T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় বসুধা বসু
রবির কিরণ
সকাল থেকেই আজ ধরিত্রীর মন বড় খারাপ| ভেবে যাচ্ছে কি করবে আর কি করবে না |আজ দশ দিন ধরে রীতিমতো মহড়া দিয়েছে তার রবীন্দ্রজয়ন্তীর নাচের জন্য| শুধু যে নাচ করছে তা না একটা নাটকে অংশগ্রহণ করেছে| আজ এই আশানীড়ে বিকেল ছটা থেকে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রজয়ন্তী | সেই উপলক্ষে আশানীড় এর সকল কচিকাঁচারা এমন কি বড়রাও রীতিমতো তালিম নিয়েছে |কেউ রচনা করেছে রবি ঠাকুরকে নিয়ে লেখা নিজস্ব রচিত নাটক ,কেউ রচনা করেছে রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে নিজের লেখা গান |অনেকেই আছে যারা আবার রবি ঠাকুরের লেখা কবিতা, গান করবে| বিকেল ছটা হতে সকল কচিকাঁচারা একের পর এক উঠোনের মঞ্চে নিজেদের প্রতিভাকে মেলে ধরেছে | ধরিত্রী ও নিজেকে তার মধ্যে মেলে ধরেছে |অসাধারণ সে নাচ করেছে “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে” শুধু তাই নয় তার পরেই শাপমোচন এর সেকি অসাধারণ নাচ “রাঙিয়ে দিয়ে যাও|”সবশেষে যখন প্রতিষ্ঠাতা কমলিনী মঞ্চে উঠে শ্রেষ্ঠ অংশগ্রহণকারীর নাম ঘোষনা করে, তখন আনন্দে ঠিক সেই মুহুর্তে সবার চোখে অশ্রুজল|……………আজ থেকে প্রায় বছর ১৪ আগে ধরিত্রী এসেছিল এই আশানীড় অনাথআশ্রমে কমলিনীর হাত ধরে |চোখে দেখতে পায় না ধরিত্রীর নিজের বাবাই কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধে অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছিল| মঞ্চে উঠে যেই মুহুর্তে ধরিত্রীর হাতে কমলিনী দেবী মাইক ধরিয়ে দিলো সেই মুহূর্তে উচ্ছ্বসিত ধরিত্রী গেয়ে উঠলো “আমার হাত বান্ধিবি পা বান্ধিবি মন বান্ধিবি কেমনে” যদিও বা এটি রবীন্দ্রসঙ্গীত নয় কিন্তু ধরিত্রীর এই গান ছুঁয়ে গেল অনেকের মন| ধরিত্রী উপহার হাতে মঞ্চ থেকে নামার সময় বলে উঠলো “আজ রবীন্দ্রজয়ন্তী কিন্তু কতজনের মনে আজ অব্দি রবির কিরণ পৌঁছেছে যে কন্যা সন্তানকে পুত্রসন্তানের মতো করে প্রতিষ্ঠা করেছে!!!”