভবত ভারতীয়দের জন্যও এন্ট্রি ফি চালু হয়েছে। যদিও ভ্রমণবিলাসী বাঙালির কাছে এটা তেমন কোনো বাঁধা নয়। প্রত্যেক পাহাড়প্রেমী ভ্রমণবিলাসীর উচিত অন্তত একবার ভুটান ঘুরে আসা। অত্যন্ত পরিষ্কার এবং সুসভ্য এই দেশটি নিরাশ করবে না।
যাই হোক, স্বল্প পরিসরে অনেকটা লিখে ফেললাম। পাঠককে আর বিব্রত করতে চাই না। আশা করি পাঠক লেখা এবং ছবি উভয়ই উপভোগ করেছেন। আপাতত চিত্রকাহনের উত্তরবঙ্গ পর্ব এখানেই সমাপ্ত হল।
অলমিতি।
0 Comments.