Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

প্রবন্ধে অমিত কুমার জানা

maro news
প্রবন্ধে অমিত কুমার জানা

প্রাকৃতিক দুর্যোগে করণীয়

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলতে বোঝায় স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়মের ব্যতিক্রমী ঘটনা যার ফলে প্রভূত আর্থ-সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি হয়, প্রাণহানি ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নানা প্রকারের হয়-বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, সুনামি, ভূমিকম্প, অগ্নুৎপাত প্রভৃতি। আজকাল মানুষের নানান অবিবেচনা মূলক কাজকর্মের জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রাদুর্ভাব ক্রমবর্ধমান।
প্রকৃতির মমতাহীন খামখেয়ালীপনা দুর্যোগের প্রধান কারণ। এছাড়াও নির্বিচারে বৃক্ষচ্ছেদন, মাটির নীচের কৈশিক জলের অপব্যবহার, অপরিমিত জৈব ও অজৈব বস্তুর দহন, জল নিকাশি ব্যবস্থার অভাব এবং সর্বোপরি অসেচতনতা প্রাকৃতিক দুর্যোগের উল্লেখযোগ্য কারণ। আমাদের দেশের মানুষেরা প্রতিবছর প্রধানত যে দুটি বিপর্যয়ের কবলে পড়ে তা হলো বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়।

ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার পূর্বে যা করণীয় তা হলো: 

১) বাড়ির নিকটবর্তী নারিকেল এবং তালজাতীয় গাছ লাগাতে হবে,কেননা এরা অনেকখানি ঝড় প্রতিরোধ করে।
২) নদী তীরবর্তী অঞ্চলের লোকেদের উচিত বাড়ির কাছে প্রশস্ত এবং উঁচু বাঁধ দেওয়া।
৩) বসতি বাড়িগুলো যথাসম্ভব উঁচু স্থানে বানাতে হবে।
৪) টিউবওয়েলের অবস্থান হবে উঁচু স্থানে যাতে না বন্যার জল ওতে প্রবেশ করতে পারে। প্রয়োজনে টিউবওয়েলের মুখ শক্ত পলিথিন দিয়ে বেঁধে ফেলতে হবে।
৫) প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ রাখতে হবে।
৬) বিভিন্ন এন.জি.ও সংস্থার সঙ্গে দুর্যোগ পূর্ব যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করতে হবে।
৭) বাড়িতে মুড়ি,বিস্কুট, চিড়া,বাদাম প্রভৃতি শুকনো জাতীয় খাবার রাখতে হবে।
৮) পানীয় জল বিশুদ্ধকরণের জন্য ফিলটার, ফটকিরি, ব্লিচিং ইত্যাদি মজুত রাখা প্রয়োজন।
৯) বাড়ির মাঝে পাকা গর্ত করে রাখা দরকার যাতে জলোচ্ছ্বাস আসার পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সুরক্ষিত রাখা যায়।
১০) সমুদ্র উপকূল এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষদের ভীষণ সচেতন থাকতে হবে যাতে বিপদকালে দ্রুত নিরাপদ স্থানে যেতে পারে।
১১) সর্বোপরি অহেতুক গুজব বা রটনায় কর্ণপাত করে ভীত হওয়া চলবে না।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরবর্তী সময়ে করণীয়:

১) দুর্যোগের পরে সর্বাগ্ৰে কাজ হলো হারিয়ে যাওয়া মানুষজনের খোঁজ নেওয়া এবং উদ্ধার করা। প্রয়োজনে অবশ্যই উদ্ধারকারীদের সাহায্য নেওয়া।
২) জল পান করার পূর্বে অতি অবশ্যই তা ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে এবং ফিল্টার করে নিতে হবে।
৩) খাদ্যাভাব হলে সরকারের ত্রাণ তহবিলের সাহায্য নিতে হবে নির্দ্বিধায়।
৪) রাস্তাঘাটের উপর পড়ে থাকা গাছপালা সরাতে হবে।
৫) এইসময় ডায়রিয়া, আমাশয়, বমি প্রভৃতি রোগ হয়,তাই প্রয়োজনীয় ঔষধ গ্ৰহণ আবশ্যক।
৬) ঝড় থেমে গেলেই ইচ্ছামতো বাইরে বেরিয়ে পড়া ঠিক না, লক্ষ্য রাখতে হবে পুনরায় ঝড় আসছে কিনা।
৭) প্রতিবন্ধী, অসুস্থ এবং বয়স্ক মানুষের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে এবং এদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
৮) বসতিস্থানের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে, কেননা এইসময় সাপের উপদ্রব বেশী হয়।
৯) দ্রুত চাষাবাদের ব্যবস্থা করতে হবে খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য।
১০) টিভি এবং রেডিওতে প্রচারিত বিভিন্ন সতর্কীকরণ বাণী মেনে চলতে হবে।
যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করা বেশ কঠিন, তবুও উপরিউক্ত করণীয় কাজগুলো করলে অনেকখানি নিরাপদ এব সুস্থ থাকা যায় ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register