মার্গে অনন্য সম্মান দেবাশিস বসু (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৭২
বিষয় – বড়দিন
সান্তার উপহার
তুষারে ঢেকে গেছে সমগ্র চরাচর..
সারা পৃথিবীটাই যেন এক সাদা চাদর..
নির্জন পথ লাল নীল সবুজ মেরুজ্যোতি নির্ভর..
ঐ কে আসে নির্জন বরফের ওপর দিয়ে মধ্যরাতে..
লাল প্যান্ট, কালো চামড়ার বেল্ট, চোঙা টুপিতে..
সাদা কলার, লাল কোট, সাদা কাফে..
আবক্ষ ঢাকা সাদা দাড়ি গোঁফে…
সান্তা, তুমিই তো আবদ্ধ করেছিলে বিবাহবন্ধনে
বিক্রি হয়ে যাওয়া তিন দাসকন্যাকে সসম্মানে..
টমাসের ছোঁয়ায় তোমার স্ফীতকায় উদর..
রক্ত গোলাপের স্পর্শে গাল নাসিকা অধর..
তুরস্কের সাতারায় জন্ম তোমার
তবুও তুমি অনাগরিক উত্তর মেরুতে-
কোনো দেশের ভুগোলে নও আবদ্ধ-
চার হাজারী করণিকের বেলাগাম ত্রুটি বা নাগরিকপঞ্জির ভ্রান্তিতে..
যেমন অনাগরিক এই দেশের মানুষ বন্দীশিবিরে..
যেমন অনাগরিক ফুটফুটে পুতুলের শবদেহ রাতের শরীরে..
বাসে ট্রামে রাস্তায় ফুটপাথে লিফটে..
অনাগরিক পুতুলেরা ঝোলে গাছের ডাল কিংবা ইলেক্ট্রিক পোস্টে..
আজ কোন্ সান্তা নিয়ে আসবে উপহার..
যখন ভাঙা বোতল আর
ধারালো লোহার রডে নির্ভয়ার হাহাকার..
যখন কন্যাভ্রূণের ছিন্নভিন্ন অবয়ব করাতের শাণিত দাঁতে..
দহন আগুনের চিতায়-জীবন্ত কবর তিন ফুট মাটির গর্তে..
যখন ঋণের দায়ে আত্মঘাতী কৃষক-
গৃহবধূ বাঁধা পড়ে জোতদারের অশ্লীল শর্তে..
যখন পেট্রলের গন্ধে হাড় মাস রক্ত পুড়ে
এক কাঠকয়লার উপত্যকা-
স্নেহ মায়া ভালোবাসায় তিল তিল করে গড়ে ওঠার ধ্বংসস্তূপ জুড়ে..
সান্তা, সময় দিচ্ছে ডাক..
পিঠের ঝোলা থেকে বের কর সিংহহৃদয় রিচার্ডের কুঠার..
ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরুক-
মধ্যযুগের দিকে গড়ানো রথের চাকা খুলে যাক দুড়দাড়..
ছিন্নমুণ্ড হোক এই সমাজের যত মৃত্যুর কারিগর..
যীশু, আরো একবার নিয়ে এসো শান্তির বার্তা..
ভেদাভেদ ভুলে আরো একবার এক হোক বিশ্ব চরাচর..