Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে রিতা মিত্র (পর্ব - ১)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে রিতা মিত্র (পর্ব - ১)

হিমালয়ের কোলে

ভ্রমণ পাগল দুই পরিবার, গোল টেবিল নয় চৌকো টেবিল কনফারেন্সে বসেছে। আলোচনার বিষয়,পূজোর ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়। একজন চোখের ডাক্তার আরেকজন কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী। চর্চা শেষে গন্তব্য ঠিক হল হিমাচল প্রদেশ। এবার টিকিট কাটার পালা। রেলের নিয়ম মাফিক একশ কুড়ি দিন আগে গন্তব্যের টিকিট কাটতে হয়। ও বলাই তো হল না যে ভ্রমণ রসিক দলে রয়েছে সপরিবারে কবি গৌরাঙ্গ মিত্র এবং দেবাশীষ দে এর পরিবার। সময় হচ্ছে 2014 অক্টোবর। কবি রেলের কর্মচারী বলে ভ্রমণ এর জন্য বরাদ্দ পাস তুললেন। অফিসে জানাজানি হতেই আরেক বন্ধু সঙ্গ নিলো। টিকিট কাটতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়লাম। ওয়েটিং লিস্ট। যাক টিকিট কাটা হল। 16 দিনের ট্যুর। সেই হিসেব করে ফেরার টিকিট। সেটা কনফার্ম টিকিট হল। এবার শীতের দেশে যাওয়ার কথা তাই দরকার মতো শীত বস্ত্র কেনা হলো, আরো নানান টুকিটাকি। দিন যায়। আমরা ওয়েটিং লিস্ট চেক করি। নাহ: একটুও নড়ন চড়ন নেই লিস্টে। এবার যাবার দিন এসে গেল প্রায়। আমরা সেই ওয়েটিং লিস্টে উপরের তালিকায় ঝুলে থাকলাম। আসার টিকিট তো প্রথম থেকেই কনফার্ম। মন খারাপ। কী করে যাওয়া হবে এই অবস্থায়! রেলের কর্মরত আরেক বন্ধু এলেন সঙ্কট মোচন করতে। তিনি খোঁজ নিয়ে জানালেন, কলকাতা স্টেশন থেকে ছাড়ে 'নাঙ্গাল ড্যাম এক্সপ্রেস' তাতে স্লিপর ক্লাসের পনেরোটি সিট ফাঁকা আছে। ব্যস নয়া উদ্যমে লাফিয়ে ছুটলাম টিকিট এর লাইনে। কনফার্ম টিকিট পেয়েও গেলাম। শান্তি। তাহলে আমরা যাচ্ছি। এদিকে দেবাশীষ ( চোখের ডাক্তার) ফোন করে তার পূর্ব পরিচিত ড্রাইভার ' সুরেশ ' এর সাথে কথা বলে চুক্তি করে নিয়েছে, এবং অগ্রিম কিছু মুল্য ড্রাইভারের একাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছে। চুক্তি আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট ( পাঞ্জাব) থেকে আমাদের নেবে এবং ফেরার সময় আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে দেবে। 2/10/2014 আমাদের হিমাচল প্রদেশ যাত্রার দিন। সকাল সাতটায় চিৎপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়বে। আমাদের বাক্স পেটরা গোছানো হয়েগেছে। যাবার দিন ভোররাত দুটোর সময় উঠে টিফিন রান্না শুরু। ফ্রাইড রাইস, ডিম কষা, দুপুরের জন্য ও রাতে খাবার জন্য ছাতুর পরোটা ও ধনেপাতার চাটনি। এ দায়িত্ব আমার। আর সুমিতা ( মজুমদার ফ্যামিলি, রেল) জলখাবারের দায়িত্ব নিয়েছে। লুচি আর আলুর দম। সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে দেবাশীষ এর ছেলে মৈনাক চিৎকার করে ডাকাডাকি আরম্ভ করল, বমমা তোমরা তাড়াতাড়ি করো দেরি হয়ে যাচ্ছে। বারবার আমাদের ফ্ল্যাটের বেল বাজাচ্ছে। আমরাও তালা লাগিয়ে নেমে এলাম। মৈনাক ছুটে এসে আমাদের স্যুটকেস গড়িয়ে নিয়ে চলল। আমরা দুটো রিক্সা করে প্রথমে দমদম স্টেশনের কাছে গেলাম। সেখান থেকে একটা ট্যাক্সি ধরে চিৎপুর স্টেশন। গিয়ে দেখি ট্রেন প্ল্যাটফর্মে দিয়ে দিয়েছে এবং রজত মজুমদার এর পরিবার নিজেদের সিটে বসে আছে। আমরাও যে যার সিটের নিচে লাগেজ চালান করে গল্পে মেতে উঠলাম। যথা সময়ে ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে পা বাড়ালো গন্তব্যের দিকে। পরের দিন সকাল প্রায় দশটা নাগাদ আমরা আম্বালা ক্যান্টনমেন্ট পৌছলাম। লাগেজ নিয়ে স্টেশন থেকে বেরোতেই দেখলাম সহাস্য সুরেশজী দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের আপ্যায়ন করার জন্য।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register