T3 || আমি ও রবীন্দ্রনাথ || বিশেষ সংখ্যায় অমলেন্দু কর্মকার
by
·
Published
· Updated
কবি প্রণাম
কাণ্ড দেখুন কেমন সবাই মিলে
একরকমের জোর করে প্রায় মঞ্চে দিলে তুলে;
বললে সবাই, দু চার কথা বলো তুমি গিয়ে…
রবীন্দ্রনাথ নিয়ে।
দু এক লাইন লিখি টিখি, কিন্তু আমার হচ্ছে ভীষণ ভয়;
বিশ্ব কবি , কি যে করি, উত্তেজনা সারা শরীরময়।
তোমার কথা বলতে আসা, তোমার জন্মদিনে,
হে কবি, হে বিশ্বকবি, পঁচিশে বৈশাখের অনুষ্ঠানে…
পাড়ার মোড়ে মঞ্চ বেঁধে, তোমার গানে কাব্য কবিতায়
গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা প্রায়।
আজকে শুভ পঁচিশে বৈশাখ –
বিশ্ব কবির কথা ভেবে অগণিত নর-নারীর মনের গহন গভীরে দেয় ডাক,
আজ পুণ্য তিথির পুণ্য লগ্ন কালে
নারী পুরুষ একে একে ফুল চন্দন পরায় তোমার ভালে;
ফুলের মালায় ঢাকে তোমার ছবি…
জন্মদিনে প্রণাম লহ কবি।
হে উদাসী, হে সন্ন্যাসী কবি;
এই জীবনের প্রতি পলে, তোমার ছত্র ছায়ায় থেকে ভাবি…
তোমার কাছে ঋণী;
হুজুগ প্রিয় বাঙালিরা সব কিছুতেই মাতে সেটা জানি,
কিন্তু তোমার জন্মদিনে শ্রদ্ধা প্রেমের আনন্দটাই মূল;
নিন্দুকদের মতে, এটাই ভুল!
তোমার জন্মদিনে আমাদের এই মঞ্চে এসে ছোট্ট ক’টি মেয়ে…
প্রসংশা পায় তোমার’ই গান গেয়ে।
‘মাম্মি’ ‘পাপা’ ব্যস্ত ভীষণ সাজ পোশাকের ভারে;
বলেন হেসে , এই বয়সে এর চেয়ে আর কেমন ভালো পারে…
তাও যে মঞ্চে ওঠে …
সত্যি বলছি বিশ্ব কবি; তুমি তখন উপলক্ষ্য,
তুমি তখন সবার পিছে দেওয়াল ঘেঁসা পটে।
তুমি শুধুই দাঁড়িয়ে থাকো নিছকই এক কবির ছবি হয়ে…
কিছু মানুষ তখনও তোমায় নিয়ে,
কৃষ্টি, রুচির বিজ্ঞাপনে মঞ্চে ওঠে,
পেটায় নিজের ঢাক….
রাজনীতি বা সমাজনীতি নিজের নিজের ….
………সে প্রসঙ্গ থাক ।
এখন আবার শুনি-
তুমি নাকি ড্রয়িং রুমের ঘর সাজানোর অ’বিকৃত রূপ!
নিন্দুকরা এই কথাতেই চুপ …।
আলমিরাতে বোঝাই করা তোমার গ্রন্থ খানি
উচ্চবিত্ত অশিক্ষিতের লোক দেখানো রবীন্দ্রপ্রেম
… কবি গুরুর quote — unquote বানী;
মুখে তখন গন্ধ রাবীন্দ্রিক…
ততক্ষণে পাড়ায় পাড়ায় দুপুর গড়ায়;
ডিজের ভীষণ গুমগুমিতে
রবীন্দ্রনাথ, কবিপক্ষ, উদ্যামতায় সংজ্ঞা হারায় …. ধিক্ !
নিন্দুকরা যে যাই বলুক আজকে যে প্রায় দেড়শ বছর পরে,
সত্যি কারের ভালোবেসে আজও মানুষ আসে;
তোমার মঞ্চ পাশে,
নারী পুরুষ নির্বিশেষে এক লহমায় সব ভেদাভেদ ভুলে
কাব্য কথায়, নৃত্য গীতে সম্মিলিত তোমার বেদী মূলে…
তোমার’ই বন্দনা….
তোমার গানের ডালি হাতে তোমার’ই অর্চনা।