গদ্যের পোডিয়ামে দেবযানী ভট্টাচার্য

নাগরিক কর্তব্য

দেশ ভারতবর্ষ-পাহাড়,নদী, সাগর,অরণ্য ঘেরা কিছুটা ভুখন্ড,যেখানে নাগরিক নামে কিছু পুতুল বাস করেন,জ্যান্ত পুতুল!তাহারা হাসে,কাঁদে,সন্তান উৎপাদন করেন,উৎসব যাপন করেন,সমাজ নামক প্রতিষ্ঠানটি ধরিয়া রাখেন,ইহারা ব্যক্তিগত সুখ দুঃখে নিরন্তর ডুবিয়া থাকেন,এবং সিস্টেমের ধারক হইয়া উল্লাসিত বোধ করেন।
মগজ বলিয়া একটি বস্তুকে সযত্নে আলমারির বন্ধ তাকে তুলিয়া রাখেন,মাঝে মাঝে রৌদ্র, বাতাস লাগাইয়া পুষ্টি সাধন করেন,সেই কালে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিলে ইতি উতি চাহিয়া শাসকের মন রক্ষা করিয়া দু চারটি শব্দ ব্যয় করিয়া পুনরায় সুরক্ষিত আবহে নিদ্রা যাপন করিয়া থাকেন এবং আগুন পার্শ্ববর্তী গৃহে লাগিয়াছে এই বোধ ধারণকারী হইয়া বেশ আত্মতৃপ্তি বোধ করেন।
বিপ্লব নামক একটি শব্দ বহুকাল আমাদের ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছে,এই নাগরিক গণ বিস্মৃতির অভ্যাসটি দ্রুত করায়ত্ব করিয়াছেন,এবং কোনো ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হইবো না,কারণ এটি সমষ্টিগত সমস্যা এই ধারণাটি মজবুত করিয়াছেন ।এবং আমি ভিন্ন অন্য কেউ কেন নয়?দ্বারা আক্রান্ত হইয়া উৎসব অভিমুখে দ্রুত যাত্রা করিয়া থাকেন।জল বিপদ সীমার ওপর দিয়া বাহিত হইলে যুতসই একটি ছাতার তলায় আশ্রয় লইয়া উহারাই ঈশ্বর ,আমাদিগের ত্রাণ কর্তা বলিয়া স্বস্তির নিশ্বাস ফেলিয়া থাকেন।
নাগরিক গণ দেশের সমস্ত সুবিধা ভোগ করেন ইহা আমাদের অধিকার বলিয়া ,এবং অধিকার বিঘ্নিত হইলে বদ্ধ ঘরে, আপন বৃত্তে কিছু আস্ফালন করিয়া থাকেন।নিজ দোষ টি অপরের স্কন্ধে দিবার একটি গুণ খুব লালন করিয়া থাকেন এই নাগরিক গণ,এবং ভোট দিবার কালে একটি মহৎ কার্য সম্পন্ন করিলাম ভাবিয়া দায়িত্ব পালন করেন।যাহা হউক,এই নাগরিক গণ তমসা নিবৃত্তি করিবার তাগিতে আপন গৃহে টুনি প্রজ্জ্বলিত করুন এবং জগতের সমস্ত অন্ধকার দূর করিলাম ভাবিয়া আত্ম সন্তুষ্টি লাভ করুন।জগতের অন্ধকার দূর করিবার তাগিদ আমার নহে ভাবিয়া আপন পরিবারের সহিত “Happy Diwali” উদযাপন করুন।এবং প্রজ্বলিত প্রদীপ হস্তে লইয়া ছবি প্রদর্শনে আমার ন্যায় মাতিয়া উঠুন ।


ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।