Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে গাজী সাইফুল ইসলাম (অনুবাদ কবিতা)

maro news
কবিতায় পদ্মা-যমুনা তে গাজী সাইফুল ইসলাম (অনুবাদ কবিতা)

আমিনা আবু কেরেচ: সিরিয়ান বংশোদ্ভব ব্রিটিশ কিশোরী কবি/Nirmala UI

আমিনা আবু কেরেচের (Amineh Abou kerech)বর্তমান বয়স সাড়ে সতেরো বছর। ২০১৬ সালে তিনি যখন তার পরিবারের সঙ্গে উদ্বাস' হিসেবে যুক্তরাজ্যে আসেন-ইংরেজি বলতে পারতেন না। অথচ ২০১৭ সালেই সে কিশোরী মেয়েটি ইংরেজিতে কবিতা লিখে জিতে নেন ‘সম্মানীয় ব্রিটিশ অ্যাওয়ার্ড ফর ইয়ং পোয়েটস’। আমিনার কবিতার নাম খধসবহঃ ভড়ৎ ঝুৎরধ অর্থাৎ ‘সিরিয়ার জন্য বিলাপ’। আর জিতে নেয়া পুরস্কারের নাম Betjeman Poetry Prize-2017. যুক্তরাজ্যে আসার আগে তাদের পরিবার উদ্বাস' হিসেবে মিসরে ছিল চার বছর। তার মতে, ‘কবিতা লিখা’ তাকে তার স্থানচ্যুতি ও দেশ হারানোর কষ্ট ভুলতে সাহায্য করে। ‘‘যখন আমি সিরিয়ার কথা ভাবি আমার খুব খারাপ লাগে। তখন আমি কাঁদতে কাঁদতে তার কথা লিখতে থাকি। আমিনা বলেন: যেকোনো জায়গা থেকে আমি শব্দ নিতে পারি। সঙ্গীত কিংবা সিনেমা থেকেও আমি শব্দ নিই। এমনকি যা কিছু আমি দেখি কম্পিউটারে ও টিলিভিশনে। এরপর আমি তাদের জায়গামত প্রয়োগ করি।’’ এ প্রসঙ্গে তার বড় বোন এফতুন বলেছেন: নতুন ভাষাটিতে দক্ষতা অর্জনের জন্য আমিনা তার শোবারঘরে সবসময় অনুশীলন করেছে।
আমিনা প্রথমে তার কবিতাটি লিখেছে আধা ইংরেজি ও আধা আরবীতে। পরে বড় বোন এফতুন, স্কটিস শিক্ষিকা কেট ক্ল্যান্সি ও গোগল ট্রান্সলেটর এর সাহায্য নিয়ে কবিতা শেষ করে। প্রতিযোগিতায় ২০০০ কবিতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে আমিনার কবিতাকে। বিচারকমণ্ডলির মধ্যে ছিলেন কবি রাচেল রুনি (Rachel Rooney)। তিনি দেখলেন, একটি মেয়ে কাগজের পৃষ্ঠাতেই তার হারানো দেশ তৈরি করে নিয়েছে। পুরস্কারের ঘোষণা শুনে আমিনা অত্যন্ত উচ্ছসিত হয়ে বলেন, ‘‘আমি খুব আনন্দিত, এখানে আমার ভবিষ্যৎ হবে। জীবনে আর ভয় পাবার কিছু নেই। সবকিছুই ভালো হবে এবং আমরা সর্বদা শান্তিতেই থাকব।’’

আমিনা আবু কেরেচের কবিতা

সিরিয়ার জন্য বিলাপ
(১)
সিরিয়ার ঘুঘুরা আমার মাথার ওপর চক্কর দেয়
তাদের ডাক শুনে আমার চোখে পানি এসে যায়।
আমি একটি দেশের নকশা তৈরির চেষ্টা করছি
যেটি যাবে আমার কবিতার সঙ্গে। এবং যখন ভাবতে বসব
কেউ যেন আমায় পথে নামিয়ে না দেয়
যেখানে আমার মুখের ওপর দিয়ে সৈনিকরা হাঁটবে।
আমি একটি দেশের নকশা তৈরির চেষ্টা করছি
যদি কবিত্বের যৎসামান্যও থাকে আমার ভেতরে
এটি হবে আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানের
আর যদি চোখ ভিজে যায় পানিতে-ক্ষমা করবেন।

আমি একটি দেশের নকশা তৈরির চেষ্টা করছি
যে দেশটি হবে যুদ্ধ-বিশৃঙ্খলা মুক্ত, ধ্বংসযজ্ঞ ও দুঃখমুক্ত
যেখানে থাকবে শুধু সততা, ভালোবাসা, শান্তি ও ঐক্য।
(২)
ওহ্‌ সিরিয়া, আমার ভালোবাসা
আমি তোমার বিলাপ শুনতে পাই
ঘুঘুদের কান্নার শব্দে।
আমি শুনতে পাই তোমার আর্তনাদ
যখন থেকে ফেলে এসেছি তোমার খেত-খামার
করুণাময়ী মাটি আর তোমার জেসমিনের গন্ধ
আমারও পাখা ভেঙে গেছে তোমার পাখার মত।
(৩)
আমি সিরিয়া থেকে এসেছি।
আমি সেখান থেকে এসেছি লোকেরা যেখানে কুঁড়িয়ে খায়
ছুঁড়ে দেয়া টুকরো রুটি
তারা সতর্ক থাকে যাতে রুটিগুলো পদদলিত না হয়।
আমি সেখান থেকে এসেছি যেখানে মায়েরা
তার সন্তানকে শেখাত-দিনমানে একটি পিঁপড়ার ওপরও পা না ফেলতে
কিশোরেরা সিগারেট লুকোত-তাদের বয়োজেষ্ঠদের থেকে, যাদের তারা মান্য করত।
আমি পেছনে ফেলে এসেছি প্রতিবেশীদের কফির আপ্যায়ন
তোমাকে ও দেশ, তোমার পরে চাচী-চাচা, ভাইবোনের আনন্দ সঙ্গ…
ওহ্‌, তোমার সহ্যশক্তি অনেক, অপেক্ষা করছ অধীর আগ্রহে কিছু ত্রাণের আশায়

॥ ৩ ॥
সিরিয়া,
আমি আর কাউকে নিয়ে কবিতা লিখব না।

॥ ৪ ॥
তুমি কি শেখাবে আমায়
কীভাবে একটি জন্মভূমি বানাতে হয়?
অন্তর নিংড়ানো ধন্যবাদ, যদি বলতে পারো
ধন্যবাদ সমগ্র হৃদয় থেকে
চড়ইদের বাসা থেকে
সিরিয়ার আপেলগাছদের থেকে
আর একান্তই তোমার থেকে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register