Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কর্ণফুলির গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সৈয়দ মিজানুর রহমান (পর্ব - ৬)

maro news
কর্ণফুলির গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সৈয়দ মিজানুর রহমান (পর্ব - ৬)

অনন্ত - অন্তরা

আমাকে আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ । আপনিও ভালো থাকবেন – শুভ রাত্রি ।
রাত ২টা বেজে গিয়েছে! কখন যে বেজে গেল বুঝতেই পারিনি এতো মনোযোগী বোধহয় এই প্রথম, মনে হচ্ছিল পাহাড়ে খাঁড়ায় খাঁদের কিনারায় দাঁড়িয়ে জীবন মরনের হিসেব কষছিলাম ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে কী এক তরঙ্গের খেলা চলছিল, মাঝে মাঝে বিকট শব্দে সেই তরঙ্গমালা আছড়ে পড়ছিল সমাদরে সূক্ষ্ম মন্ত্রে বুকের পাঁজরে ধূ ধূ বালুচরে । কম্পিউটার, রূমের লাইট সব বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম । ফ্যানের দোষন শব্দে ঝড় হাওয়ায় নিজেকে মেলে ধরলাম- ক্লান্তি নিবারণে ডুব দিলাম মনের ঘরে ঘুমের মোহে অন্তরে অন্তরা পুষে ।ঠিক সকাল ৭-৩০ টায় এলার্ম বেজে উঠলো- নো লেট একবারেই উঠে বসে পড়লাম- ব্যাস ১৫ মিনিটে রেডি বেরিয়ে পড়লাম রিক্সা নিয়ে সন্ধ্যাকে উঠিয়ে সোজা ইউনিভারসিটির পাবলিক লাইব্রেরির সামনে নেমে রাস্তার পাশে টং দোকানে বসে চা বিস্কিট কলা খেয়ে প্রতিদিনের বাজে অভ্যাস একটি সিগারেট ধরালাম সন্ধ্যা ততক্ষনে লাইব্রেরির দিকে চলে গিয়েছে । সিগারেট টানতে টানতে কেন যেন মনে হলো আজ সন্ধ্যা কেন এতো চুপচায় বসে ছিল আমার পাশে- মন খারাপ না তো অন্য কোন কারণে? ওকে তো কখনও এমন দেখিনি! ওহ! কী ভাবছি এইগুলি? আমাকে এখন লাইব্রেরিতে যেতে হবে- যেয়ে দেখি বই সামনে মাথা নিচু করে আছে, পড়ছে কিনা ঠিক বুঝতে পারছি না- ওকে, আমি একটু বসি পড়েত- সমাজকল্যানে নীতি ও কর্মসূচি উপরে কয়েকটি প্রশ্নের নোট তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ।ঘণ্টা খানিক পর আর ভাল লাগছিল না পড়তে, মনটা ঠিক বসছে না আজ, সন্ধ্যা আমি যাচ্ছি তুই থাক ।
না না আমিও যাব দাড়া মাত্র পাঁচ মিনিট ।]
ওকে আমি বাইরে আছি তুই আয় ।
এই চল যাই-
চল- ফুস্‌কা খাবি?
এই দুপুর সময়? না খাবো না ।
তাহলে কিছু একটা বল খাই, আমার ক্ষুধা লেগেছে ।
এই শুধু খাই খাই করিস ক্যান? যা- তুই খেয়ে আয় আমি এখানে বসছি ।
ওকে, তুই একটু বোস আমি আসছি- ভাইয়া আমাকে এক প্লেট মজা করে ফুস্‌কা বানিয়ে দাও তো-
বহেন ভাইয়া দিতাছি-
রিংটোন বেজে চলছে সেলফোন ধরার নাম নাই – হ্যালো- হ্যালো------ শুনতে পাচ্ছেন? মামা আমি অনন্ত কল ব্যাক করেন এক্ষনি । কেটে দিতে না দিতে মামার কল ব্যাক- হ্যালো- জ্বী মামা কেমন আছেন? বাসার সবাই ভালো আছেতো?
হ্যাঁ সবাই আছে ভালো- তো- তুমি- তোমাদের বাসার সবাই কেমন আছে? জ্বী মামা ভালো- মামা আমার স্মার্ট ফোন কবে পাঠাবেন আমার খুব দরকার হয়ে পড়েছে- এক সপ্তাহের মধ্যে পাঠাতে না পারলে টাকা পাঠিয়ে দিন আমি এখান থেকে কিনে নেব ।
খুব প্রয়োজন সেটা আমি জানি – তবে এক মাসের মধ্যে পাঠাতে পারবো, এতো তারাতাড়ি যদি চাস তাহলে আমাকে DHL করতে হবে । প্লিজ মামা তাই করো । আমি রাখছি ।
হ্যালো হ্যালো --- দুষ্টু ছেলে লাইন কেটে দিলো! যাকে বলে সবার আদর ।
এই লন ভাইয়া-
দাও- ভালো হয়েছে তো ?
আবার জিগায়- খাইয়া কন্‌ ক্যামন হইছে ভাইয়া
ভাইয়া আর একটি চামচ হবে?
কয়ড়া লাগবো সেইডা কন্‌?
একটা হলেই চলবে- ওকে ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সন্ধ্যা এই নে আমার সাথে একটু খাবি- দুপুর বেলা তোর পছন্দ না তবে একটা দুইটা খেলে কিছু হবে না – নে খেয়ে দেখ ।
তোকে বললাম না তারপরও আমাকে খেতে হবে? ঠিক আছে একটা খাবো ।
ঠিক আছে খেয়ে দেখ ।
সামনে চল তুই যা খেতে চাইবি তাই তোকে খাওয়াবো ।
কিরে অনেক টাকা মনে হচ্ছে পকেটে? বাসা থেকে টাকা পাঠিয়েছে বুঝি? আরে না- এমনিতে আজ তোকে খাওয়াতে ইচ্ছে করছে । দুইদিন পর আবার সুদে আসলে ফেরত নিবি নাতো আবার । যদি নিস তাহলে খাবো না ।
বললামতো কোনদিন চাইবো না- একটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য ছোট্ট একটি আয়োজন ।
সত্যি?
হ্যাঁ একদম সত্যি । চল যাই –
শোন্‌ একটা কাজ করি এখন না খাই- একটু কষ্ট কর – ক্লাস করে একবারে বারিয়ে অন্য কোন ভালো জায়গায় দুজনে বসে খাই- কি বলিস ? হুম ঠিক আছে ডান-
দুইজন দুইদিকে- সন্ধ্যা আইন নিয়ে পড়ে- হঠাৎ বুদ্ধিতে ওর জুড়ি মেলা ভার- যখন আইন নিয়ে বা কোন বিষয়ের উপর আইনি ব্যাখ্যা দেয় – সেই ব্যাখার থ্রোইং মনোমুগ্ধকর মনে হয় পেশাদার আইনজীবী ! শুধু আমার সাথে অন্যরকম এক মানুষ । এমন একজন ভালো বন্ধু এইযুগে মেলা খুব কঠিন । ক্লাস শেষে ওকে কল করলাম হ্যালো সন্ধ্যা আমি এখন মধুর ক্যান্টিনের সাথে ঐ ছোট সবুজ ঘাসের মাঠটাতে বসে চা খাচ্ছি তুই সোজা এখানে চলে আসিস । কথার কোন উত্তর না দিয়ে লাইন কেটে দিলো । মেজাজটা খারাপ করে দিলো । আমার আরো কিছু বন্ধুরা এসে আমার পাশে এসে বসলো শুরু হয়ে গেলো ধুমধারাক্কা গল্প কে কবে হিরো হয়েছিল – কে কী খাবে – তুই আজ খাওয়াবি- আর একজন বলে ও আজ ধরা! কেউ কেউ বলে আজ ছাত্রদলের মিছিলে মাছি-মশা ও পড়েনি – এতো ধাওয়া দিলে কি মিছিলে লোক হয় বল? –কেউ উত্তর দেয় সুযোগ পেলে তারাও কম নয় – ইতিহাস তাই বলে- আজব সব কথা – ভীষণ প্রাণবন্ত সবাই, মন আমারও দোল খেয়ে উঠলো- আনন্দঘন মুহূর্তকে ধরে রাখতে সবাইকে বাদাম শেষে চা খাওয়ালাম ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register