গদ্যের পোডিয়ামে অমিতাভ সরকার

পুরানো সেই হারমোনিয়াম
কথা ছিল। প্রতিটা কথার ভিতরে জীবনের অনেক না-বলা কথা ঘুমিয়ে থাকে। কথাগুলোরও ঘুমটা বেশ দরকার।
সে এক সময় ছিল যখন কথা বলা নিয়ে নানান ঝামেলা বাড়ি এসে হাজির হত। বাইরের মানুষগুলোকে ঘরের লোকের মত ভাবলে যা হয় আর কি! সূত্রপাত সামান্য কিছু হলেও এর বিস্তারলাভ কিন্তু ঝড়েরও অধিক গতিতে। একবার শুরুটা হলে কেইবা আর নিঃস্বার্থভাবে সংসার, অফিস কাছারী ছেড়ে এসব থামিয়ে দিয়ে যাবে! কার এত জ্বালা ধরেছে যে ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমের গলা ভেজা তাপে এসে নিজের মনটা পোড়াবে। ফল যা হওয়ার হতো তাই। কালশিটে মুখে সম্পর্কগুলো পাশাপাশি সব করে গিয়েও কিছুই পেত না। বুদ্ধিমানেরা সুযোগ নিত, মজা পেত।
সেদিনের সেইসব মানুষগুলোকে দেখেই আজ বেশ করুণা হয়। আর সেই ঝগড়াঝাটির কথা ভাবছেন!
সংঘাত করা সেইসব মুখগুলোই আজ বহুদিন বেখবর, আর যারা আছে তারা নিজেরাই জীবনের বিভিন্ন ভারে আঘাতপ্রাপ্ত, তাদের আর মুখ তোলার বা মুখ খোলার কোনোটারই তাদের সময় নেই, পথেঘাটে দেখা হলে ঢাকা মুখে চেনা বেশ মুস্কিল হয়, চেনা গেলে এখন খালি সংসারের সাতকাহন, বয়স্কদের খবরাখবর এইসব।
ওইসব কথাগুলো নিত্যকার চিন্তার নানাবিধ ব্যস্ততায় এখন আর কেউ শুনতে বা মনে করতেও চায় না।
ওইসবটুকুই আজ দশটা-আটটা আই টি সেক্টরের সারাদিনের কষ্টকর ডিউটির পর ক্লান্তির রাতের অন্ধকারে চির অচেতন।
না, ঘুমটা সবারই খুব প্রয়োজন।