ছবিতে পদ্মফুল হল নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতীক, আর সে সমস্ত কিছুর প্রতীক যা স্থূল জগতের অতীত- কল্পনাশক্তি, সাহিত্য, শিল্প, দর্শন। মানুষ এই সৌন্দর্যকে অবলম্বন করেই বেঁচে থাকে। এই সৌন্দর্যের এক কণা আস্বাদন করার জন্যই সে প্রতি মুহূর্তে সংগ্রাম করে। প্রতিটা মানুষই মুক্ত হতে চায়। মানুষ নিত্য শুদ্ধ বুদ্ধ মুক্ত, কিন্তু সমাজ আর পারিপার্শ্বিক এই গোলকধাঁধার পৃথিবীর মায়ায় ভ্রান্ত হয়ে নিজের প্রকৃত স্বরূপকে ভুলে যায়। রাষ্ট্র, সমাজ, রূঢ় বাস্তব, প্রতিকূলতা অনেক ক্ষেত্রেই তার গলা আটকে দেয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নিজের মত জীবন কাটানোর স্বাধীনতা, স্বতন্ত্রভাবে চিন্তা করা, বেড়ে ওঠার স্বাধীনতা প্রতিটা মানুষই চায়। ছবিতে ঐ টালমাটাল জলের ঢেউ সেই প্রতিকূলতারই প্রতীক। মানুষের সারা শরীর জলের তলায়, সে ডুবতে বসেছে তবুও ঐ সৌন্দর্যের এক বিন্দু রসপান করতে সে সর্বশক্তি দিয়ে হাত বাড়িয়ে রয়েছে। দিগন্তের জ্বলন্ত সূর্য হল জ্ঞানের প্রতীক, যা দিগন্ত জুড়ে তার জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিয়েছে। তার আলোতেই এই জগৎ আলোকিত। ওটাই মানুষের প্রকৃত অবস্থা। পদ্মপাতার উপর বিশ্রাম নিয়ে মানুষ কিছুক্ষণের জন্য হলেও শান্তি পাবে। এমনি করেই একদিন ভাসতে ভাসতে সে সূর্যের দিকে এগিয়ে যাবে। সূর্যের সাথে, নিজের প্রকৃত স্বরূপের সাথে এক হয়ে যাবে। স্বাধীন হবে।