গদ্যের পোডিয়ামে বিপ্লব দত্ত

সুখ

বাড়ির সামনেই পুকুর। এই ঘন বর্ষাতে জল ভর্তি হয়ে উপচে পড়ে রাস্তার উপর। ছোটো ছোটো মাছ রাস্তায়। দামাল ছেলেরা গামছা দিয়ে ধরে। হৈ হৈ আর মজা। রূপালী দোতলার জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ওদের আনন্দে সামিল হয় কখনও আবার মূহূর্তে কেমন যেন তার মুখ ফ্যাকাসে। ভাবে ওদের মতো যদি খেলতে পারতাম। নাহ্। ওর যে বাইরে যাওয়া বারণ। আর কতদিন? ভাবে এবার সে লুকিয়ে বাইরে পালাবে অনন্তকালের জন্য। সন্ধ্যে হলেই ছটফট করে।
আজ বাড়িতে কেও নেই। বেড়িয়ে পড়ে। ছুটতে থাকে গাছগাছালির মধ্যে দিয়ে। খালি পা। হূশ নেই। ইটপাথুরে আর কাদা রাস্তা। কখনো পিছলে পড়ে আবার ওঠে। সারা শরীরে কাদামাখা রক্ত। তা হোক। হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। দ্যাখে সেই গাছ। এগিয়ে যায়। শাল গাছের নীচে কাঁটাঝোপ। পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ায়। ঘষতে থাকে পিঠ যেমন একদিন তাকে রূপ ভালোবাসায় আঁকড়ে ধরে ওই গাছে জড়িয়ে ধরেছিল। আজ আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ। দূর থেকে রূপের সেই আওয়াজ….রূপালী এ জনমে তোর সঙ্গী হতে পারলাম না। বাড়ি যা। চেয়ে দ্যাখ কাঁটাগাছের রক্তে রাঙিয়ে গেছে আলতা পড়ার পা। রূপালী আবার ছুটতে থাকে। ক্লান্ত। বসে পড়ে রাস্তায়।অনুভব করে কে যেন সারা শরীরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

সে দুহাতে চাপ দিয়ে ওঠে ছুটতে থাকে আবার বাড়ির ঠিকানায়।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!