একফালি বাঁকা চাঁদ দেখে যে চমকে ওঠে। শীত গ্রীস্ম বর্ষাতেও যার গায়ে কম্বল জড়ানো। চুলে যার তেল জোটে না। কাঁচা পাকা দাড়ি যার তার কোনো যন্ত্রনা নেই। বিড়বিড় করে কি সব আওড়ায়। হাত পাতে না। দুঃখের কথা বলে না। তার স্হায়ী ঠিকানা রেল স্টেশন।
সেই লোকটা।
যার ভোটার আইডি নেই। রেশন কার্ড আর আধার কার্ড নেই। দেশের জনগণনার বাইরে।
সেই লোকটা।
মানুষ ট্রেন থেকে নামা ওঠার সময় পয়সাকড়ি যা ছুড়ে দেয় তা দিয়েই দোকান থেকে রুটি চা কিনে খায়। জুটলে জোটে না হলে উপোস।
সেই লোকটা।
যে রোগ মৃত্যু কি জিনিস জানে না। হাসপাতাল চেনে না। অতিমারী কি জানতেও চায় না।
সেই লোকটা।
সে মানুষ। তার জন্মদাত্রী ছিল। না হলে জন্মাবেই বা কেন। মায়ের আদরের চাদরে মানুষ হয়েছে একদিন। শিশু থেকে যৌবন আর এখন বৃদ্ধ। যেভাবে প্রাণিকুল হয়ে থাকে প্রকৃতি নিয়মে।
সেই লোকটা।
যার কি কোনো ভালোবাসার মানুষ ছিল? বাঁকা চাঁদে কেন তবে মুখ ঢাকে?
সেই লোকটা।
বসে আছে নিশ্চল নির্ভীকে গায়ের কম্বল ফেলে দিয়ে।
আজ পূর্ণিমার চাঁদ অনেক বড়। অন্ধকার নেই কোথাও। আলো ঝলমলে রাত। আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ায়। দৌড়োতে থাকে। ঢুকে পরে জনহীন এক পুরোনো বাড়িতে। জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কাকে যেন খোঁজে।