Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সায়ন (পর্ব - ১২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সায়ন (পর্ব - ১২)

অমৃতায়ণ

বর্তমান কাল
- ফোনটা বাজছে ..... কি রে ফোনটা বাজছে ধর - কিইই! ও , না আসলে , বাবা কখন এখানে এলাম রে- এখানেই ছিলিস, গল্পটা খুব গভীর ভাবে শুনছিস। আসলে জীবনের সবটাই তো আর গল্প নয়, অনেকটা গল্পের মতো মনে হয় - ঘটনার অলিগলির ফাঁকে কোনও ঘরের ভিতর এক অন্ধকার কোণে ঘাপটি মেরে বসে থাকে। যেমন এই ঘরে আমরা তিন জন বসেছিলাম সুলগ্নার জীবনের গল্প হয়ে ।
এমন সময় পারিজাত বাথরুমে গেল। সারারাত একভাবে বসেছিল। চলছিল ফিরছিল ওই সময়টার মধ্যে । জানলা দুটো খুলে দিলাম, কিন্তু শীতমাখা রোদের আলো এসে বিছানার উপর ধূলোর আলোকবৃত্ত তৈরি করছে। এই আলোর নলটা মিশে গেছে কোনও অসীমে, আচ্ছা এখান দিয়ে কি সে নেবে আসতে পারে, যারা অতীত... - সুলগ্নার ( ফিরে তাকালাম অমৃতার দিকে) ওই পোস্টারটা শেষ কোথায় দেখা গেছে? একদম নিশ্চুপ আমি বললাম - জানি না গো, এমনকি পোস্টার আমি একটাই দেখেছি । অমৃতা রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গিয়েও একবার মুখ ঘোরালো। মুখের উপর সূর্যের আলোর বিপরীতে লেগে থাকা অন্ধকার অংশ দিয়ে কথাটা বার হলো - পোস্টারটা এখনও আছে .... হঠাৎ খটাশ করে বাথরুমের দরজাটা খুলে গেলো । অমৃতা চুপ .... পারিজাত বললো - কি পোস্টার!
অতীত কাল কখন থেকে তোকে ফোন করে এই খবরটা দেওয়ার জন্য ফোন করছি রে! ফোনটাই তো পাচ্ছিলাম না। - সুলগ্নার নামে পোস্টার পড়েছে! পারিজাত কেমন যেমন আস্তে আস্তে গভীর একটা কালো নীল জলের মতো চারপাশটা দেখতে পাচ্ছে । এ দিক থেকে আমার চোখে মনে হচ্ছে সবদিকে পোস্টারে লেখা আছে " সুলগ্না", আমি চোখ বন্ধ করে নিচ্ছি আর পারিজাত এগিয়ে যাচ্ছে পাটুলি আর বাইপাস কানেক্টারের মাঝবার যা শুধুই এখন একটা নীল বিষগোলা জল, তার তলা দিয়ে পিঠ গলে সাঁতরে যাচ্ছে সুলগ্না , তার মুখে বুদবুদ - ছন্দ, চোখে কামনার হাসি, কবিতার পিছনে নগ্ন হয়ে শুয়ে আছে নামের লোভ। কানকোহীন মাছগুলো উপরে ওঠার চেষ্টা করছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে না ...... পারিজাতের কানে ফোন , এদিকে আমারও ! - কি রে পারি কি ভাবছিস? - ভাবছি না দেখছি! - কি - বিষ আর শ্যাওলার মধ্যে দিয়ে দিনের পর দিন একটা মাছ কিভাবে পঙ্গু করেছে অন্য মাছগুলোকে। - আসলে ওরা কিন্তু মাছ নয়, ওরা শুধুই শিকার এক একটা। যাই হোক ঘটনা বলি শোন। মাঝখানে কেটে দিয়ে পারিজাত বললো - ঘটনা কখনও পথেঘাটে শোনা যায় না রে, আজ তোর গড়িয়াহাট যাওয়া নেই নিশ্চয়ই, পরশু থেকে পুজো, তো আজ বিকেলের সব কাজ অফ কর। বড় একটা চক্রান্ত একক মাত্রায়, একজন মানুষ করবে , না এটা তো হয় না রে। আমার মনে হচ্ছে বাসের ভিতরটা কেমন পাল্টে যাচ্ছে ,সবার মুখে রঙ করা সাজ, কি গোল গোল চোখের উপর রঙ - মুখ ভরা ঠোঁট , শুধু ঘুরে আমাকে দেখছে - পিছন থেকে একজন কাঁধে হাত রাখতেই পিছন ফিরে দেখি - একজন লাল ঠোঁট কান পর্যন্ত , হাসছে আর বলছে - পোস্টারের মেয়েটা কে চেনেন ! বাসের সামনে থেকে - চেনেন ? কন্ডাক্টর বলছে - চেনেন সুলগ্নাকে?
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register